Friday, May 2, 2025

বেসরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিকার পাওয়ার উপায়। Md. Izabul Alam

বেসরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিকার পাওয়ার উপায়

 

                
লেখক মোঃ ইজাবুল আলম

সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে লক্ষ লক্ষ লোক বিভিন্ন পদে চাকরি করছে। কিন্তু এতো লোকের মধ্যে ৯৫% চাকরিজীবি চাকরি বিধিমালা সম্পর্কে অবগত নয়। অনেকেই কর্মচারী আচরণ বিধি না জানা কিংবা না মানার  কারনে কর্মজীবনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বা চাকরি থেকে অপসারিত বা বরখাস্ত হচ্ছেন। সরকারি চাকরিতে একটা সুনির্দষ্ট ধারাবাহিকতা আছে। তারা “সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা” মেনে চলেন।  কাউকে চাকরি থেকে বাদ দিতে চাইলে তার পিছনে কয়েক কেজি কাগজ ব্যয় করতে হয়। এরপর ক্ষতিগ্রস্ত চাকরিজীবি নিয়োগকারী কর্মকর্তা বরাবর আপিল করার সুযোগ পান এবং পরবর্তীতে প্রশাসনিক ট্রাইবুনালে মামলা করে চাকরি ফিরেও পান। কিন্তু বেসরকারি চাকরিতে সরকারি সব আইনকানুন তৈরী করা থাকলেও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষের খামখেয়ালীপনায়  শ্রমিক/কর্মচারী/কর্মকর্তাগণ প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকটা মালিকপক্ষের দয়ার উপর নির্ভর করে চাকরি করতে হয়। 

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদবী ধারী যারাই থাকুক না কেনো সবাইকেই শ্রম আইন অনুসারে “শ্রমিক” হিসেবে গণ্য করা হয়। একটি কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান কোম্পানি আইন ১৯৯৪, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ সহ অন্যান্য আইন  এবং সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো বেসরকারি নিরাপত্তা সেবা আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০০৭ মেনে চলে। এইসব আইনে মালিক ও শ্রমিক/কর্মচারী উভয় পক্ষের অধিকার নিয়ে আইন তৈরী করা আছে। তবে আইনগুলো সম্পর্কে সরকারি বেসরকারি সকলকেই যার যে আইন জানতে হবে। আইনগুলো নিয়ে স্টাডি করতে হবে। কখন কার ভাগ্যে দূর্ঘটনা চলে আসবে বলা যায় না। আইন না জানার কারনে দেখা যায়, অনেকেই কর্মস্থলে উল্টা পাল্টা কাজ করে বসেন । পরবর্তীতে উপযুক্ত প্রমান না পাওয়ার কারণে তিনি সুযোগ সুবিধা ছাড়াই বিদায় নেন। আজকের এই লেখাটা শুধু বেসরকারি চাকরিজীবিদের নিয়ে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এ ২১টি অধ্যায় ও ৩৫৪টি ধারা আছে। এতোগুলো ধারা পড়ে মনে রাখা মুশকিল। তাই চাকরিতে ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা চাকরি ফিরে পেতে বা বঞ্চিত সুযোগ সুবিধা আদায়ে যে ধারাগুলো বিশেষ প্রয়োজন শুধু সেগুলো  এখানে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে বঞ্চিত সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য বিভিন্ন কৌশল বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথমত বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ধারাগুলো আগে পড়ুন। এরপর নিচে গিয়ে বঞ্চিত সুযোগ সুবিধা আদায়ের জন্য বিভিন্ন কৌশল বা পদ্ধতিগুলো পড়বেন।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-ধারা ২০,ছাঁটাইঃ

(১) কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারণে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে।

 (২) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অনূ্যন এক বৎসর চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে-

(ক) তাহার ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে;

(খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধিকে, যদি থাকে, দিতে হইবে; এবং

(গ) তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী বা গ্রাচু্যইটি যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিতে হইবে।

(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ১৬(৭) এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (২) (ক) এর উল্লিখিত কোন নোটিশের প্রয়োজন হইবে না, তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিককে উপ-ধারা (২) (গ) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচ্যুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরোও পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।

