সরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে কি করবেন? কোথায় মামলা করবেন?
(অভিযোগ উত্থাপন, তদন্ত, জবাব প্রদান, চাকরিচ্যুত হওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত
হওয়া, আপিল করা এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে কিভাবে মামলা করবেন এসবের বিস্তারিত
বর্ননা এখানে তুলে ধরা হয়েছে, আশা করি চাকরি সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান এখানে পেয়ে
যাবেন)
মোঃ ইজাবুল আলম
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা/দপ্তরসমূহ
যেমন, প্রতিরক্ষা বাহিনী-সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী এবং আন্ত:বাহিনী সংস্থা- ডিজিএফআই, সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তর
(ডিজিএমএস), ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি), ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ
কলেজ (ডিএসসিএসসি), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি), বাংলাদেশ
ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি), আর্মড
ফোর্সেস মেডিকেল ইন্সটিটিউট (এএফএমআই), আর্মড ফোর্সেস ইন্সটিটিউট অব প্যাথোলজি (এএফআইপি),
বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ), আন্তঃবাহিনী নির্বাচন পর্ষদ (আইএসএসবি), বাংলাদেশ
সশস্ত্রবাহিনী বোর্ড (বিএএসবি), প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর (ডিজিডিপি), আন্তঃবাহিনী
জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর), ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা পরিষদ, অন্যান্য সংস্থা/দপ্তর-বাংলাদেশ
ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি), বাংলাদেশ মহাকাশ
গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো), বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর, সামরিক ভূমি ও
সেনানিবাস অধিদপ্তর (সাভূসে), গুপ্তসংকেত পরিদপ্তর, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স
(সিজিডিএফ), প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয় (সিএও), মিনিস্ট্রি অব ডিফেন্স কনস্ট্যাবিউলারি
(এমওডিসি)তে কর্মরত শুধু মাত্র বেসামরিক কর্মচারী (Civil servant)সহ বাংলাদেশের অন্যান্য
বেসামরিক সংস্থাসমূহের কর্মচারীদের জন্য এই নিয়ম কানুন প্রযোজ্য হবে।
তবে বিজিবি, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সামরিক
কোনো সদস্য এই নিয়মের মধ্যে পড়বে না।
প্রথমে আলোচনা করি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের
অধীনস্থ সংস্থাসমূহে কর্মরত বেসামরিক কর্মচারীগণ চাকরিচ্যুত হলে কি করবেন?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাসমূহে
কর্মরত বেসামরিক কর্মচারীগণ কোনো অপরাধ করলে বা কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে বিধিমালা
১৯৬১ অনুযায়ী বিচারিক কার্যক্রম শুরু ও শেষ করা হয়। এই প্রজ্ঞাপনটি জারী করা হয় পাকিস্তান
আমলে। তারিখ: রাওয়ালপিন্ডি, ২৫ জুলাই ১৯৬১।
বিধিমালা ১৯৬১-তে চারটি অধ্যায় আছে। যথা:
প্রথম অধ্যায়-সাধারণ,
দ্বিতীয় অধ্যায়-শ্রেণি বিন্যাস,
তৃতীয় অধ্যায়- আচরণ এবং শৃংখলা,
চতুর্থ অধ্যায়- আপিল সংক্রান্ত। তবে আচরণ এবং শৃংখলা ও আপিল এর নিয়মাবলী সরকারি কর্মচারী
(শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এবং সংশোধিত ২০১৮ এর মতোই।
বিধিমালা ১৯৬১
এই বিধিমালায় কোন সরকারি কর্মচারীর অপরাধের
তদন্ত প্রক্রিয়া এবং অপরাধ বা অপরাধসমূহের গুরুত্ব অনুসারে তাকে কি ধরনের শাস্তি প্রদান
করা হবে তার বিধান রয়েছে। এতে আপীল, পুনঃতদন্ত ও পুনর্বিচার প্রক্রিয়াও অন্তর্ভুক্ত
রয়েছে। এ বিধিতে অসদাচরণের সংজ্ঞা দিয়ে বলা
হয়েছে যে, স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বা চাকুরির শৃঙ্খলার পরিপন্থী বা আচরণবিধিতে বর্ণিত যেকোন
শর্ত লঙ্ঘন অথবা কোন কর্মকর্তা বা ভদ্রলোকের জন্য শোভনীয় নয় এমন কোন আচরণ অসদাচরণ
বলে বিবেচিত হবে। এ ছাড়াও অসদাচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে:
(১) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনসম্মত নির্দেশ
অমান্য করা;
(২) কর্তব্যকর্মে অবহেলা;
(৩) আইনসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে সরকারি কোন আদেশ,
বিজ্ঞপ্তি ও নির্দেশপত্রের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং
(৪) কোন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে যেকোন কর্তৃপক্ষের
কাছে অসৌজন্যমূলক, বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন বা তুচ্ছ বিষয়ে অভিযোগ পেশ করা।
এই বিধিতে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রগুলি হচ্ছে
অযোগ্যতা, অসদাচরণ, ইচ্ছাকৃত অনুপস্থিতি, দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রম।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগঃ
বিধি (১)
(১) এই বিধিমালা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা
ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ নামে অভিহিত হবে।
(২) এই বিধিমালা নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা কর্মচারী
ব্যতীত অন্যান্য সকল সরকারি কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যথা:
(ক) রেলওয়ে সংস্থাপন কোড প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তি;
(খ) মেট্রোপলিটান পুলিশের অধস্তন কর্মচারী;
(গ) পুলিশ পরিদর্শকের নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ
বাহিনীর অন্য কোনো সদস্য; (ঘ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর অধস্তন কর্মকর্তা, রাইফেলম্যান
ও সিগন্যালম্যান; (ঙ) জেলার এর নিম্ন পদমর্যাদার বাংলাদেশ জেলের অধস্তন কর্মচারী;
(চ) সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন
দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোনো চাকুরী বা পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিগণ; এবং
(ছ)
এমন কোন ব্যক্তি যাহার চাকুরীর শর্তাবলি, বেতন, ভাতাদি, পেনশন, শৃঙ্খলা ও আচরণ বা এতদসংক্রান্ত
যে কোন বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে বিশেষ বিধান করা হয়েছে।
দন্ডের ভিত্তি অর্থাৎ যেসব কারণে একজন কর্মচারীর উপর দন্ড আরোপ করা হয়
বিধি ৩:
কর্তৃপক্ষের মতে যে ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারী,
(ক) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থতা, অথবা সাধারণ
দক্ষতা বজায় রাখা বা বৃদ্ধির জন্য নির্ধারিত বিভাগীয় পরীক্ষায় পর পর দুই বা ততোধিকবার
অকৃতকার্যতা, অথবা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে উক্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়া,
অথবা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে এই বিধিমালার অধীনে তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত
হয়ে তদন্ত কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরম্ভ করতে কিংবা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে অদক্ষ হন, অথবা দক্ষতা হারান এবং তার উক্তরূপ দক্ষতা পুনরায়
অর্জনের কোনো সম্ভাবনা না থাকে; অথবা
(খ) অসদাচরণের দায়ে দোষী হন; অথবা
(গ) পলায়নের দায়ে দোষী হন; অথবা
(ঘ) দুর্নীতি পরায়ণ হন, অথবা নিম্নবর্ণিত কারণে
দুর্নীতিপরায়ণ বলে যুক্তিসংগতভাবে বিবেচিত হন (অ) তিনি বা তার উপর নির্ভরশীল অথবা অন্য
যে কোনো ব্যক্তি তার মাধ্যমে বা তার পক্ষে যদি তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ
কোনো অর্থ-সম্পদ বা অন্য কোনো সম্পত্তির (যার যুক্তিসংগত হিসাব দিতে তিনি অক্ষম) অধিকারী
হন, অথবা (আ) তিনি প্রকাশ্য আয়ের সহিত সংগতিবিহীন জীবন-যাপন করেন; অথবা (ই) তার বিরুদ্ধে
দুর্নীতিপরায়ণতার অব্যাহত কুখ্যাতি থাকে; অথবা (ঙ) নাশকতামূলক কর্মে লিপ্ত হন, বা লিপ্ত
রয়েছেন বলে সন্দেহ করবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, অথবা নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত অন্যান্য
ব্যক্তির সহিত জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ করবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, এবং সেই কারণে তাকে
চাকুরীতে রাখা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হানিকর বলে বিবেচিত হয়; তা হলে কর্তৃপক্ষ, বিধি
৪ এর উপ-বিধি (৬) এর বিধান সাপেক্ষে, তার উপর এক বা একাধিক দন্ড আরোপ করতে পারবে।
শাস্তির প্রকৃতি
বিধি (৪):
বিধি ৪ এর (১) এই বিধিমালার অধীন নিম্নবর্ণিত
দুই ধরনের দন্ড আরোপ করা যাবে, প্রথমটি লঘু শাস্তি এবং দ্বিতীয়টি গুরু ধরণের।
লঘু শাস্তিঃ
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,
২০১৮ অনুযায়ী বিধি ৪ এর (২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত লঘুদÐসমূহ হবে নিম্নরুপ, যথাঃ
(ক) তিরস্কার;
(খ) চাকুরী বা পদ সম্পর্কিত বিধি বা আদেশ অনুযায়ী
পদোন্নতি বা আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির অযোগ্যতার ক্ষেত্র ব্যতীত, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য
পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা;
(গ) কর্তব্যে অবহেলা বা সরকারি আদেশ অমান্য
করার কারণে সংঘটিত সরকারের আর্থিক ক্ষতির সম্পূর্ণ অংশ বা ইহার অংশবিশেষ, বেতন বা আনুতোষিক
হতে আদায় করা; অথবা
(ঘ) বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ।
গুরু শাস্তিঃ
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,
২০১৮ অনুযায়ী বিধি ৪ এর (৩) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত গুরুদন্ডসমূহ হবে নিমরূপ, যথাঃ
(ক) নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ;
(খ) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান;
(গ) চাকুরী হতে অপসারণ;
(ঘ) চাকুরী হতে বরখাস্তকরণ।
বিধি ৪ এর (৪) উপ-বিধি (৩) এর অধীন কোনো কর্মচারীর
উপর,
(ক) চাকুরী হতে অপসারণের দন্ড আরোপ করা হলে
তিনি সরকারের অধীন বা কোনো আইনের দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ
সংস্থার চাকুরীতে নিযুক্ত হওয়ার অযোগ্য হবেন না; এবং
(খ) চাকুরী হতে বরখাস্তকরণের দন্ড আরোপ করা
হলে সরকারের অধীন বা কোনো আইনের দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থার
চাকুরীতে নিযুক্ত হওয়ার অযোগ্য হবেন।
বিধি ৪ এর (৫) এই বিধিতে উল্লিখিত দন্ডসমূহ
নিম্নরূপভাবে আরোপ করা যাবে, (তথা কোন্ অপরাধের জন্যে কোন্ শান্তি) যথাঃ
(ক) বিধি ৩ এ বর্ণিত অদক্ষতার জন্য তিরস্কার
এবং চাকুরী হতে বরখাস্ত ব্যতীত যে কোনো দন্ড,
(খ) অন্য কোনো অদক্ষতার জন্য চাকুরী হতে বরখাস্ত
ব্যতীত যে কোনো দন্ড; (গ) অসদাচরণের জন্য যে কোনো দন্ড;
(ঘ) পলায়নের জন্য তিরস্কার ব্যতীত যে কোনো
দন্ড;
(ঙ) দুর্নীতির জন্য যে কোনো দন্ড, তবে উক্ত
অপরাধের পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ দন্ড ব্যতীত
যে কোনো দন্ড;
(চ) নাশকতামূলক কার্যকলাপের জন্য নিম্নপদ বা
নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ ব্যতীত যে কোনো দন্ড।
বিধি ৪ এর (৬) কোনো সরকারি কর্মচারীর নিয়োগকারী
কর্তৃপক্ষের অধস্তন কোনো কর্তৃপক্ষ (অর্থাৎ শাখা অফিসের কোনো কর্মকর্তা) এই বিধিমালার
অধীন কোনো গুরুদন্ড আরোপ করতে পারবে না।
বিধি ৪ এর (৭) উপ-বিধি (৩) এর দফা (গ) ও (ঘ)
এর অধীন “চাকুরী হতে অপসারণ” ও “চাকুরী হতে বরখাস্তকরণ” অভিব্যক্তি অর্থে এইরূপ কোনো
ব্যক্তির চাকুরী হতে অব্যাহতি অন্তর্ভুক্ত হবে না যিনি
(ক) শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তার
মেয়াদ চলাকালে বা তার প্রতি প্রযোজ্য শিক্ষানবিশকাল; অথবা
(খ) চুক্তি ব্যতীত অন্য যে কোনো উপায়ে কোন
অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ধরে রাখবার জন্য, সেই নিযুক্তিকাল শেষ হলে; অথবা
(গ) কোন চুক্তির অধীনে নিযুক্ত হলে সেই চুক্তির
শর্ত মোতাবেক।
বিধি (৫): নাশকতামূলক
কার্যকলাপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি এখানে উল্লেখ করা হলো না।
লঘুদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (৬):
(১)
যখন কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি ৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) তে বর্ণিত কারণে
কার্যধারা সূচক করবার প্রয়োজন হয় এবং কর্তৃপক্ষ কিংবা, যে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিজেই
কর্তৃপক্ষ, সেইক্ষেত্রে উক্ত সরকারি কর্মচারী যে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন
সেই মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা যে কর্মকর্তাকে কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়
বা বিভাগের সচিব, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এতদুদ্দেশ্যে যাকে কর্তৃপক্ষ হিসেবে
নির্ধারণ করেছেন, তিনি যদি অভিমত পোষণ করেন যে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের
তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর কোনো দন্ড প্রদান করা হবে, তা হলে কর্তৃপক্ষ অথবা, ক্ষেত্রমত,
প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী,
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ
তাকে লিখিতভাবে অবহিত করবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ (দশ)
কার্যদিবসের মধ্যে তার আচরণের কৈফিয়ত প্রদানের জন্য এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে শুনানির
ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা, তাও জানাবার জন্য নির্দেশ প্রদান করতে পারবে: তবে শর্ত থাকে
যে, উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হবার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তি সময় বৃদ্ধির আবেদন করলে
কর্তৃপক্ষ অথবা, ক্ষেত্রমত, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী
তাকে বক্তব্য দাখিল করবার সুযোগ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত ৭ (সাত) কার্যদিবস পর্যন্ত
সময় বর্ধিত করতে পারবে; এবং
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি দফা (ক) এর অধীন নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময়ের মধ্যে পেশকৃত কৈফিয়ত, যদি থাকে, বিবেচনা করবেন এবং তিনি যদি ব্যক্তিগতভাবে
শুনানির ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন, তা হলে ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করবেন, অথবা নির্ধারিত
সময়ের মধ্যে যদি তিনি কৈফিয়ত পেশ না করে থাকেন, তা হলে এইরূপ সময়ের মধ্যে তাহাকে লঘুদন্ড
প্রদান করতে পারবে: তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ, সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী, যে ক্ষেত্রে
যিনি হন, যুক্তিযুক্ত মনে করলে অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অভিযুক্তের
পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন কর্মচারীকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারবে।
(২) তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হইতে তদন্ত
প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর, কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী আদেশের
পক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ উল্লেখ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণক্রমে ইহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে
অবহিত করবে অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী পুনঃতদন্ত বা অধিকতর তদন্তের জন্য আদেশ প্রদান করবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর অধীন তদন্তের আদেশ দেওয়া
হলে, কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করবে।
(৪) যখন কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি
৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) অধীন কোনো কার্যধারা সূচনা করা হয় এবং উপ-বিধি (১) এ বর্ণিত
কর্তৃপক্ষ, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করেন যে, অভিযোগ প্রমাণিত
হইলে অভিযুক্তকে তিরস্কার দন্ড প্রদান করা যেতে পারে, তা হলে, কর্তৃপক্ষ বা ক্ষেত্রমত,
সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী অভিযুক্তের ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণপূর্বক কারণ লিপিবদ্ধ
করিয়া তিরস্কার দন্ড আরোপ করতে পারবে অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তিগত শুনানির জন্য হাজির হতে
ব্যর্থ হলে বা উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে শুনানি ব্যতিরেকেই উক্ত তিরস্কার
দন্ড আরোপ করা যাবে অথবা উপ-বিধি (১) হতে (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে তার উপর যে
কোন দন্ড আরোপ করা যাবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এ উল্লিখিত ক্ষেত্রে অভিযোগ
প্রমাণিত হলে তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর দন্ড আরোপ করতে হবে।
(৬) যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করেন যে, তার
বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ লিখিতভাবে জানাতে হবে, তা হলে উপ-বিধি (১) হতে (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতি
অনুসরণ করতে হবে এবং এইক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর
দন্ড আরোপ করতে হবে।
গুরুদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (৭):
(১)
যে ক্ষেত্রে বিধি ৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) বা (ঘ) এর অধীন কোনো কার্যধারা সূচনা
করা হয় এবং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে যে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো গুরুদন্ড আরোপ করা
প্রয়োজন হতে পারে, যে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ
(ক) অভিযোগনামা প্রণয়ন করবে ও ইহাতে প্রস্তাবিত
দন্ডের বিষয় উল্লেখ করবে, এবং যে সকল অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগনামাটি প্রণীত হয়েছে,
ইহার বিবরণ এবং কর্তৃপক্ষ আদেশ প্রদানকালে অন্য যে সকল পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা
করবার ইচ্ছা পোষণ করেন ইহাসহ অভিযোগনামাটি উক্ত কর্মচারীকে অবহিত করবে;
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অভিযোগনামা প্রাপ্তির
১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দাখিল করতে বলবেন এবং সেই
সঙ্গে প্রস্তাবিত দন্ড কেন তার উপর আরোপ করা হবে না ইহার কারণ দর্শাইতে বলবে এবং তিনি
ব্যক্তিগতভাবে শুনানির ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা তাও উল্লেখ করবে: তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত
সময়সীমা শেষ হবার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তি সময় বৃদ্ধির আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তাকে বক্তব্য
দাখিল করবার সুযোগ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত ১০ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় বর্ধিত করিতে পারবে।
(২) যে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময়ের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দাখিল করলে এবং যদি তিনি ব্যক্তিগত
শুনানি পাইবার ইচ্ছা পোষণ করেন, তা হলে ব্যক্তিগতভাবে শুনানির পর কর্তৃপক্ষ অভিযোগের
সহিত সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়সহ দাখিলকৃত বক্তব্য বিবেচনা করবে, এবং অনুরূপ বিবেচনার পর
কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে,
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সূচিত কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো উপযুক্ত ভিত্তি নাই, তা হলে, অভিযোগ প্রত্যাহার করবে এবং তদনুসারে
উক্ত কার্যধারা নিষ্পত্তি হবে;
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি শর্তহীনভাবে সকল অভিযোগ
স্বীকার করেন এবং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে, অীভযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় লঘুদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে, যে কোনো লঘুদন্ড আরোপ করবে, তবে গুরুদন্ড আরোপযোগ্য হবে বলে ধারণা করা
হলে কর্তৃপক্ষ দফা
(ঘ) অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ড
নিয়োগ করবে;
(গ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে, কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হলে লঘুদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, ব্যক্তিগতভাবে শুনানির সুযোগ প্রদান করে যে কোনো লঘুদন্ড
প্রদান করতে পারবে, অথবা লঘুদন্ড আরোপের উদ্দেশ্যে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে
বিধি ৬ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে পারবে; (ঘ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে অভিযোগনামায় বর্ণিত অভিযোগ তদন্তের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পদমর্যাদার
নিম্নে নহেন এইরূপ একজন তদন্ত কর্মকর্তা বা ৩ (তিন) জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি তদন্ত
বোর্ড গঠন করবে।
(৩) অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি নির্ধারিত বা বর্ধিত
সময়ের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো লিখিত বক্তব্য দাখিল না করেন, তা হলে নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময় শেষ হইবার তারিখ হইতে ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ অভিযোগনামায়
বর্ণিত অভিযোগ তদন্ত করবার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ একজন
তদন্ত কর্মকর্তা অথবা ৩ (তিন) জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি তদন্ত বোর্ড নিয়োগ করবে।
(৪) তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হতে ৭ (সাত)
কার্যদিবসের মধ্যে, ক্ষেত্রমত, তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ড তদন্তের কাজ আরম্ভ করবে
এবং বিধি ১১ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে তদন্ত পরিচালনা করবে এবং কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত
প্রতিবেদন দাখিল করবে।
(৫) তদন্ত কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, তদন্ত
বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে দ্বিমতের কারণে ভিন্ন তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত
বোর্ড নিয়োগ করা যাবে না: তবে শর্ত থাকে যে, তদন্ত চলাকালে নিম্নবর্ণিত কারণে নূতন
তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ বা তদন্ত বোর্ড পুনর্গঠন করা যাবে, যথা:
(ক) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্যের মৃত্যু হলে;
(খ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরী হতে পদত্যাগ করলে;
(গ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করলে; বা
(ঘ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরীতে দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তদন্ত কার্য সম্পাদনে অসমর্থ বলে প্রতীয়মান
হলে।
(৬) উপ-বিধি (৫) এর বিধান অনুযায়ী নূতন তদন্ত
কর্মকর্তা নিয়োগ বা তদন্ত বোর্ড পুনর্গঠন করা হলে নূতন তদন্ত কর্মকর্তা বা পুনর্গঠিত
তদন্ত বোর্ড পূর্বের অসমাপ্ত তদন্তের ধারাবাহিকতায় তদন্তের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবে।
(৭) তদন্তকারী কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ
উহা বিবেচনা করে অভিযোগের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট
বিষয়ে পুনঃতদন্তের প্রয়োজনীয়তা মনে করলে, একই তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত বোডর্কে
সুনির্দিষ্ট বিষয় ও তথ্যসমূহ উল্লেখ করিয়া অভিযোগ পুনঃতদন্তের আদেশ দিতে পারবে।
(৮) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের তদন্ত
প্রতিবেদন বা পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনা করিবে, অভিযোগ
বিষয়ে ইহার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত, তদন্ত প্রতিবেদনের কপিসহ,
অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করবে।
(৯) কর্তৃপক্ষ যদি উপ-বিধি (৮) এর অধীনে গুরুদন্ড
প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা হলে প্রস্তাবিত দন্ড কেন অভিযুক্ত ব্যক্তির উপর আরোপ
করা হবে না সে সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাইবার
নির্দেশ প্রদান করবে।
(১০) গুরুদন্ড প্রদানের জন্য যে সকল ক্ষেত্রে
কমিশনের সহিত পরামর্শ করা প্রয়োজন, সেই সকল ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ, উপ-বিধি (৯) এ বর্ণিত
সময় সীমার মধ্যে কোনো কারণ দর্শানো হলে উহাসহ সূচিত কার্যধারার কাগজপত্র কমিশনের নিকট
পরামর্শের জন্য প্রেরণ করবে।
(১১) বিভাগীয় কার্যধারায় (ক) যে ক্ষেত্রে কমিশনের
সহিত পরামর্শের প্রয়োজন নাই, সেইক্ষেত্রে উপ-বিধি (৯) এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত
ব্যক্তি কর্তৃক কারণ দর্শানো হলে উহা বিবেচনার পর, এবং (খ) যে ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত
পরামর্শের প্রয়োজন আছে, সেইক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক কোনো কারণ দর্শানো হলে
ইহা এবং কমিশন প্রদত্ত পরামর্শ বিবেচনার পর, কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে
এবং ইহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করবে।
(১২) এই বিধির অধীন তদন্ত কার্যক্রম এবং যে
ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত বোর্ড নিয়োগ করা হয়, সেইক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা বা
তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন এবং প্রতিবেদনে প্রদত্ত মতামতের ভিত্তি পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণাদির
ভিত্তিতে হতে হবে।
মনে রাখা আবশ্যক
আপনি যে আপরাধই করেন না কেনো,
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে, আপনাকে তিনি শাস্তি দিবেন তাহলে তিনি তদন্ত প্রতিবেদনকে
তার মতো করেই সাজিয়ে নিবেন। সামরিক বা বেসামরিক সংস্থা থেকে চাকারিচ্যুত কর্মকর্তা
বা কর্মচারীর তদন্ত প্রতিবেদন, আপিল ও প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা করার নথিপত্র যাচাই
বাছাই করে এটাই প্রমাণিত যে, ৮৫% ব্যক্তি চাকরিচ্যুত হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রোষানলে
পড়ে।
আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়,
কর্তৃপক্ষ তার প্রমোশনের জন্যে উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ বা নিজের পারফরমেন্স
দেখাতে গিয়ে অধ:স্তন কর্মচারীকে ইনটেনশনালি বা ইচ্ছেকৃতভাবে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক
চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে দেয়। আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত মিথ্যে আভিযোগকে তখন
সত্যে পরিনত করেন। আপনি যতোই বলেন, আপনি নির্দোষ তবুও তদন্তের প্রতিটি ধাপ বিধি মোতাবেক
অনুসরন করে তথা, প্রথমে কৈফিয়ত তলব করবে, এরপর অভিযোগনামা গঠন করবে, তারপর কারণ দর্শানো
নোটিশ দিবে এরপর চূড়ান্ত শাস্তি দেয়ার লক্ষ্যে সুপারিশনামাসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে
আপনাকে সবসময় কিছু ধাপ মনে রাখতে হবে এবং প্রতি ধাপে ধাপে সকল নথিপত্র সংরক্ষণ করে
রাখতে হবে। সময়, তারিখ, অভিযোগকারীর নাম ঠিকানাসহ লিখে রাখতে হবে। বেসামরিক সংস্থায়
যেহেতু জবাব প্রদানের সময় দেয়া হয় তাই তাড়াহুড়ো না করে ঠান্ডা মাথায় এবং অভিজ্ঞ লোকদের
সহযোগিতা নিয়ে জবাব দাখিল করবেন এবং ফটোকপি রেখে দিবেন। কোনো কাগজ না পড়ে কখনো স্বাক্ষর
করবেন না। তদন্ত চলাকালীন কাউকে হুমকি ধমকি দিবেন না, মোবাইলে কারো সাথে নিজের কোনো
গোপন কথা বলবেন না। নিজের মধ্যে কোনো দুর্বলতা থাকলে তা প্রকাশ করবেন না। আর একটি কথা
মনে রাখতে হবে, শুরুতে যে জবাব দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত একই জবাব দিতে থাকবেন। মাঝখানে
গিয়ে অপরাধ স্বীকার করবেন না। মনে রাখবেন, আপনার বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ উত্থাপিত হয় তখন
কর্তৃপক্ষ পূর্বেই আপনার সম্পর্কে গোপনে খোঁজখবর নিয়েই অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাই জবাব
দেয়ার সময় সেইটা মাথায় রেখেই জবাব দিবেন।
ব্যতিক্রম
বিধি (৯):
যে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার আচরণের জন্য
ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্তির কারণে চাকুরী হতে বরখাস্ত বা চাকুরী হতে অপসারিত অথবা
পদাবনতি হন; অথবা যে ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে চাকুরী হতে বরখাস্ত অথবা চাকুরী হতে অপসারিত
অথবা পদাবনমিত করবার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে
কারণ দর্শাইবার সুযোগ প্রদান যুক্তিযুক্তভাবে বাস্তবসম্মত নহে এবং কর্তৃপক্ষ ইহার স্বপক্ষে
কারণ লিপিবদ্ধ করেন, সেইক্ষেত্রে বিধি ৬ এবং ৭ এর বিধানাবলির কোনো কিছুই প্রযোজ্য হবে
না।
সাময়িক বরখাস্ত
বিধি (১২):
(১)
কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি ৩ এর অনুচ্ছেদ (খ) বা (গ) বা (ঘ) এর অধীনে কার্যক্রম
গ্রহণের প্রস্তাব করা হলে কর্তৃপক্ষ সমীচীন মনে করলে উক্ত কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত
করতে পারবে : তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করলে, উক্ত সরকারি কর্মচারীকে
সাময়িকভাবে বরখাস্ত করবার পরিবর্তে লিখিত আদেশ দ্বারা আদেশে উল্লিখিত তারিখ হতে, তার
ছুটির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে তাকে ছুটিতে যাইবার নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।
(২) কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকুরী হতে
বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসর দন্ডের আদেশ যদি কোনো আদালত বা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল
কর্তৃক রহিত বা বাতিল বা অকার্যকর ঘোষিত হয় এবং যদি কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগের ভিত্তিতে
চাকুরী হতে বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসরদানের দন্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করেছিলেন, সেই অভিযোগের উপর সূচিত কার্যধারার প্রেক্ষাপট বিচেনাপূর্বক পুনঃতদন্তের
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা হলে যে তারিখ হতে প্রথম চাকুরী হতে বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক
অবসরের দন্ড আরোপ করা হয়েছিল, ঐ তারিখ হতে সরকারি কর্মচারী সাময়িকভাবে বরখাস্ত রয়েছেন
বলে গণ্য হবেন এবং পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সাময়িক বরখাস্ত অব্যাহত থাকবে।
চাকুরী হইতে বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত, অপসারিত অথবা বরখাস্তকৃত সরকারি
কর্মচারীগণের ক্ষতিপূরণ অবসরভাতা, আনুতোষিক, ইত্যাদি
বিধি (১৩):
(১)
ক্ষতিপূরণ, অবসর ভাতা বা আনুতোষিকের পরিমাণ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির যে কোনো আদেশ সাপেক্ষে,
একজন বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, অতঃপর বর্ণিত বিধানের ক্ষেত্র ব্যতীত,
এইরূপ ক্ষতিপূরণ অবসরভাতা বা আনুতোষিক বা ভবিষ্য তহবিল সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন সেইরূপে,
তিনি যদি কোনো বিকল্প উপযুক্ত চাকুরীর ব্যবস্থা ব্যতীত তার পদ বিলুপ্তির কারণে চাকুরীচ্যুত
হতেন তা হলে, তাহার চাকুরী বা পদের প্রতি প্রযোজ্য বিধিসমূহের অধীনে অবসর গ্রহণ তারিখে
যেইরূপ প্রাপ্য হইতেন : তবে শর্ত থাকে যে, বিধি ১২ এর অধীনে সাময়িক বরখাস্তকালের পর
বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতিপূরণ অবসর ভাতা বা আনুতোষিক বা ভবিষ্য
তহবিল সুবিধাদি সাময়িক বরখাস্তকাল বাদ দিয়া কেবল চাকুরীকালের জন্য প্রাপ্য হবেন: আরো
শর্ত থাকে যে, যে ক্ষেত্রে কোনো অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে মানসিক বা শারীরিক অসামর্থ্যরে
কারণে অদক্ষতা হেতু অবসর প্রদান করা হয়, সেইক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস এর
বিধি ৩২১ এর অধীনে অবসরকালীন সুবিধাদি পাবেন।
(২) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক করুণাবশত প্রদত্ত কোনো
আদেশ ব্যতীত চাকুরি হতে অপসারিত বা বরখাস্তকৃত কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো ক্ষতিপূরণ,
অবসর ভাতা, আনুতোষিক অথবা অংশপ্রদায়ক ভবিষ্য তহবিলে সরকারের চাঁদা হতে উদ্ভূত সুবিধাদি
পাবেন না।
পুনর্বহাল
বিধি (১৪):
(১)
বিধি ৫ এর উপ-বিধি (১) এর অনুচ্ছেদ (ক) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী ছুটিতে প্রেরিত
কোনো সরকারি কর্মচারীকে যদি বরখাস্ত, অপসারণ, নিম্নপদে পদাবনমিত বা বাধ্যতামূলক অবসর
প্রদান করা না হয়, তা হলে, ক্ষেত্রমত, তাকে চাকুরীতে পুনর্বহাল করা হবে, অথবা তাকে
তার পদমর্যাদায় আসীন বা সমপদ মর্যাদা প্রদান করা হবে এবং তাহার উক্ত ছুটিকাল পূর্ণ
বেতনে কর্তব্যকাল বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) সাময়িক বরখাস্তের পর পুনর্বহাল সংক্রান্ত
বিষয়াদি বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ইত্যাদিতে ন্যস্ত কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (১৫):
(১)
যে সরকারি কর্মচারী প্রতি এই বিধিমালা প্রযোজ্য তার চাকুরী স্থানীয় বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে,
অতঃপর এই বিধিতে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ বলে উল্লিখিত, হাওলাত দেওয়া হলে, এই বিধিমালার
অধীন তাহার বিরুদ্ধে কার্যধারা সূচনা করিবার উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা হাওলাত গ্রহীত
কর্তৃপক্ষের থাকবে: তবে শর্ত থাকে যে, হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ উক্ত সরকারি কর্মচারীর
চাকুরী হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে অতঃপর এই বিধিতে হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ
হিসাবে উল্লিখিত, যে পরিস্থিতিতে কার্যধারা শুরু করা হইয়াছে তাহা অবিলম্বে অবহিত করিবে।
(২) হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ হাওলাত হিসাবে গৃহীত
কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনা অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করিয়া বিভাগীয় কার্যক্রম
গ্রহণ করবার মতো পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে বলে মনে করলে নিজেরা বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ
না করে সমুদয় রেকর্ডপত্র ও তথ্য হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট এই বিধির অধীনে
বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিবার জন্য প্রেরণ করতে পারবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর অধীন সমুদয় রেকর্ডপত্র ও তথ্য
প্রাপ্তির পর হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ সামগ্রিক বিষয়টি বিবেচনা করিয়া বিভাগীয় কার্যক্রম
গ্রহণ করবার জন্য পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে বলে মনে করিলে হাওলাত হিসাবে প্রদত্ত সংশ্লিষ্ট
কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই বিধির অধীনে বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে এবং বিধি মোতাবেক
বিষয়টি নিষ্পত্তি করিবে।
(৪) উপ-বিধি (১) অনুসারে কোনো সরকারি কর্মচারীর
বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ মনে করে
যে, তার উপর দন্ড আরোপ করা উচিৎ তা হলে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ হাওলাত প্রদানকারী
কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত মামলার সমুদয় রেকর্ডপ্রত্র প্রেরণ করবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এর অধীন সমুদয় রেকর্ডপ্রত্র প্রাপ্তির
পর হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নিজে দন্ডদানের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ হলে যেইরূপ প্রয়োজন
মনে করবে সেইরূপ আদেশ প্রদান করতে পারবে অথবা, যদি নিজে কর্তৃপক্ষ না হন, তা হলে মামলাটি
দন্ডদানের যোগ্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আদেশ দানের জন্য উপস্থাপন করিবে।
(৬) এই বিধির অধীনে কর্তৃপক্ষ হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ
কর্তৃক প্রেরিত তদন্ত রেকর্ডের উপর অথবা তিনি যেইরূপ প্রয়োজন মনে করবে সেইরূপ অধিকতর
তদন্ত অনুষ্ঠানের পর আদেশ প্রদান করতে পারবে এবং এইরূপ আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বিধি
৭ এর উপ-বিধি (৯) ও (১০) এর বিধানসমূহ অনুসরণ করতে হবে।
আদেশের বিরুদ্ধে আপিল
বিধি (১৬):
(১) কোনো সরকারি কর্মচারী এই উদ্দেশ্যে সরকারের
সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট, অথবা যে ক্ষেত্রে এইরূপ কোনো
কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত নাই, সেইক্ষেত্রে আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষের পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
নিকট, অথবা যে ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অধস্তন কোনো কর্তৃপক্ষ আদেশদান করেছেন,
সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট, নিমবর্ণিত যে কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের
করতে পারবেন, যথা:
(ক) তার উপর যে কোনো দন্ড আরোপের আদেশের বিরুদ্ধে;
(খ) চুক্তি ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়ে চুক্তির শর্তানুসারে
চাকুরীর অবসানের সময় পর্যন্ত একনাগারে ৫ (পাঁচ) বৎসরের অধিককাল চাকুরীতে নিয়োজিত থাকলে,
উক্ত ক্ষেত্রে চাকুরীর অবদান ঘটানোর আদেশের বিরুদ্ধে;
(গ) তাহার বেতন, ভাতাদি, পেনশন বা চাকুরীর অন্যান্য
শর্তাবলি যা চাকুরীর বিধি বা চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তার স্বার্থের প্রতিকূলে
পরিবর্তন, রদবদল বা অগ্রাহ্য করবার আদেশের বিরুদ্ধে; অথবা
(ঘ) চাকুরীর যে বিধি বা চুক্তি দ্বারা তার বেতন,
ভাতাদি, পেনশন বা চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলি নিয়ন্ত্রিত হয়, ইহার কোনো বিধানে তার স্বার্থের
প্রতিকূল ব্যাখ্যা সংবলিত আদেশের বিরুদ্ধে।
আপিল দায়েরের সময়সীমা
বিধি (১৭):
যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে, উক্ত আদেশ
সম্পর্কে আপিলকারী অবহিত হইবার তারিখের ৩ (তিন) মাসের মধ্যে আপিল দায়ের করা না হলে
এই বিধিমালার অধীনে কোনো আপিল গ্রহণ করা হবে না তবে শর্ত থাকে যে, যদি আপিল কর্তৃপক্ষ
সন্তুষ্ট হন যে, যথাসময়ে আপিলকারীর আপিল দায়ের করতে না পারিবার পর্যায় কারণ রয়েছে,
তা হলে আপিল কর্তৃপক্ষ উপরোল্লিখিত মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের
মধ্যে কোনো আপিল বিবেচনার জন্য গ্রহণ করিতে পারবে। এক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমানাদি দাখিল
করতে হবে।
আপিল দায়েরের রীতি ও পদ্ধতি
বিধি (১৮):
(১) এই বিধিমালার অধীন আপিল দায়ের করতে হলে প্রত্যেক
ব্যক্তিকে পৃথকভাবে এবং স্বীয় নামে আপিল দায়ের করতে হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন আপিল কর্তৃপক্ষকে সম্বোধন
করে দায়েরকৃত প্রতিটি আপিল আবেদন আপিলকারী কর্তৃক তার স্বপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ও যুক্তি
নির্ভর তর্থসমূহ অন্তর্ভুক্তিক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণরূপে দায়ের করতে হবে এবং ইহাতে কোনো
অসম্মানজনক বা অশোভন ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
(৩) প্রতিটি আপিল আবেদন আপিলকারী যে অফিসে কর্মরত
আছেন সেই অফিসের অফিস প্রধানের মাধ্যমে অথবা, তিনি চাকুরীরত না থাকিলে, সর্বশেষ যে
অফিসে চাকুরীরত ছিলেন সেই অফিসের অফিস প্রধানের মাধ্যমে এবং যে কর্তৃপক্ষের আদেশের
বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে, উক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দায়ের করতে হবে: তবে শর্ত থাকে
যে, আপিল আবেদনের একটি অগ্রিম কপি আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট সরাসরি দাখিল করা যাবে।
আপিল ও পরবর্তী করণীয়
আপনি বেসামরিক কর্মচারী কোনো কারনে চাকরিচ্যুত
হয়ে যদি সংক্ষুব্ধ হোন তাহলে প্রথমে আপিল করতে হবে।
সামরিক বাহিনীতে বেসামরিক কর্মচারী/কর্মকর্তাগণের ক্ষেত্রে
বিধিমালা ১৯৬১ অনুযায়ী
আপিল আবেদন করার নিয়মাবলী
বিধিমালা ১৯৬১ এর ১৭,
(১) উপবিধিতে বর্ণিত আছে যে, এই বিধিমালার আওতায়
যে কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে একটি মাত্র আপিল আবেদন করার অধিকারী হবেন,
(ক) ৮ নং বিধির আওতায় প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট যে কোনো
একটি শাস্তি।
তবে শর্ত থাকে যে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত
কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার পাইবেন
না তবে তিনি সেই আদেশের পুন:বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
(২) (ক) প্রথম শ্রেণির একজন চাকুরে মনোনীত কর্তৃপক্ষের
আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির নিকট আপিল করতে পারবেন।
(খ) দ্বিতীয় শ্রেণির একজন চাকুরে তার নিয়োগকারী
কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে সচিব কিংবা যুগ্ম সচিব বরাবরে আপিল করতে পারবেন। তবে সচিব
বা যুগ্ম সচিব তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হলে তাকে রাষ্ট্রপতি বরাবরই আপিল করতে হবে।
(গ) দ্বিতীয় শ্রেণির (নন-গেজেটেড) অথবা তৃতয়ি
অথবা চতুর্থ শ্রেণির একজন চাকুরে মনোনীত কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের
কাছে আপিল করতে পারবেন অথবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে ৬ নং বিধির ২ নং
উপবিধির আলোকে প্রজ্ঞাপন সূত্রে গঠিত সুনির্দিষ্ট চাকরি বিধি প্রনয়ণকারী কর্তৃপক্ষের
নিকট আপিল করতে পারবেন।
শর্ত থাকে যে, সশস্ত্র বাহিনী সদর দপ্তরে কর্মরত
কোনো ব্যক্তি (বেসামরিক) তার উপর এ ধরণের প্রদত্ত আদেশে যেখানে প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা
(বর্তমানে মহাপরিচালক) নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সেই ক্ষেত্রে তার মূল আদেশের বিরুদ্ধে তিনি
সচিব কিংবা যুগ্ম সচিবের কাছে আপিল করতে পারবেন।
বিধি (১৯):
প্রত্যেক আগ্রহী আপিলকারী আলাদাভাবে নিজ নামে
আপিল দায়ের করতে পারবেন।
বিধি (২০):
এই
বিধির আওতায়কৃত আপিল যৌক্তিক এবং অসম্মানজনক বা অবাঞ্চিত ভাষা বিবর্জিত ও পূর্ণাঙ্গ
হতে হবে। যে কোনো আপিল দপ্তর প্রধানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে যে দপ্তরে আবেদনকারী কাজ
করেছেন এবং করতেন এবং সেই কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে।
সমস্যা: আইনে বলা আছে, যে কোনো আপিল দপ্তর প্রধানের
মাধ্যমে জমা দিতে হবে যে দপ্তরে আবেদনকারী কাজ করেছেন এবং করতেন। দেখা যাচ্ছে, আপনি
যে দপ্তরে কাজ করতেন সেই দপ্তরেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে অর্থাৎ সেই দপ্তর প্রধান আপনাকে
লঘু দন্ড বা গুরু দন্ড দেয়ার সুপারিশ করে বিভাগীয় প্রধানের নিকট সুপারিশ নামা প্রেরণ
করার পরই আপনার চাকরিচ্যুত হলেন। আর আপনি যখন আপিল করবেন তখন কিন্তু সকলের বিরদ্ধে
কথাগুলো চলে যায়। আবার সেই দপ্তর প্রধানের মাধ্যমে আপিল আবেদন প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
দেখা যায়, আপিল আবেদন দপ্তর প্রধানের নিকট প্রেরন করলে তিনি যখন দেখেন যে, কথাগুলো
তার বিরুদ্ধে তখন সেই আপিল আবেদন তার দপ্তরেই পড়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ আপিল আবেদন
আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট সহজে প্রেরণ না করে সময় লস করেন।
নিয়ম হচ্ছে: এক সেট
আপিল আবেদন দপ্তর প্রধানের নিকট প্রেরণ করতে হবে আর এক সেট সরাসরি আপিল কর্তৃপক্ষের
নিকট প্রেরণ করতে হবে।
আপিল আবেদন করার সময় সীমা: আপনি
যে তারিখে চাকরিচ্যুত হয়েছেন সেই তারিখ থেকে ০৬ মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে। উক্ত আইনটি
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ তে উল্লেখ আছে কিন্তু সংশোধিত ২০১৮
তে উক্ত সময় সীমা ০৩ মাস করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে যে, উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে আর
আপিল কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে পরবর্তী তিন মাস তিনি বিবেচনা করতে পারেন।
আপিল করার পরবর্তী করণীয় কি? না জানলে সব ব্যর্থ।
আপিল করার পর দেখা যায়, আপিল
কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া শব্দ নেই। বছরের পর বছর তার দপ্তরে আপিল আবেদন পড়ে থেকে কাগজের
পাতাগুলো উইপোকায় নষ্ট হয়ে গেছে। আপনি অবহেলিত। কেউ আর আপনার কথা শোনে না। যাই হোক
দশ পনেরো বছর পর রায় হলো, হয় চাকরি ফিরে পেয়েছেন না হয় আপিল আবেদন খারিজ বা নিষ্পত্তি
করে দিয়েছে।
আপিলে যদি চাকরি ফিরে না পান
তখন আপনার সব স্বপ্ন নষ্ট। পাগলের মতো এর কাছে ওর কাছে গিয়ে পরমর্শ চাচ্ছেন কেউ সঠিক
পরামর্শ দিতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত যেতে হয় কোনো উকিলের কাছে।
আপনি যখন কোনো উকিলের সাথে যোগাযোগ
করবেন তথন তিনি বলবেন হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। রিট মামলা করলে বিচারক বলবেন আপনার
এই মামলা আগে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে করতে হবে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে গেলে বিচারক বলবেন
এতো বছর পর কেনো এলেন। এভাবে দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে করতে হার্ট এ্যাটাক তারপর মৃত্যু।
আসল নিয়ম: যে নিয়মটা বাংলাদেশের
শতকরা ৯৫ ভাগ এ্যাডভোকেটও জানেন না। আর বেসামরিক লোকজনের শতকরা ৯৮ ভাগ না জানার কারনে
সব হারিয়ে রাস্তা রাস্তায় পাগল হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আসল কথায় আসি। আপনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের
নিকট আপিল আবেদন করার পর দুই মাসের মধ্যে যদি কোনো উত্তর না আসে, তার পরের ছয় মাসের
মধ্যে তথা চাকরিচ্যুত হওয়ার তারিখ থেকে মোট ০৮ মাসের মধ্যে আপনাকে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে
মামলা দায়ের করতে হবে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের সর্বশেষ সংশোধনীতে বলা হয়েছে যে, আপিল
কর্তৃপক্ষ উত্তর প্রদান করুক আর নাই করুক ০৮ মাসের মধ্যে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা
করতে হবে।
দুই মসের মধ্যে আপিল করার পরে
আপিল চলাকালীন ০৮ মাসের মধ্যে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে যে মামলা করতে হয় এই নিয়মটাই ৯৫% উকিলগণ জানেন না।
তারা শুধুই বলেন হাইকোর্টে রিট করেন।
সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের তদন্ত ও করণীয়
সামরিক বাহিনী তথা সেনা, নেী ও বিমান এবং আধাসামরিক
বাহিনী সোয়াট (বাংলাদেশ), বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ), বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড,
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ও বাংলাদেশ আনসার এর কোনো সদস্য অভিযুক্ত হলে তাদের ক্ষেত্রেও
উপরোক্ত তদন্তের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা হয়। তবে সুশৃংখল ও স্পর্শকাতর সামরিক বাহিনীতে
কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে অভিযুক্তকে কড়া নজরদারিতে রেখে তদন্তের কার্যক্রম
পরিচালনা করা হয়। এমবিএমএল (ম্যানুয়াল বাংলাদেশ মিলিটারি ল) অনুযায়ী শাস্তি প্রদান
করা হয়। প্রথমে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করা হয়। সত্যতা
প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা
হয়। শাস্তির ধরণ অনুযায়ী সাত দিন থেকে উননব্বই দিন পর্যন্ত সৈনিকদের ক্ষেত্রে কোয়ার্টার
গার্ড এ রাখা হয়। তবে শাস্তির মেয়াদ নব্বই দিন উর্দ্ধ হলে চাকরিতে সে আর বহাল থাকবে
না। অনেক ক্ষেত্রে শাস্তির ধরণ অনুযায়ী সিভিল জেলও হতে পারে।
কোথায় আপিল করবেন
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রত্যেক সদর দপ্তরে
ওয়েলফেয়ার ডাইরেক্টরেট নামে একটি দপ্তর আছে। আপনাকে যে শাস্তিই দেয়া হোক না কেনো এমনকি
চাকরিচ্যুত করলেও আপনি উক্ত দপ্তরে তিন মাসের মধ্যে আপিল করবেন। এমনকি জেল দিলেও আপনি
জেল থেকে বের হয়ে আপিল করতে পারবেন। দেখা যায়,
চাকরিচ্যুত হওয়ার পর অনেকে ভয়ে আপিল করেন না। অথচ ঐ দপ্তরটি গঠন করা হয়েছে সৈনিকদের
কল্যাণমূলক কাজ করার জন্যে। এখানে ভয়ের কিছু নেই। আপনি যদি সৎ হয়ে থাকেন বা আপনার বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ যদি মিথ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনি সশরীরে (সেনাবাহিনীর হলে) সেনাসদর দপ্তরে
উপস্থিত হয়ে ওয়েলফেয়ার ডাইরেক্টরেট এ আপিল করবেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষেত্রে করণীয়
বাংলাদেশ পুলিশ একটি বেসামরিক বাহিনী। এই বাহিণীর কোনো সদস্য অভিযুক্ত
হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আপিল করবেন পরে নিজ এলাকাধীন প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করবেন।
প্রশাসনিক ট্রাইবুনালগুলো কোথায় অবস্থিত
প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছে চাকরিজীবিদের
সকল সমস্যা সমাধান করার জন্যে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য কিছু গণপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের
চাকরির মেয়াদ, শর্তাবলী, পদোন্নতি, সরকারি বাসা, বেতন-ভাতা ও পেনশন সম্পর্কিত বিষয়গুলো
প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য। এসব বিষয় বিচারের জন্য সারা দেশে মোট ৭টি প্রশাসনিক
ট্রাইব্যুনাল রয়েছে।
আপনার শেষ কর্মস্থল যেখানে সেই ট্রাইবুনালে মামলা করবেন
প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালের নাম
অধিক্ষেত্র
১। ঢাকা-১ নম্বর
ঢাকা,
নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজিপুর ও নরসিংদী।
২। ঢাকা-২ নম্বর
ফরিদপুর,
গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও রাজবাড়ী।
৩। ঢাকা-৩ নম্বর
ময়মনসিংহ,
কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুর।
৪। চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম,
কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বি-বাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার,
হবিগঞ্জ, ও সুনামগঞ্জ।
৫। খুলনা
খুলনা,
বাগেরহাট, সাতক্ষিরা, যশোর, মাগুড়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ও মেহেরপুর।
৬। বরিশাল
বরিশাল,
পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা।
৭। বগুড়া
বগুড়া,
জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট,
গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর।
প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগ
ঢাকায় (আব্দুল গণি রোড, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের
বিপরীত পার্শ্বে অবস্থিত) একটি মাত্র প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগ রয়েছে। প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালে মামলা যদি খারিজ হয়ে যায় বা মামলায় হেরে গেলে সকল নথিপত্র সংগ্রহ করে প্রশাসনিক
ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগে আপিল করতে হবে। আপনার সকল প্রমানাদি সঠিক থাকলে এখানে চাকরি
পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই হাল ছেড়ে দিবেন না।
চাকরিচ্যুত হয়ে নিঃস্ব অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়
যারা চাকরিচ্যুত হোন তাদের মধ্যে অনেকেই নিঃস্ব
অবস্থায় কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে থাকেন। বাড়ির জমি, স্ত্রীর গহনাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র
বিক্রি করে মামলা চালাতে দেখা যায়। আপনাদের মধ্যে যারা ইয়ং যাদের চাকরি করার বয়স বা
শক্তি সামর্থ আছে তারা মামলা দায়ের করে কেউ ঘরে বসে থাকবেন না। এলাকায় থাকলে একটু লজ্জা
লজ্জা লাগবে তাই বাড়িতে না থেকে বেড়িয়ে পড়ুন কর্মের সন্ধানে। কোনো কোম্পানিতে যেকোনো
একটি পদে চাকরি করুন আর সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি মামলার খরচ চালান। চাকরি
যদি ফিরে পান তাহলে তো ভালো আর যদি না পান তাহলে কর্ম তো একটা আছেই। সমস্যা নেই।
উল্লেখিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্যে যে কোনো
সময় ফোন করতে পারেন। আমি আছি সর্বক্ষণ অসহায়দের পাশে।
PENMAN
Md. Izabul Alam
Gulshan-1, Dhaka, Bangladesh.
01716508708, izabulalam@gmail.com
আমি যদি কখনো ব্যস্ত থাকি তাহলে আমার Whatsapp Number
(01917525598) এ সংক্ষিপ্তভাবে লিখে দিবেন
আমি পরে জানাবো।
আরো
সহযোগীতা পেতে যোগাযোগ করুন
ADIUL ISLAM
ADVOCATE, JUDGE COURT, DHAKA.
LABOUR COURT & ADMINISTRATIVE
TRIBUNAL, DHAKA.
ACCREDITED INCOME TAX PRACTITIONER.
LL.B (HON’S) AIUB, LL.M (JNU).
MOBILE:
01755009073 & 01642999563.
সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট, প্রশাসনিক ট্রাইবুনালসহ যেকোনো
আইনী বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শদাতা -
ব্যারিস্টার হাফিজ খান, (01859313939)
সিএলপি, গুলশান-১, ঢাকা।
সরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে কি করবেন? কোথায় মামলা করবেন?