(৪) যে ক্ষেত্রে কোন বিশেষ শ্রেণীর শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে, মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে এতদসংক্রান্ত কোন চুক্তির অবর্তমানে, মালিক উক্ত শ্রেণীর শ্রমিকগণের মধ্যে সর্বশেষে নিযুক্ত শ্রমিককে ছাঁটাই করিবেন।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

(এই অধ্যায়ের ধারা ২৩ খুব ভালোভাবে মুখস্থ রাখতে হবে। কারণ কাউকে চাকরিচ্যুত করা হলে এখান থেকেই ধারা উল্লেখ করে দেয়া হয়।)

ধারা ২৩-অসদাচরণ এবং দণ্ড-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তিঃ

 (১) এই আইনে লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ এবং চাকুরীর অবসান সম্পর্কে অন্যত্র যাহা কিছুই বলা হউক না কেন, কোন শ্রমিককে বিনা নোটিশে বা নোটিশের পরিবর্তে বিনা মজুরীতে চাকুরী হইতে বরখাস্ত করা যাইবে, যদি তিনি-

(ক) কোন ফৌজদারী অপরাধের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত হন; অথবা

(খ) ধারা ২৪ এর অধীন অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হন।

(২) অসদাচরণের অপরাধে দোষী সাব্যস্ত কোন শ্রমিককে উপ-ধারা (১) এর অধীন চাকুরী হইতে বরখাস্তের পরিবর্তে, বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে, নিম্নলিখিত যে কোন শাস্তি প্রদান করা যাইবে, যথাঃ-

(ক/a) অপসারণ;

(খ/b) নীচের পদে, গ্রেডে বা বেতন স্কেলে অনধিক এক বৎসর পর্যন্ত আনয়ন;

(গ/c) অনধিক এক বৎসরের জন্য পদোন্নতি বন্ধ;

(ঘ/d) অনধিক এক বৎসরের জন্য মজুরী বৃদ্ধি বন্ধ;

(ঙ/e) জরিমানা;

(চ/f) অনধিক সাত দিন পর্যন্ত বিনা মজুরীতে বা বিনা খোরাকীতে সাময়িক বরখাস্ত;

(ছ/h) ভর্ৎসনা ও সতর্কীকরণ।

(৩) উপ-ধারা (২) (ক) এর অধীন অপসারিত কোন শ্রমিককে, যদি তাহার অবিচ্ছিন্ন চাকুরীর মেয়াদ অন্যুন এক বৎসর হয়, মালিক ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রত্যেক সম্পুর্ণ চাকুরী বৎসরের জন্য ১৫ দিনের মজুরী প্রদান করিবেন:

তবে শর্ত থাকে যে, কোন শ্রমিককে উপ-ধারা (৪) (খ) ও (ছ) এর অধীন অসদাচরণের জন্য বরখাস্ত করা হইলে তিনি কোন ক্ষতিপূরণ পাইবেন না। তবে এইরূপ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিক তাহার অন্যান্য আইনানুগ পাওনাদি যথা নিয়মে পাইবেন।

(৪) নিম্নলিখিত কাজ করা অসদাচরণ বলিয়া গণ্য হইবে, যথাঃ-

(ক/a) উপরস্থের কোন আইনসংগত বা যুক্তিসংগত আদেশ মানার ক্ষেত্রে এককভাবে বা অন্যের সঙ্গে সংঘবদ্ধ হইয়া ইচ্ছাকৃতভাবে অবাধ্যতা;

(খ/b) মালিকের ব্যবসা বা সম্পত্তি সম্পর্কে চুরি, আত্মসাৎ, প্রতারণা বা অসাধুতা;

(গ/c) মালিকের অধীন তাঁহার বা অন্য কোন শ্রমিকের চাকুরী সংক্রান্ত ব্যাপারে ঘুষ গ্রহণ বা প্রদান;

(ঘ/d) বিনা ছুটিতে অভ্যাসগত অনুপস্থিতি অথবা ছুটি না নিয়া এক সঙ্গে দশ দিনের অধিক সময় অনুপস্থিতি;

(ঙ/e) অভ্যাসগত বিলম্বে উপস্থিতি;

(চ/f) প্রতিষ্ঠানে প্রযোজ্য কোন আইন, বিধি বা প্রবিধানের অভ্যাসগত লঙ্ঘন;

(ছ/g) প্রতিষ্ঠানে উচ্ছৃংখলতা, দাংগা-হাংগামা, অগ্নিসংযোগ বা ভাংচুর;