(অভিযোগ উত্থাপন, তদন্ত, জবাব প্রদান, চাকরিচ্যুত হওয়া বা ক্ষতিগ্রস্ত
হওয়া, আপিল করা এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে কিভাবে মামলা করবেন এসবের বিস্তারিত
বর্ননা এখানে তুলে ধরা হয়েছে, আশা করি চাকরি সংক্রান্ত সকল সমস্যার সমাধান এখানে পেয়ে
যাবেন)
মোঃ ইজাবুল আলম
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা/দপ্তরসমূহ
যেমন, প্রতিরক্ষা বাহিনী-সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী এবং আন্ত:বাহিনী সংস্থা- ডিজিএফআই, সামরিক চিকিৎসা সার্ভিস মহাপরিদপ্তর
(ডিজিএমএস), ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি), ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ
কলেজ (ডিএসসিএসসি), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি), বাংলাদেশ
ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি), আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি), আর্মড
ফোর্সেস মেডিকেল ইন্সটিটিউট (এএফএমআই), আর্মড ফোর্সেস ইন্সটিটিউট অব প্যাথোলজি (এএফআইপি),
বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা (বিওএফ), আন্তঃবাহিনী নির্বাচন পর্ষদ (আইএসএসবি), বাংলাদেশ
সশস্ত্রবাহিনী বোর্ড (বিএএসবি), প্রতিরক্ষা ক্রয় মহাপরিদপ্তর (ডিজিডিপি), আন্তঃবাহিনী
জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর), ক্যাডেট কলেজ পরিচালনা পরিষদ, অন্যান্য সংস্থা/দপ্তর-বাংলাদেশ
ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর (বিএনসিসি), বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর (বিএমডি), বাংলাদেশ মহাকাশ
গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো), বাংলাদেশ জরিপ অধিদপ্তর, সামরিক ভূমি ও
সেনানিবাস অধিদপ্তর (সাভূসে), গুপ্তসংকেত পরিদপ্তর, কন্ট্রোলার জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স
(সিজিডিএফ), প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার কার্যালয় (সিএও), মিনিস্ট্রি অব ডিফেন্স কনস্ট্যাবিউলারি
(এমওডিসি)তে কর্মরত শুধু মাত্র বেসামরিক কর্মচারী (Civil servant)সহ বাংলাদেশের অন্যান্য
বেসামরিক সংস্থাসমূহের কর্মচারীদের জন্য এই নিয়ম কানুন প্রযোজ্য হবে।
তবে বিজিবি, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর সামরিক
কোনো সদস্য এই নিয়মের মধ্যে পড়বে না।
প্রথমে আলোচনা করি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের
অধীনস্থ সংস্থাসমূহে কর্মরত বেসামরিক কর্মচারীগণ চাকরিচ্যুত হলে কি করবেন?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থাসমূহে
কর্মরত বেসামরিক কর্মচারীগণ কোনো অপরাধ করলে বা কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে বিধিমালা
১৯৬১ অনুযায়ী বিচারিক কার্যক্রম শুরু ও শেষ করা হয়। এই প্রজ্ঞাপনটি জারী করা হয় পাকিস্তান
আমলে। তারিখ: রাওয়ালপিন্ডি, ২৫ জুলাই ১৯৬১।
বিধিমালা ১৯৬১-তে চারটি অধ্যায় আছে। যথা:
প্রথম অধ্যায়-সাধারণ,
দ্বিতীয় অধ্যায়-শ্রেণি বিন্যাস,
তৃতীয় অধ্যায়- আচরণ এবং শৃংখলা,
চতুর্থ অধ্যায়- আপিল সংক্রান্ত। তবে আচরণ এবং শৃংখলা ও আপিল এর নিয়মাবলী সরকারি কর্মচারী
(শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এবং সংশোধিত ২০১৮ এর মতোই।
বিধিমালা ১৯৬১
এই বিধিমালায় কোন সরকারি কর্মচারীর অপরাধের
তদন্ত প্রক্রিয়া এবং অপরাধ বা অপরাধসমূহের গুরুত্ব অনুসারে তাকে কি ধরনের শাস্তি প্রদান
করা হবে তার বিধান রয়েছে। এতে আপীল, পুনঃতদন্ত ও পুনর্বিচার প্রক্রিয়াও অন্তর্ভুক্ত
রয়েছে। এ বিধিতে অসদাচরণের সংজ্ঞা দিয়ে বলা
হয়েছে যে, স্বাভাবিক শৃঙ্খলা বা চাকুরির শৃঙ্খলার পরিপন্থী বা আচরণবিধিতে বর্ণিত যেকোন
শর্ত লঙ্ঘন অথবা কোন কর্মকর্তা বা ভদ্রলোকের জন্য শোভনীয় নয় এমন কোন আচরণ অসদাচরণ
বলে বিবেচিত হবে। এ ছাড়াও অসদাচরণ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে:
(১) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনসম্মত নির্দেশ
অমান্য করা;
(২) কর্তব্যকর্মে অবহেলা;
(৩) আইনসঙ্গত কারণ ব্যতিরেকে সরকারি কোন আদেশ,
বিজ্ঞপ্তি ও নির্দেশপত্রের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন এবং
(৪) কোন সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে যেকোন কর্তৃপক্ষের
কাছে অসৌজন্যমূলক, বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন বা তুচ্ছ বিষয়ে অভিযোগ পেশ করা।
এই বিধিতে শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রগুলি হচ্ছে
অযোগ্যতা, অসদাচরণ, ইচ্ছাকৃত অনুপস্থিতি, দুর্নীতি ও শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রম।
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রয়োগঃ
বিধি (১)
(১) এই বিধিমালা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা
ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ নামে অভিহিত হবে।
(২) এই বিধিমালা নিম্নবর্ণিত ব্যক্তি বা কর্মচারী
ব্যতীত অন্যান্য সকল সরকারি কর্মচারীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে, যথা:
(ক) রেলওয়ে সংস্থাপন কোড প্রযোজ্য হয় এমন ব্যক্তি;
(খ) মেট্রোপলিটান পুলিশের অধস্তন কর্মচারী;
(গ) পুলিশ পরিদর্শকের নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ
বাহিনীর অন্য কোনো সদস্য; (ঘ) বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ এর অধস্তন কর্মকর্তা, রাইফেলম্যান
ও সিগন্যালম্যান; (ঙ) জেলার এর নিম্ন পদমর্যাদার বাংলাদেশ জেলের অধস্তন কর্মচারী;
(চ) সরকার কর্তৃক, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন
দ্বারা নির্দিষ্টকৃত কোনো চাকুরী বা পদে অধিষ্ঠিত ব্যক্তিগণ; এবং
(ছ)
এমন কোন ব্যক্তি যাহার চাকুরীর শর্তাবলি, বেতন, ভাতাদি, পেনশন, শৃঙ্খলা ও আচরণ বা এতদসংক্রান্ত
যে কোন বিষয়ে চুক্তির মাধ্যমে বিশেষ বিধান করা হয়েছে।
দন্ডের ভিত্তি অর্থাৎ যেসব কারণে একজন কর্মচারীর উপর দন্ড আরোপ করা হয়
বিধি ৩:
কর্তৃপক্ষের মতে যে ক্ষেত্রে কোনো সরকারি কর্মচারী,
(ক) শারীরিক বা মানসিক অসামর্থতা, অথবা সাধারণ
দক্ষতা বজায় রাখা বা বৃদ্ধির জন্য নির্ধারিত বিভাগীয় পরীক্ষায় পর পর দুই বা ততোধিকবার
অকৃতকার্যতা, অথবা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে উক্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়া,
অথবা যুক্তিসংগত কারণ ব্যতিরেকে এই বিধিমালার অধীনে তদন্ত কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত
হয়ে তদন্ত কার্যক্রম নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আরম্ভ করতে কিংবা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে অদক্ষ হন, অথবা দক্ষতা হারান এবং তার উক্তরূপ দক্ষতা পুনরায়
অর্জনের কোনো সম্ভাবনা না থাকে; অথবা
(খ) অসদাচরণের দায়ে দোষী হন; অথবা
(গ) পলায়নের দায়ে দোষী হন; অথবা
(ঘ) দুর্নীতি পরায়ণ হন, অথবা নিম্নবর্ণিত কারণে
দুর্নীতিপরায়ণ বলে যুক্তিসংগতভাবে বিবেচিত হন (অ) তিনি বা তার উপর নির্ভরশীল অথবা অন্য
যে কোনো ব্যক্তি তার মাধ্যমে বা তার পক্ষে যদি তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সহিত অসামঞ্জস্যপূর্ণ
কোনো অর্থ-সম্পদ বা অন্য কোনো সম্পত্তির (যার যুক্তিসংগত হিসাব দিতে তিনি অক্ষম) অধিকারী
হন, অথবা (আ) তিনি প্রকাশ্য আয়ের সহিত সংগতিবিহীন জীবন-যাপন করেন; অথবা (ই) তার বিরুদ্ধে
দুর্নীতিপরায়ণতার অব্যাহত কুখ্যাতি থাকে; অথবা (ঙ) নাশকতামূলক কর্মে লিপ্ত হন, বা লিপ্ত
রয়েছেন বলে সন্দেহ করবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, অথবা নাশকতামূলক কাজে লিপ্ত অন্যান্য
ব্যক্তির সহিত জড়িত রয়েছেন বলে সন্দেহ করবার যুক্তিসংগত কারণ থাকে, এবং সেই কারণে তাকে
চাকুরীতে রাখা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হানিকর বলে বিবেচিত হয়; তা হলে কর্তৃপক্ষ, বিধি
৪ এর উপ-বিধি (৬) এর বিধান সাপেক্ষে, তার উপর এক বা একাধিক দন্ড আরোপ করতে পারবে।
শাস্তির প্রকৃতি
বিধি (৪):
বিধি ৪ এর (১) এই বিধিমালার অধীন নিম্নবর্ণিত
দুই ধরনের দন্ড আরোপ করা যাবে, প্রথমটি লঘু শাস্তি এবং দ্বিতীয়টি গুরু ধরণের।
লঘু শাস্তিঃ
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,
২০১৮ অনুযায়ী বিধি ৪ এর (২) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত লঘুদÐসমূহ হবে নিম্নরুপ, যথাঃ
(ক) তিরস্কার;
(খ) চাকুরী বা পদ সম্পর্কিত বিধি বা আদেশ অনুযায়ী
পদোন্নতি বা আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধির অযোগ্যতার ক্ষেত্র ব্যতীত, নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য
পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধি স্থগিত রাখা;
(গ) কর্তব্যে অবহেলা বা সরকারি আদেশ অমান্য
করার কারণে সংঘটিত সরকারের আর্থিক ক্ষতির সম্পূর্ণ অংশ বা ইহার অংশবিশেষ, বেতন বা আনুতোষিক
হতে আদায় করা; অথবা
(ঘ) বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ।
গুরু শাস্তিঃ
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা,
২০১৮ অনুযায়ী বিধি ৪ এর (৩) উপ-বিধি (১) এ উল্লিখিত গুরুদন্ডসমূহ হবে নিমরূপ, যথাঃ
(ক) নিম্নপদ বা নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ;
(খ) বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান;
(গ) চাকুরী হতে অপসারণ;
(ঘ) চাকুরী হতে বরখাস্তকরণ।
বিধি ৪ এর (৪) উপ-বিধি (৩) এর অধীন কোনো কর্মচারীর
উপর,
(ক) চাকুরী হতে অপসারণের দন্ড আরোপ করা হলে
তিনি সরকারের অধীন বা কোনো আইনের দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ
সংস্থার চাকুরীতে নিযুক্ত হওয়ার অযোগ্য হবেন না; এবং
(খ) চাকুরী হতে বরখাস্তকরণের দন্ড আরোপ করা
হলে সরকারের অধীন বা কোনো আইনের দ্বারা বা আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোনো সংবিধিবদ্ধ সংস্থার
চাকুরীতে নিযুক্ত হওয়ার অযোগ্য হবেন।
বিধি ৪ এর (৫) এই বিধিতে উল্লিখিত দন্ডসমূহ
নিম্নরূপভাবে আরোপ করা যাবে, (তথা কোন্ অপরাধের জন্যে কোন্ শান্তি) যথাঃ
(ক) বিধি ৩ এ বর্ণিত অদক্ষতার জন্য তিরস্কার
এবং চাকুরী হতে বরখাস্ত ব্যতীত যে কোনো দন্ড,
(খ) অন্য কোনো অদক্ষতার জন্য চাকুরী হতে বরখাস্ত
ব্যতীত যে কোনো দন্ড; (গ) অসদাচরণের জন্য যে কোনো দন্ড;
(ঘ) পলায়নের জন্য তিরস্কার ব্যতীত যে কোনো
দন্ড;
(ঙ) দুর্নীতির জন্য যে কোনো দন্ড, তবে উক্ত
অপরাধের পুনরাবৃত্তির ক্ষেত্রে নিম্নপদ বা নিম্ন বেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ দন্ড ব্যতীত
যে কোনো দন্ড;
(চ) নাশকতামূলক কার্যকলাপের জন্য নিম্নপদ বা
নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ ব্যতীত যে কোনো দন্ড।
বিধি ৪ এর (৬) কোনো সরকারি কর্মচারীর নিয়োগকারী
কর্তৃপক্ষের অধস্তন কোনো কর্তৃপক্ষ (অর্থাৎ শাখা অফিসের কোনো কর্মকর্তা) এই বিধিমালার
অধীন কোনো গুরুদন্ড আরোপ করতে পারবে না।
বিধি ৪ এর (৭) উপ-বিধি (৩) এর দফা (গ) ও (ঘ)
এর অধীন “চাকুরী হতে অপসারণ” ও “চাকুরী হতে বরখাস্তকরণ” অভিব্যক্তি অর্থে এইরূপ কোনো
ব্যক্তির চাকুরী হতে অব্যাহতি অন্তর্ভুক্ত হবে না যিনি
(ক) শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে তার
মেয়াদ চলাকালে বা তার প্রতি প্রযোজ্য শিক্ষানবিশকাল; অথবা
(খ) চুক্তি ব্যতীত অন্য যে কোনো উপায়ে কোন
অস্থায়ী চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ ধরে রাখবার জন্য, সেই নিযুক্তিকাল শেষ হলে; অথবা
(গ) কোন চুক্তির অধীনে নিযুক্ত হলে সেই চুক্তির
শর্ত মোতাবেক।
বিধি (৫): নাশকতামূলক
কার্যকলাপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি এখানে উল্লেখ করা হলো না।
লঘুদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (৬):
(১)
যখন কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি ৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) তে বর্ণিত কারণে
কার্যধারা সূচক করবার প্রয়োজন হয় এবং কর্তৃপক্ষ কিংবা, যে ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি নিজেই
কর্তৃপক্ষ, সেইক্ষেত্রে উক্ত সরকারি কর্মচারী যে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের অধীন
সেই মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা যে কর্মকর্তাকে কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়
বা বিভাগের সচিব, সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা, এতদুদ্দেশ্যে যাকে কর্তৃপক্ষ হিসেবে
নির্ধারণ করেছেন, তিনি যদি অভিমত পোষণ করেন যে, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের
তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর কোনো দন্ড প্রদান করা হবে, তা হলে কর্তৃপক্ষ অথবা, ক্ষেত্রমত,
প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী,
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহ
তাকে লিখিতভাবে অবহিত করবে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক অভিযোগনামা প্রাপ্তির ১০ (দশ)
কার্যদিবসের মধ্যে তার আচরণের কৈফিয়ত প্রদানের জন্য এবং তিনি ব্যক্তিগতভাবে শুনানির
ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা, তাও জানাবার জন্য নির্দেশ প্রদান করতে পারবে: তবে শর্ত থাকে
যে, উক্ত নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হবার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তি সময় বৃদ্ধির আবেদন করলে
কর্তৃপক্ষ অথবা, ক্ষেত্রমত, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী
তাকে বক্তব্য দাখিল করবার সুযোগ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত ৭ (সাত) কার্যদিবস পর্যন্ত
সময় বর্ধিত করতে পারবে; এবং
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি দফা (ক) এর অধীন নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময়ের মধ্যে পেশকৃত কৈফিয়ত, যদি থাকে, বিবেচনা করবেন এবং তিনি যদি ব্যক্তিগতভাবে
শুনানির ইচ্ছা পোষণ করে থাকেন, তা হলে ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণ করবেন, অথবা নির্ধারিত
সময়ের মধ্যে যদি তিনি কৈফিয়ত পেশ না করে থাকেন, তা হলে এইরূপ সময়ের মধ্যে তাহাকে লঘুদন্ড
প্রদান করতে পারবে: তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ, সচিব বা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী, যে ক্ষেত্রে
যিনি হন, যুক্তিযুক্ত মনে করলে অভিযোগ তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অভিযুক্তের
পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এমন একজন কর্মচারীকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারবে।
(২) তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হইতে তদন্ত
প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর, কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী আদেশের
পক্ষে যুক্তি ও প্রমাণ উল্লেখ করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণক্রমে ইহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে
অবহিত করবে অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী পুনঃতদন্ত বা অধিকতর তদন্তের জন্য আদেশ প্রদান করবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর অধীন তদন্তের আদেশ দেওয়া
হলে, কর্তৃপক্ষ বা, ক্ষেত্রমত, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করবে।
(৪) যখন কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি
৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) অধীন কোনো কার্যধারা সূচনা করা হয় এবং উপ-বিধি (১) এ বর্ণিত
কর্তৃপক্ষ, সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী যদি এইরূপ অভিমত পোষণ করেন যে, অভিযোগ প্রমাণিত
হইলে অভিযুক্তকে তিরস্কার দন্ড প্রদান করা যেতে পারে, তা হলে, কর্তৃপক্ষ বা ক্ষেত্রমত,
সচিব অথবা সংশ্লিষ্ট কর্মচারী অভিযুক্তের ব্যক্তিগত শুনানি গ্রহণপূর্বক কারণ লিপিবদ্ধ
করিয়া তিরস্কার দন্ড আরোপ করতে পারবে অথবা অভিযুক্ত ব্যক্তিগত শুনানির জন্য হাজির হতে
ব্যর্থ হলে বা উপস্থিত হতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলে শুনানি ব্যতিরেকেই উক্ত তিরস্কার
দন্ড আরোপ করা যাবে অথবা উপ-বিধি (১) হতে (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করে তার উপর যে
কোন দন্ড আরোপ করা যাবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এ উল্লিখিত ক্ষেত্রে অভিযোগ
প্রমাণিত হলে তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর দন্ড আরোপ করতে হবে।
(৬) যদি অভিযুক্ত ব্যক্তি দাবি করেন যে, তার
বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ লিখিতভাবে জানাতে হবে, তা হলে উপ-বিধি (১) হতে (৩) এ বর্ণিত পদ্ধতি
অনুসরণ করতে হবে এবং এইক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তিরস্কার দন্ড অপেক্ষা কঠোরতর
দন্ড আরোপ করতে হবে।
গুরুদন্ড আরোপের ক্ষেত্রে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (৭):
(১)
যে ক্ষেত্রে বিধি ৩ এর দফা (ক) বা (খ) বা (গ) বা (ঘ) এর অধীন কোনো কার্যধারা সূচনা
করা হয় এবং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে যে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনো গুরুদন্ড আরোপ করা
প্রয়োজন হতে পারে, যে ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ
(ক) অভিযোগনামা প্রণয়ন করবে ও ইহাতে প্রস্তাবিত
দন্ডের বিষয় উল্লেখ করবে, এবং যে সকল অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগনামাটি প্রণীত হয়েছে,
ইহার বিবরণ এবং কর্তৃপক্ষ আদেশ প্রদানকালে অন্য যে সকল পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা
করবার ইচ্ছা পোষণ করেন ইহাসহ অভিযোগনামাটি উক্ত কর্মচারীকে অবহিত করবে;
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অভিযোগনামা প্রাপ্তির
১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দাখিল করতে বলবেন এবং সেই
সঙ্গে প্রস্তাবিত দন্ড কেন তার উপর আরোপ করা হবে না ইহার কারণ দর্শাইতে বলবে এবং তিনি
ব্যক্তিগতভাবে শুনানির ইচ্ছা পোষণ করেন কিনা তাও উল্লেখ করবে: তবে শর্ত থাকে যে, নির্ধারিত
সময়সীমা শেষ হবার পূর্বে অভিযুক্ত ব্যক্তি সময় বৃদ্ধির আবেদন করলে কর্তৃপক্ষ তাকে বক্তব্য
দাখিল করবার সুযোগ প্রদানের জন্য অতিরিক্ত ১০ কার্যদিবস পর্যন্ত সময় বর্ধিত করিতে পারবে।
(২) যে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময়ের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্য দাখিল করলে এবং যদি তিনি ব্যক্তিগত
শুনানি পাইবার ইচ্ছা পোষণ করেন, তা হলে ব্যক্তিগতভাবে শুনানির পর কর্তৃপক্ষ অভিযোগের
সহিত সংশ্লিষ্ট সকল বিষয়সহ দাখিলকৃত বক্তব্য বিবেচনা করবে, এবং অনুরূপ বিবেচনার পর
কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে,
(ক) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে সূচিত কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো উপযুক্ত ভিত্তি নাই, তা হলে, অভিযোগ প্রত্যাহার করবে এবং তদনুসারে
উক্ত কার্যধারা নিষ্পত্তি হবে;
(খ) অভিযুক্ত ব্যক্তি শর্তহীনভাবে সকল অভিযোগ
স্বীকার করেন এবং কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে, অীভযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় লঘুদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে, যে কোনো লঘুদন্ড আরোপ করবে, তবে গুরুদন্ড আরোপযোগ্য হবে বলে ধারণা করা
হলে কর্তৃপক্ষ দফা
(ঘ) অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ড
নিয়োগ করবে;
(গ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে, কিন্তু অভিযোগ প্রমাণিত হলে লঘুদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে, ব্যক্তিগতভাবে শুনানির সুযোগ প্রদান করে যে কোনো লঘুদন্ড
প্রদান করতে পারবে, অথবা লঘুদন্ড আরোপের উদ্দেশ্যে একজন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করে
বিধি ৬ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করিতে পারবে; (ঘ) অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কার্যধারাটি
অগ্রসর হইবার মতো পর্যাপ্ত ভিত্তি রয়েছে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে গুরদন্ড আরোপযোগ্য
হবে, তা হলে অভিযোগনামায় বর্ণিত অভিযোগ তদন্তের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পদমর্যাদার
নিম্নে নহেন এইরূপ একজন তদন্ত কর্মকর্তা বা ৩ (তিন) জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি তদন্ত
বোর্ড গঠন করবে।
(৩) অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি নির্ধারিত বা বর্ধিত
সময়ের মধ্যে আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো লিখিত বক্তব্য দাখিল না করেন, তা হলে নির্ধারিত
বা বর্ধিত সময় শেষ হইবার তারিখ হইতে ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে কর্তৃপক্ষ অভিযোগনামায়
বর্ণিত অভিযোগ তদন্ত করবার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তির পদমর্যাদার নিম্নে নহেন এইরূপ একজন
তদন্ত কর্মকর্তা অথবা ৩ (তিন) জন কর্মকর্তা সমন্বয়ে একটি তদন্ত বোর্ড নিয়োগ করবে।
(৪) তদন্তের আদেশ প্রাপ্তির তারিখ হতে ৭ (সাত)
কার্যদিবসের মধ্যে, ক্ষেত্রমত, তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ড তদন্তের কাজ আরম্ভ করবে
এবং বিধি ১১ এ বর্ণিত পদ্ধতি অনুসারে তদন্ত পরিচালনা করবে এবং কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত
প্রতিবেদন দাখিল করবে।
(৫) তদন্ত কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, তদন্ত
বোর্ডের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে দ্বিমতের কারণে ভিন্ন তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত
বোর্ড নিয়োগ করা যাবে না: তবে শর্ত থাকে যে, তদন্ত চলাকালে নিম্নবর্ণিত কারণে নূতন
তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ বা তদন্ত বোর্ড পুনর্গঠন করা যাবে, যথা:
(ক) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্যের মৃত্যু হলে;
(খ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরী হতে পদত্যাগ করলে;
(গ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরী হতে অবসর গ্রহণ করলে; বা
(ঘ) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের কোনো
সদস্য চাকুরীতে দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তদন্ত কার্য সম্পাদনে অসমর্থ বলে প্রতীয়মান
হলে।
(৬) উপ-বিধি (৫) এর বিধান অনুযায়ী নূতন তদন্ত
কর্মকর্তা নিয়োগ বা তদন্ত বোর্ড পুনর্গঠন করা হলে নূতন তদন্ত কর্মকর্তা বা পুনর্গঠিত
তদন্ত বোর্ড পূর্বের অসমাপ্ত তদন্তের ধারাবাহিকতায় তদন্তের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করবে।
(৭) তদন্তকারী কর্মকর্তা বা, ক্ষেত্রমত, তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ
উহা বিবেচনা করে অভিযোগের বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হইবার জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট
বিষয়ে পুনঃতদন্তের প্রয়োজনীয়তা মনে করলে, একই তদন্তকারী কর্মকর্তা বা তদন্ত বোডর্কে
সুনির্দিষ্ট বিষয় ও তথ্যসমূহ উল্লেখ করিয়া অভিযোগ পুনঃতদন্তের আদেশ দিতে পারবে।
(৮) তদন্ত কর্মকর্তা বা তদন্ত বোর্ডের তদন্ত
প্রতিবেদন বা পুনঃতদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তির পর কর্তৃপক্ষ উহা বিবেচনা করিবে, অভিযোগ
বিষয়ে ইহার সিদ্ধান্ত লিপিবদ্ধ করবে এবং উক্ত সিদ্ধান্ত, তদন্ত প্রতিবেদনের কপিসহ,
অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করবে।
(৯) কর্তৃপক্ষ যদি উপ-বিধি (৮) এর অধীনে গুরুদন্ড
প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তা হলে প্রস্তাবিত দন্ড কেন অভিযুক্ত ব্যক্তির উপর আরোপ
করা হবে না সে সম্পর্কে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ৭(সাত) কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শাইবার
নির্দেশ প্রদান করবে।
(১০) গুরুদন্ড প্রদানের জন্য যে সকল ক্ষেত্রে
কমিশনের সহিত পরামর্শ করা প্রয়োজন, সেই সকল ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ, উপ-বিধি (৯) এ বর্ণিত
সময় সীমার মধ্যে কোনো কারণ দর্শানো হলে উহাসহ সূচিত কার্যধারার কাগজপত্র কমিশনের নিকট
পরামর্শের জন্য প্রেরণ করবে।
(১১) বিভাগীয় কার্যধারায় (ক) যে ক্ষেত্রে কমিশনের
সহিত পরামর্শের প্রয়োজন নাই, সেইক্ষেত্রে উপ-বিধি (৯) এ বর্ণিত সময়সীমার মধ্যে অভিযুক্ত
ব্যক্তি কর্তৃক কারণ দর্শানো হলে উহা বিবেচনার পর, এবং (খ) যে ক্ষেত্রে কমিশনের সহিত
পরামর্শের প্রয়োজন আছে, সেইক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি কর্তৃক কোনো কারণ দর্শানো হলে
ইহা এবং কমিশন প্রদত্ত পরামর্শ বিবেচনার পর, কর্তৃপক্ষ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে
এবং ইহা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অবহিত করবে।
(১২) এই বিধির অধীন তদন্ত কার্যক্রম এবং যে
ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত বোর্ড নিয়োগ করা হয়, সেইক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তা বা
তদন্ত বোর্ডের প্রতিবেদন এবং প্রতিবেদনে প্রদত্ত মতামতের ভিত্তি পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণাদির
ভিত্তিতে হতে হবে।
মনে রাখা আবশ্যক
আপনি যে আপরাধই করেন না কেনো,
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি মনে করেন যে, আপনাকে তিনি শাস্তি দিবেন তাহলে তিনি তদন্ত প্রতিবেদনকে
তার মতো করেই সাজিয়ে নিবেন। সামরিক বা বেসামরিক সংস্থা থেকে চাকারিচ্যুত কর্মকর্তা
বা কর্মচারীর তদন্ত প্রতিবেদন, আপিল ও প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা করার নথিপত্র যাচাই
বাছাই করে এটাই প্রমাণিত যে, ৮৫% ব্যক্তি চাকরিচ্যুত হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের রোষানলে
পড়ে।
আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়,