(জ/h) কাজে-কর্মে অভ্যাসগত গাফিলতি;

(ঝ/i) প্রধান পরিদর্শক কর্তৃক অনুমোদিত চাকুরী সংক্রান্ত, শৃঙ্খলা বা আচরণসহ, যে কোন বিধির অভ্যাসগত লঙ্ঘন;

(ঞ/j) মালিকের অফিসিয়াল রেকর্ডের রদবদল, জালকরণ, অন্যায় পরিবর্তন, উহার ক্ষতিকরণ বা উহা হারাইয়া ফেলা।

(৫) উপ-ধারা (১) (ক) এর অধীন বরখাস্তকৃত কোন শ্রমিক যদি আপীলে খালাস পান, তাহা হইলে তাহাকে তাহার পূর্বতন পদে বহাল করিতে হইবে, অথবা নূতন কোন উপযুক্ত পদে তাহাকে নিয়োগ করিতে হইবে, এবং যদি ইহার কোনটিই সম্ভব না হয়, তাহা হইলে তাহাকে ডিসচার্জকৃত কোন শ্রমিককে প্রদেয় ক্ষতিপূরণের সমান হারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করিতে হইবে, তবে বরখাস্ত হওয়ার কারণে ইতিমধ্যে প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের টাকা ইহা হইতে বাদ যাইবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৪, শাস্তির পদ্ধতিঃ

(১) ধারা ২৩ এর অধীন কোন শ্রমিকের বিরুদ্ধে শাস্তির আদেশ প্রদান করা যাইবে না, যদি না-

(ক) তাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিতভাবে করা হয়;

(খ) অভিযোগের একটি কপি তাহাকে দেওয়া হয় এবং ইহার জবাব দেওয়ার জন্য অন্ততঃ সাতদিন সময় দেওয়া হয়;

(গ) তাহাকে শুনানীর সুযোগ দেওয়া হয়;

(ঘ) মালিক বা শ্রমিকের সম-সংখ্যক প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্তের পর তাহাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত তদন্ত ষাট দিনের মধ্যে শেষ করিতে হইবে;

(ঙ) মালিক বা ব্যবস্থাপক বরখাস্তের আদেশ অনুমোদন করেন।

(২) অসদাচরণের অভিযোগে অভিযুক্ত কোন শ্রমিককে তদন্ত সাপেক্ষে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা যাইবে, এবং যদি না বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন থাকে, এই সাময়িক বরখাস্তের মোট মেয়াদ ষাট দিনের অধিক হইবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, উক্তরূপ সাময়িক বরখাস্তকালে মালিক তাহাকে খোরাকী ভাতা প্রদান করিবেন এবং তিনি অন্যান্য ভাতা পূর্ণহারে প্রাপ্য হইবেন ।

(৩) সাময়িক বরখাস্তের কোন আদেশ লিখিতভাবে হইবে এবং ইহা শ্রমিককে প্রদানের সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হইবে।

(৪) কোন তদন্তে অভিযুক্ত শ্রমিককে, তাহার প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত এবং তৎকর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তি সহায়তা করিতে পারিবেন।

(৫) যদি কোন তদন্তে কোন পক্ষ মৌখিক সাক্ষী প্রদান করেন, তাহা হইলে যাহার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য প্রদান করা হইবে তিনি সাক্ষীকে জেরা করিতে পারিবেন।

(৬) যদি তদন্তে কোন শ্রমিককে দোষী পাওয়া যায় এবং তাহাকে ধারা ২৩(১) এর অধীন শাস্তি প্রদান করা হয়, তাহা হইলে তিনি তাহার সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ের জন্য কোন মজুরী পাইবেন না, তবে উক্ত সময়ের জন্য তাহার খোরাকী ভাতা প্রাপ্য থাকিবে।

(৭) যদি তদন্তে কোন শ্রমিকের অপরাধ প্রমাণিত না হয়, তাহা হইলে তিনি সাময়িক বরখাস্তকালীন সময়ে কর্মরত ছিলেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং ঐ সময়ের জন্য তাহার, খোরাকী ভাতা সমন্বয়সহ, মজুরী প্রদেয় হইবে।

(৮) শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে, শাস্তির আদেশের একটি কপি সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে দিতে হইবে।