কর্তৃপক্ষ তার প্রমোশনের জন্যে উর্দ্ধত্বন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ বা নিজের পারফরমেন্স
দেখাতে গিয়ে অধ:স্তন কর্মচারীকে ইনটেনশনালি বা ইচ্ছেকৃতভাবে পূর্বপরিকল্পনা মোতাবেক
চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র করে ফাঁসিয়ে দেয়। আপনার বিরুদ্ধে উত্থাপিত মিথ্যে আভিযোগকে তখন
সত্যে পরিনত করেন। আপনি যতোই বলেন, আপনি নির্দোষ তবুও তদন্তের প্রতিটি ধাপ বিধি মোতাবেক
অনুসরন করে তথা, প্রথমে কৈফিয়ত তলব করবে, এরপর অভিযোগনামা গঠন করবে, তারপর কারণ দর্শানো
নোটিশ দিবে এরপর চূড়ান্ত শাস্তি দেয়ার লক্ষ্যে সুপারিশনামাসহ প্রতিবেদন দাখিল করবে।
অভিযোগ উত্থাপিত হওয়ার পর থেকে
আপনাকে সবসময় কিছু ধাপ মনে রাখতে হবে এবং প্রতি ধাপে ধাপে সকল নথিপত্র সংরক্ষণ করে
রাখতে হবে। সময়, তারিখ, অভিযোগকারীর নাম ঠিকানাসহ লিখে রাখতে হবে। বেসামরিক সংস্থায়
যেহেতু জবাব প্রদানের সময় দেয়া হয় তাই তাড়াহুড়ো না করে ঠান্ডা মাথায় এবং অভিজ্ঞ লোকদের
সহযোগিতা নিয়ে জবাব দাখিল করবেন এবং ফটোকপি রেখে দিবেন। কোনো কাগজ না পড়ে কখনো স্বাক্ষর
করবেন না। তদন্ত চলাকালীন কাউকে হুমকি ধমকি দিবেন না, মোবাইলে কারো সাথে নিজের কোনো
গোপন কথা বলবেন না। নিজের মধ্যে কোনো দুর্বলতা থাকলে তা প্রকাশ করবেন না। আর একটি কথা
মনে রাখতে হবে, শুরুতে যে জবাব দিয়েছেন শেষ পর্যন্ত একই জবাব দিতে থাকবেন। মাঝখানে
গিয়ে অপরাধ স্বীকার করবেন না। মনে রাখবেন, আপনার বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ উত্থাপিত হয় তখন
কর্তৃপক্ষ পূর্বেই আপনার সম্পর্কে গোপনে খোঁজখবর নিয়েই অভিযোগ দায়ের করেছেন। তাই জবাব
দেয়ার সময় সেইটা মাথায় রেখেই জবাব দিবেন।
ব্যতিক্রম
বিধি (৯):
যে ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি তার আচরণের জন্য
ফৌজদারি অপরাধে সাজাপ্রাপ্তির কারণে চাকুরী হতে বরখাস্ত বা চাকুরী হতে অপসারিত অথবা
পদাবনতি হন; অথবা যে ক্ষেত্রে অভিযুক্তকে চাকুরী হতে বরখাস্ত অথবা চাকুরী হতে অপসারিত
অথবা পদাবনমিত করবার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, অভিযুক্ত ব্যক্তিকে
কারণ দর্শাইবার সুযোগ প্রদান যুক্তিযুক্তভাবে বাস্তবসম্মত নহে এবং কর্তৃপক্ষ ইহার স্বপক্ষে
কারণ লিপিবদ্ধ করেন, সেইক্ষেত্রে বিধি ৬ এবং ৭ এর বিধানাবলির কোনো কিছুই প্রযোজ্য হবে
না।
সাময়িক বরখাস্ত
বিধি (১২):
(১)
কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিধি ৩ এর অনুচ্ছেদ (খ) বা (গ) বা (ঘ) এর অধীনে কার্যক্রম
গ্রহণের প্রস্তাব করা হলে কর্তৃপক্ষ সমীচীন মনে করলে উক্ত কর্মচারীকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত
করতে পারবে : তবে শর্ত থাকে যে, কর্তৃপক্ষ অধিকতর সমীচীন মনে করলে, উক্ত সরকারি কর্মচারীকে
সাময়িকভাবে বরখাস্ত করবার পরিবর্তে লিখিত আদেশ দ্বারা আদেশে উল্লিখিত তারিখ হতে, তার
ছুটির প্রাপ্যতা সাপেক্ষে তাকে ছুটিতে যাইবার নির্দেশ প্রদান করতে পারবে।
(২) কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে চাকুরী হতে
বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসর দন্ডের আদেশ যদি কোনো আদালত বা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল
কর্তৃক রহিত বা বাতিল বা অকার্যকর ঘোষিত হয় এবং যদি কর্তৃপক্ষ যে অভিযোগের ভিত্তিতে
চাকুরী হতে বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক অবসরদানের দন্ড আরোপের সিদ্ধান্ত গ্রহণ
করেছিলেন, সেই অভিযোগের উপর সূচিত কার্যধারার প্রেক্ষাপট বিচেনাপূর্বক পুনঃতদন্তের
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন, তা হলে যে তারিখ হতে প্রথম চাকুরী হতে বরখাস্ত, অপসারণ বা বাধ্যতামূলক
অবসরের দন্ড আরোপ করা হয়েছিল, ঐ তারিখ হতে সরকারি কর্মচারী সাময়িকভাবে বরখাস্ত রয়েছেন
বলে গণ্য হবেন এবং পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই সাময়িক বরখাস্ত অব্যাহত থাকবে।
চাকুরী হইতে বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত, অপসারিত অথবা বরখাস্তকৃত সরকারি
কর্মচারীগণের ক্ষতিপূরণ অবসরভাতা, আনুতোষিক, ইত্যাদি
বিধি (১৩):
(১)
ক্ষতিপূরণ, অবসর ভাতা বা আনুতোষিকের পরিমাণ সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির যে কোনো আদেশ সাপেক্ষে,
একজন বাধ্যতামূলকভাবে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী, অতঃপর বর্ণিত বিধানের ক্ষেত্র ব্যতীত,
এইরূপ ক্ষতিপূরণ অবসরভাতা বা আনুতোষিক বা ভবিষ্য তহবিল সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন সেইরূপে,
তিনি যদি কোনো বিকল্প উপযুক্ত চাকুরীর ব্যবস্থা ব্যতীত তার পদ বিলুপ্তির কারণে চাকুরীচ্যুত
হতেন তা হলে, তাহার চাকুরী বা পদের প্রতি প্রযোজ্য বিধিসমূহের অধীনে অবসর গ্রহণ তারিখে
যেইরূপ প্রাপ্য হইতেন : তবে শর্ত থাকে যে, বিধি ১২ এর অধীনে সাময়িক বরখাস্তকালের পর
বাধ্যতামূলক অবসর প্রদানের ক্ষেত্রে উক্ত ক্ষতিপূরণ অবসর ভাতা বা আনুতোষিক বা ভবিষ্য
তহবিল সুবিধাদি সাময়িক বরখাস্তকাল বাদ দিয়া কেবল চাকুরীকালের জন্য প্রাপ্য হবেন: আরো
শর্ত থাকে যে, যে ক্ষেত্রে কোনো অস্থায়ী সরকারি কর্মচারীকে মানসিক বা শারীরিক অসামর্থ্যরে
কারণে অদক্ষতা হেতু অবসর প্রদান করা হয়, সেইক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস এর
বিধি ৩২১ এর অধীনে অবসরকালীন সুবিধাদি পাবেন।
(২) রাষ্ট্রপতি কর্তৃক করুণাবশত প্রদত্ত কোনো
আদেশ ব্যতীত চাকুরি হতে অপসারিত বা বরখাস্তকৃত কোনো সরকারি কর্মচারী কোনো ক্ষতিপূরণ,
অবসর ভাতা, আনুতোষিক অথবা অংশপ্রদায়ক ভবিষ্য তহবিলে সরকারের চাঁদা হতে উদ্ভূত সুবিধাদি
পাবেন না।
পুনর্বহাল
বিধি (১৪):
(১)
বিধি ৫ এর উপ-বিধি (১) এর অনুচ্ছেদ (ক) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ অনুযায়ী ছুটিতে প্রেরিত
কোনো সরকারি কর্মচারীকে যদি বরখাস্ত, অপসারণ, নিম্নপদে পদাবনমিত বা বাধ্যতামূলক অবসর
প্রদান করা না হয়, তা হলে, ক্ষেত্রমত, তাকে চাকুরীতে পুনর্বহাল করা হবে, অথবা তাকে
তার পদমর্যাদায় আসীন বা সমপদ মর্যাদা প্রদান করা হবে এবং তাহার উক্ত ছুটিকাল পূর্ণ
বেতনে কর্তব্যকাল বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) সাময়িক বরখাস্তের পর পুনর্বহাল সংক্রান্ত
বিষয়াদি বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ, ইত্যাদিতে ন্যস্ত কর্মকর্তাগণের বিরুদ্ধে তদন্তের পদ্ধতি
বিধি (১৫):
(১)
যে সরকারি কর্মচারী প্রতি এই বিধিমালা প্রযোজ্য তার চাকুরী স্থানীয় বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষকে,
অতঃপর এই বিধিতে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ বলে উল্লিখিত, হাওলাত দেওয়া হলে, এই বিধিমালার
অধীন তাহার বিরুদ্ধে কার্যধারা সূচনা করিবার উদ্দেশ্যে কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা হাওলাত গ্রহীত
কর্তৃপক্ষের থাকবে: তবে শর্ত থাকে যে, হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ উক্ত সরকারি কর্মচারীর
চাকুরী হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে অতঃপর এই বিধিতে হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ
হিসাবে উল্লিখিত, যে পরিস্থিতিতে কার্যধারা শুরু করা হইয়াছে তাহা অবিলম্বে অবহিত করিবে।
(২) হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ হাওলাত হিসাবে গৃহীত
কোনো সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে কোনা অভিযোগের প্রাথমিক তদন্ত করিয়া বিভাগীয় কার্যক্রম
গ্রহণ করবার মতো পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে বলে মনে করলে নিজেরা বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ
না করে সমুদয় রেকর্ডপত্র ও তথ্য হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট এই বিধির অধীনে
বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ করিবার জন্য প্রেরণ করতে পারবে।
(৩) উপ-বিধি (২) এর অধীন সমুদয় রেকর্ডপত্র ও তথ্য
প্রাপ্তির পর হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ সামগ্রিক বিষয়টি বিবেচনা করিয়া বিভাগীয় কার্যক্রম
গ্রহণ করবার জন্য পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে বলে মনে করিলে হাওলাত হিসাবে প্রদত্ত সংশ্লিষ্ট
কর্মচারীর বিরুদ্ধে এই বিধির অধীনে বিভাগীয় কার্যক্রম গ্রহণ করবে এবং বিধি মোতাবেক
বিষয়টি নিষ্পত্তি করিবে।
(৪) উপ-বিধি (১) অনুসারে কোনো সরকারি কর্মচারীর
বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্তের ফলাফলের ভিত্তিতে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ মনে করে
যে, তার উপর দন্ড আরোপ করা উচিৎ তা হলে হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ হাওলাত প্রদানকারী
কর্তৃপক্ষের নিকট উক্ত মামলার সমুদয় রেকর্ডপ্রত্র প্রেরণ করবে।
(৫) উপ-বিধি (৪) এর অধীন সমুদয় রেকর্ডপ্রত্র প্রাপ্তির
পর হাওলাত প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ নিজে দন্ডদানের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ হলে যেইরূপ প্রয়োজন
মনে করবে সেইরূপ আদেশ প্রদান করতে পারবে অথবা, যদি নিজে কর্তৃপক্ষ না হন, তা হলে মামলাটি
দন্ডদানের যোগ্য কর্তৃপক্ষের নিকট প্রয়োজনীয় আদেশ দানের জন্য উপস্থাপন করিবে।
(৬) এই বিধির অধীনে কর্তৃপক্ষ হাওলাত গ্রহীতা কর্তৃপক্ষ
কর্তৃক প্রেরিত তদন্ত রেকর্ডের উপর অথবা তিনি যেইরূপ প্রয়োজন মনে করবে সেইরূপ অধিকতর
তদন্ত অনুষ্ঠানের পর আদেশ প্রদান করতে পারবে এবং এইরূপ আদেশ প্রদানের ক্ষেত্রে বিধি
৭ এর উপ-বিধি (৯) ও (১০) এর বিধানসমূহ অনুসরণ করতে হবে।
আদেশের বিরুদ্ধে আপিল
বিধি (১৬):
(১) কোনো সরকারি কর্মচারী এই উদ্দেশ্যে সরকারের
সাধারণ বা বিশেষ আদেশ দ্বারা নির্ধারিত কর্তৃপক্ষের নিকট, অথবা যে ক্ষেত্রে এইরূপ কোনো
কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত নাই, সেইক্ষেত্রে আদেশদানকারী কর্তৃপক্ষের পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের
নিকট, অথবা যে ক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের অধস্তন কোনো কর্তৃপক্ষ আদেশদান করেছেন,
সেইক্ষেত্রে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট, নিমবর্ণিত যে কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের
করতে পারবেন, যথা:
(ক) তার উপর যে কোনো দন্ড আরোপের আদেশের বিরুদ্ধে;
(খ) চুক্তি ভিত্তিতে নিযুক্ত হয়ে চুক্তির শর্তানুসারে
চাকুরীর অবসানের সময় পর্যন্ত একনাগারে ৫ (পাঁচ) বৎসরের অধিককাল চাকুরীতে নিয়োজিত থাকলে,
উক্ত ক্ষেত্রে চাকুরীর অবদান ঘটানোর আদেশের বিরুদ্ধে;
(গ) তাহার বেতন, ভাতাদি, পেনশন বা চাকুরীর অন্যান্য
শর্তাবলি যা চাকুরীর বিধি বা চুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, তার স্বার্থের প্রতিকূলে
পরিবর্তন, রদবদল বা অগ্রাহ্য করবার আদেশের বিরুদ্ধে; অথবা
(ঘ) চাকুরীর যে বিধি বা চুক্তি দ্বারা তার বেতন,
ভাতাদি, পেনশন বা চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলি নিয়ন্ত্রিত হয়, ইহার কোনো বিধানে তার স্বার্থের
প্রতিকূল ব্যাখ্যা সংবলিত আদেশের বিরুদ্ধে।
আপিল দায়েরের সময়সীমা
বিধি (১৭):
যে আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে, উক্ত আদেশ
সম্পর্কে আপিলকারী অবহিত হইবার তারিখের ৩ (তিন) মাসের মধ্যে আপিল দায়ের করা না হলে
এই বিধিমালার অধীনে কোনো আপিল গ্রহণ করা হবে না তবে শর্ত থাকে যে, যদি আপিল কর্তৃপক্ষ
সন্তুষ্ট হন যে, যথাসময়ে আপিলকারীর আপিল দায়ের করতে না পারিবার পর্যায় কারণ রয়েছে,
তা হলে আপিল কর্তৃপক্ষ উপরোল্লিখিত মেয়াদ অতিবাহিত হওয়া সত্তে¡ও পরবর্তী ৩ (তিন) মাসের
মধ্যে কোনো আপিল বিবেচনার জন্য গ্রহণ করিতে পারবে। এক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রমানাদি দাখিল
করতে হবে।
আপিল দায়েরের রীতি ও পদ্ধতি
বিধি (১৮):
(১) এই বিধিমালার অধীন আপিল দায়ের করতে হলে প্রত্যেক
ব্যক্তিকে পৃথকভাবে এবং স্বীয় নামে আপিল দায়ের করতে হইবে।
(২) উপ-বিধি (১) এর অধীন আপিল কর্তৃপক্ষকে সম্বোধন
করে দায়েরকৃত প্রতিটি আপিল আবেদন আপিলকারী কর্তৃক তার স্বপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ও যুক্তি
নির্ভর তর্থসমূহ অন্তর্ভুক্তিক্রমে স্বয়ংসম্পূর্ণরূপে দায়ের করতে হবে এবং ইহাতে কোনো
অসম্মানজনক বা অশোভন ভাষা ব্যবহার করা যাবে না।
(৩) প্রতিটি আপিল আবেদন আপিলকারী যে অফিসে কর্মরত
আছেন সেই অফিসের অফিস প্রধানের মাধ্যমে অথবা, তিনি চাকুরীরত না থাকিলে, সর্বশেষ যে
অফিসে চাকুরীরত ছিলেন সেই অফিসের অফিস প্রধানের মাধ্যমে এবং যে কর্তৃপক্ষের আদেশের
বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে, উক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দায়ের করতে হবে: তবে শর্ত থাকে
যে, আপিল আবেদনের একটি অগ্রিম কপি আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট সরাসরি দাখিল করা যাবে।
আপিল ও পরবর্তী করণীয়
আপনি বেসামরিক কর্মচারী কোনো কারনে চাকরিচ্যুত
হয়ে যদি সংক্ষুব্ধ হোন তাহলে প্রথমে আপিল করতে হবে।
সামরিক বাহিনীতে বেসামরিক কর্মচারী/কর্মকর্তাগণের ক্ষেত্রে
বিধিমালা ১৯৬১ অনুযায়ী
আপিল আবেদন করার নিয়মাবলী
বিধিমালা ১৯৬১ এর ১৭,
(১) উপবিধিতে বর্ণিত আছে যে, এই বিধিমালার আওতায়
যে কোনো ব্যক্তি কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে একটি মাত্র আপিল আবেদন করার অধিকারী হবেন,
(ক) ৮ নং বিধির আওতায় প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট যে কোনো
একটি শাস্তি।
তবে শর্ত থাকে যে, রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত
কোনো ব্যক্তি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জারিকৃত কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার অধিকার পাইবেন
না তবে তিনি সেই আদেশের পুন:বিবেচনার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
(২) (ক) প্রথম শ্রেণির একজন চাকুরে মনোনীত কর্তৃপক্ষের
আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতির নিকট আপিল করতে পারবেন।
(খ) দ্বিতীয় শ্রেণির একজন চাকুরে তার নিয়োগকারী
কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে সচিব কিংবা যুগ্ম সচিব বরাবরে আপিল করতে পারবেন। তবে সচিব
বা যুগ্ম সচিব তার নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ হলে তাকে রাষ্ট্রপতি বরাবরই আপিল করতে হবে।
(গ) দ্বিতীয় শ্রেণির (নন-গেজেটেড) অথবা তৃতয়ি
অথবা চতুর্থ শ্রেণির একজন চাকুরে মনোনীত কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের
কাছে আপিল করতে পারবেন অথবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের আদেশের বিরুদ্ধে ৬ নং বিধির ২ নং
উপবিধির আলোকে প্রজ্ঞাপন সূত্রে গঠিত সুনির্দিষ্ট চাকরি বিধি প্রনয়ণকারী কর্তৃপক্ষের
নিকট আপিল করতে পারবেন।
শর্ত থাকে যে, সশস্ত্র বাহিনী সদর দপ্তরে কর্মরত
কোনো ব্যক্তি (বেসামরিক) তার উপর এ ধরণের প্রদত্ত আদেশে যেখানে প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা
(বর্তমানে মহাপরিচালক) নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ সেই ক্ষেত্রে তার মূল আদেশের বিরুদ্ধে তিনি
সচিব কিংবা যুগ্ম সচিবের কাছে আপিল করতে পারবেন।
বিধি (১৯):
প্রত্যেক আগ্রহী আপিলকারী আলাদাভাবে নিজ নামে
আপিল দায়ের করতে পারবেন।
বিধি (২০):
এই
বিধির আওতায়কৃত আপিল যৌক্তিক এবং অসম্মানজনক বা অবাঞ্চিত ভাষা বিবর্জিত ও পূর্ণাঙ্গ
হতে হবে। যে কোনো আপিল দপ্তর প্রধানের মাধ্যমে জমা দিতে হবে যে দপ্তরে আবেদনকারী কাজ
করেছেন এবং করতেন এবং সেই কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যার আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হচ্ছে।
সমস্যা: আইনে বলা আছে, যে কোনো আপিল দপ্তর প্রধানের
মাধ্যমে জমা দিতে হবে যে দপ্তরে আবেদনকারী কাজ করেছেন এবং করতেন। দেখা যাচ্ছে, আপনি
যে দপ্তরে কাজ করতেন সেই দপ্তরেই অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে অর্থাৎ সেই দপ্তর প্রধান আপনাকে
লঘু দন্ড বা গুরু দন্ড দেয়ার সুপারিশ করে বিভাগীয় প্রধানের নিকট সুপারিশ নামা প্রেরণ
করার পরই আপনার চাকরিচ্যুত হলেন। আর আপনি যখন আপিল করবেন তখন কিন্তু সকলের বিরদ্ধে
কথাগুলো চলে যায়। আবার সেই দপ্তর প্রধানের মাধ্যমে আপিল আবেদন প্রেরণ করতে বলা হয়েছে।
দেখা যায়, আপিল আবেদন দপ্তর প্রধানের নিকট প্রেরন করলে তিনি যখন দেখেন যে, কথাগুলো
তার বিরুদ্ধে তখন সেই আপিল আবেদন তার দপ্তরেই পড়ে থাকে। সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষ আপিল আবেদন
আপিল কর্তৃপক্ষের নিকট সহজে প্রেরণ না করে সময় লস করেন।
নিয়ম হচ্ছে: এক সেট
আপিল আবেদন দপ্তর প্রধানের নিকট প্রেরণ করতে হবে আর এক সেট সরাসরি আপিল কর্তৃপক্ষের
নিকট প্রেরণ করতে হবে।
আপিল আবেদন করার সময় সীমা: আপনি
যে তারিখে চাকরিচ্যুত হয়েছেন সেই তারিখ থেকে ০৬ মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে। উক্ত আইনটি
সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ তে উল্লেখ আছে কিন্তু সংশোধিত ২০১৮
তে উক্ত সময় সীমা ০৩ মাস করা হয়েছে। আর বলা হয়েছে যে, উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে আর
আপিল কর্তৃপক্ষ সন্তুষ্ট হলে পরবর্তী তিন মাস তিনি বিবেচনা করতে পারেন।
আপিল করার পরবর্তী করণীয় কি? না জানলে সব ব্যর্থ।
আপিল করার পর দেখা যায়, আপিল
কর্তৃপক্ষের কোনো সাড়া শব্দ নেই। বছরের পর বছর তার দপ্তরে আপিল আবেদন পড়ে থেকে কাগজের
পাতাগুলো উইপোকায় নষ্ট হয়ে গেছে। আপনি অবহেলিত। কেউ আর আপনার কথা শোনে না। যাই হোক
দশ পনেরো বছর পর রায় হলো, হয় চাকরি ফিরে পেয়েছেন না হয় আপিল আবেদন খারিজ বা নিষ্পত্তি
করে দিয়েছে।
আপিলে যদি চাকরি ফিরে না পান
তখন আপনার সব স্বপ্ন নষ্ট। পাগলের মতো এর কাছে ওর কাছে গিয়ে পরমর্শ চাচ্ছেন কেউ সঠিক
পরামর্শ দিতে পারছে না। শেষ পর্যন্ত যেতে হয় কোনো উকিলের কাছে।
আপনি যখন কোনো উকিলের সাথে যোগাযোগ
করবেন তথন তিনি বলবেন হাইকোর্টে রিট মামলা করেন। রিট মামলা করলে বিচারক বলবেন আপনার
এই মামলা আগে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে করতে হবে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে গেলে বিচারক বলবেন
এতো বছর পর কেনো এলেন। এভাবে দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে করতে হার্ট এ্যাটাক তারপর মৃত্যু।
আসল নিয়ম: যে নিয়মটা বাংলাদেশের
শতকরা ৯৫ ভাগ এ্যাডভোকেটও জানেন না। আর বেসামরিক লোকজনের শতকরা ৯৮ ভাগ না জানার কারনে
সব হারিয়ে রাস্তা রাস্তায় পাগল হয়ে ঘুরে বেড়ায়।
আসল কথায় আসি। আপনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের
নিকট আপিল আবেদন করার পর দুই মাসের মধ্যে যদি কোনো উত্তর না আসে, তার পরের ছয় মাসের
মধ্যে তথা চাকরিচ্যুত হওয়ার তারিখ থেকে মোট ০৮ মাসের মধ্যে আপনাকে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে
মামলা দায়ের করতে হবে। প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের সর্বশেষ সংশোধনীতে বলা হয়েছে যে, আপিল
কর্তৃপক্ষ উত্তর প্রদান করুক আর নাই করুক ০৮ মাসের মধ্যে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা
করতে হবে।
দুই মসের মধ্যে আপিল করার পরে
আপিল চলাকালীন ০৮ মাসের মধ্যে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে যে মামলা করতে হয় এই নিয়মটাই ৯৫% উকিলগণ জানেন না।
তারা শুধুই বলেন হাইকোর্টে রিট করেন।
সামরিক ও আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের তদন্ত ও করণীয়
সামরিক বাহিনী তথা সেনা, নেী ও বিমান এবং আধাসামরিক
বাহিনী সোয়াট (বাংলাদেশ), বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ), বাংলাদেশ কোষ্ট গার্ড,
বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স ও বাংলাদেশ আনসার এর কোনো সদস্য অভিযুক্ত হলে তাদের ক্ষেত্রেও
উপরোক্ত তদন্তের পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করা হয়। তবে সুশৃংখল ও স্পর্শকাতর সামরিক বাহিনীতে
কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উত্থাপিত হলে অভিযুক্তকে কড়া নজরদারিতে রেখে তদন্তের কার্যক্রম
পরিচালনা করা হয়। এমবিএমএল (ম্যানুয়াল বাংলাদেশ মিলিটারি ল) অনুযায়ী শাস্তি প্রদান
করা হয়। প্রথমে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করা হয়। সত্যতা
প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করা
হয়। শাস্তির ধরণ অনুযায়ী সাত দিন থেকে উননব্বই দিন পর্যন্ত সৈনিকদের ক্ষেত্রে কোয়ার্টার
গার্ড এ রাখা হয়। তবে শাস্তির মেয়াদ নব্বই দিন উর্দ্ধ হলে চাকরিতে সে আর বহাল থাকবে
না। অনেক ক্ষেত্রে শাস্তির ধরণ অনুযায়ী সিভিল জেলও হতে পারে।
কোথায় আপিল করবেন
সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রত্যেক সদর দপ্তরে
ওয়েলফেয়ার ডাইরেক্টরেট নামে একটি দপ্তর আছে। আপনাকে যে শাস্তিই দেয়া হোক না কেনো এমনকি
চাকরিচ্যুত করলেও আপনি উক্ত দপ্তরে তিন মাসের মধ্যে আপিল করবেন। এমনকি জেল দিলেও আপনি
জেল থেকে বের হয়ে আপিল করতে পারবেন। দেখা যায়,
চাকরিচ্যুত হওয়ার পর অনেকে ভয়ে আপিল করেন না। অথচ ঐ দপ্তরটি গঠন করা হয়েছে সৈনিকদের
কল্যাণমূলক কাজ করার জন্যে। এখানে ভয়ের কিছু নেই। আপনি যদি সৎ হয়ে থাকেন বা আপনার বিরুদ্ধে
আনীত অভিযোগ যদি মিথ্যে হয়ে থাকে তাহলে আপনি সশরীরে (সেনাবাহিনীর হলে) সেনাসদর দপ্তরে
উপস্থিত হয়ে ওয়েলফেয়ার ডাইরেক্টরেট এ আপিল করবেন।
বাংলাদেশ পুলিশের ক্ষেত্রে করণীয়
বাংলাদেশ পুলিশ একটি বেসামরিক বাহিনী। এই বাহিণীর কোনো সদস্য অভিযুক্ত
হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রথমে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আপিল করবেন পরে নিজ এলাকাধীন প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করবেন।
প্রশাসনিক ট্রাইবুনালগুলো কোথায় অবস্থিত
প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়েছে চাকরিজীবিদের সকল সমস্যা সমাধান করার জন্যে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য কিছু গণপ্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ, শর্তাবলী, পদোন্নতি, সরকারি বাসা, বেতন-ভাতা ও পেনশন সম্পর্কিত বিষয়গুলো প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালে বিচারযোগ্য। এসব বিষয় বিচারের জন্য সারা দেশে মোট ৭টি প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে।
আপনার শেষ কর্মস্থল যেখানে সেই ট্রাইবুনালে মামলা করবেন
প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালের নাম |
অধিক্ষেত্র |
১। ঢাকা-১ নম্বর |
ঢাকা,
নারায়নগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজিপুর ও নরসিংদী।
|
২। ঢাকা-২ নম্বর |
ফরিদপুর,
গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও রাজবাড়ী।
|
৩। ঢাকা-৩ নম্বর |
ময়মনসিংহ,
কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, টাঙ্গাইল, জামালপুর ও শেরপুর।
|
৪। চট্টগ্রাম |
চট্টগ্রাম,
কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, চাঁদপুর, বি-বাড়িয়া, সিলেট, মৌলভীবাজার,
হবিগঞ্জ, ও সুনামগঞ্জ।
|
৫। খুলনা |
খুলনা,
বাগেরহাট, সাতক্ষিরা, যশোর, মাগুড়া, ঝিনাইদহ, নড়াইল, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ও মেহেরপুর।
|
৬। বরিশাল |
বরিশাল,
পিরোজপুর, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা।
|
৭। বগুড়া |
বগুড়া,
জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাট,
গাইবান্ধা, নীলফামারী, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোর। |
প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগ
ঢাকায় (আব্দুল গণি রোড, ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের
বিপরীত পার্শ্বে অবস্থিত) একটি মাত্র প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগ রয়েছে। প্রশাসনিক
ট্রাইবুনালে মামলা যদি খারিজ হয়ে যায় বা মামলায় হেরে গেলে সকল নথিপত্র সংগ্রহ করে প্রশাসনিক
ট্রাইবুনাল আপিল বিভাগে আপিল করতে হবে। আপনার সকল প্রমানাদি সঠিক থাকলে এখানে চাকরি
পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই হাল ছেড়ে দিবেন না।
চাকরিচ্যুত হয়ে নিঃস্ব অবস্থা থেকে উত্তরণের উপায়
যারা চাকরিচ্যুত হোন তাদের মধ্যে অনেকেই নিঃস্ব
অবস্থায় কোর্টের বারান্দায় ঘুরতে থাকেন। বাড়ির জমি, স্ত্রীর গহনাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র
বিক্রি করে মামলা চালাতে দেখা যায়। আপনাদের মধ্যে যারা ইয়ং যাদের চাকরি করার বয়স বা
শক্তি সামর্থ আছে তারা মামলা দায়ের করে কেউ ঘরে বসে থাকবেন না। এলাকায় থাকলে একটু লজ্জা
লজ্জা লাগবে তাই বাড়িতে না থেকে বেড়িয়ে পড়ুন কর্মের সন্ধানে। কোনো কোম্পানিতে যেকোনো
একটি পদে চাকরি করুন আর সেই টাকা দিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি মামলার খরচ চালান। চাকরি
যদি ফিরে পান তাহলে তো ভালো আর যদি না পান তাহলে কর্ম তো একটা আছেই। সমস্যা নেই।
উল্লেখিত বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্যে যে কোনো
সময় ফোন করতে পারেন। আমি আছি সর্বক্ষণ অসহায়দের পাশে।
PENMAN
Md. Izabul Alam
Gulshan-1, Dhaka, Bangladesh.
01716508708, izabulalam@gmail.com
আমি যদি কখনো ব্যস্ত থাকি তাহলে আমার Whatsapp Number
(01917525598) এ সংক্ষিপ্তভাবে লিখে দিবেন
আমি পরে জানাবো।
আরো সহযোগীতা পেতে যোগাযোগ করুন
ADIUL ISLAM
ADVOCATE, JUDGE COURT, DHAKA.
LABOUR COURT & ADMINISTRATIVE
TRIBUNAL, DHAKA.
ACCREDITED INCOME TAX PRACTITIONER.
LL.B (HON’S) AIUB, LL.M (JNU).
MOBILE:
01755009073 & 01642999563.
সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট, প্রশাসনিক ট্রাইবুনালসহ যেকোনো আইনী বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শদাতা -
ব্যারিস্টার হাফিজ খান, (01859313939)
সিএলপি, গুলশান-১, ঢাকা।
আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই সুন্দরভাবে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দেয়ার জন্য।
ReplyDelete