(৯) যদি কোন শ্রমিক মালিক কর্তৃক প্রেরিত কোন নোটিশ, চিঠি, অভিযোগনামা, আদেশ বা অন্য কোন কাগজপত্র গ্রহণ করিতে অস্বীকার করেন, তাহা হইলে উহা তাহাকে প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া বুঝিতে হইবে যদি উহার একটি কপি নোটিশ বোর্ডে প্রদর্শিত হয় এবং আরেকটি কপি মালিকের নথিপত্র হইতে প্রাপ্ত শ্রমিকের ঠিকানায় রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করা হয়।

(১০) কোন শাস্তি প্রদানের ব্যাপারে মালিক সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের পূর্বতন নথিপত্র, অপরাধের গুরুত্ব, চাকুরীকালীন কৃতিত্ব ও অবদান এবং বিদ্যমান অন্য কোন বিশেষ অবস্থা বিবেচনায় আনিবেন।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৫, জরিমানা সম্পর্কে বিশেষ বিধানঃ

(১) কোন মজুরী মেয়াদে প্রদেয় মজুরীর এক দশমাংশের অধিক পরিমাণ অর্থ কোন শ্রমিককে জরিমানা করা যাইবে না।

(২) পনের বৎসরের কম বয়স্ক কোন শ্রমিকের উপর জরিমানা আরোপ করা যাইবে না।

(৩) কোন শ্রমিকের উপর আরোপিত জরিমানা কিস্তি ভিত্তিতে বা উহা আরোপের তারিখ হইতে ষাট দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর আদায় করা যাইবে ।

(৪) কোন জরিমানা, যে অপরাধের জন্য আরোপিত হইয়াছে সে অপরাধ সংঘটনের তারিখেই উহা আরোপিত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(৫) সকল জরিমানা এবং উহার আদায় বিধি দ্বারা নির্ধারিত একটি রেজিস্টারে মালিক কর্তৃক লিপিবদ্ধ করা হইবে, এবং আদায়কৃত জরিমানা কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত শ্রমিকগণের কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা যাইবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৬, বরখাস্ত, ইত্যাদি ব্যতীত অন্যভাবে মালিক কতৃর্ক শ্রমিকের চাকুরীর অবসানঃ

(১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-

(ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের তেগত্রে, একশত বিশ দিনের,

(খ) অন্য শ্রমিকের তেগত্রে, ষাট দিনের, লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন৷

(২) এই অধ্যায়ের অন্যত্র বিধৃত কোন পন্থা ছাড়াও মালিক-

(ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে, ত্রিশ দিনের,

(খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে, চৌদ্দ দিনের,

লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া কোন অস্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে পারিবেন, যদি না এই অবসান যে অস্থায়ী কাজ সম্পাদনের জন্য শ্রমিককে নিযুক্ত করা হইয়াছে উহা সম্পূর্ণ হওয়া, বন্ধ হওয়া, বিলুপ্ত হওয়া বা পরিত্যক্ত হওয়ার কারণে হয়৷

(৩) যে ক্ষেত্রে মালিক বিনা নোটিশে কোন শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করিতে চাহেন সে ক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন, প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন৷

(৪) যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিকের চাকুরীর অবসান করা হয় সেক্ষেত্রে, মালিক শ্রমিককে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বত্সরের চাকুরীর জন্য ক্ষতিপূরণ হিসাবে ত্রিশ দিনের মজুরী, অথবা গ্রাচ্যুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন এবং এই ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৭, শ্রমিক কর্তৃক চাকুরীর অবসানঃ

(১) কোন স্থায়ী শ্রমিক মালিককে ষাট দিনের লিখিত নোটিশ প্রদান করিয়া তাহার চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন৷

(২) কোন অস্থায়ী শ্রমিক-

(ক) মাসিক মজুরীর ভিত্তিতে নিয়োজিত শ্রমিকের ক্ষেত্রে, ত্রিশ দিনের,

(খ) অন্য শ্রমিকের ক্ষেত্রে, চৌদ্দ দিনের,

লিখিত নোটিশ মালিকের নিকট প্রদান করিয়া তাহার চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে পারিবেন৷

(৩) যে ক্ষেত্রে শ্রমিক বিনা নোটিশে চাকুরী হইতে ইস্তফা দিতে চাহেন সে ক্ষেত্রে, তিনি উপ-ধারা (১) অথবা (২) এর অধীন প্রদেয় নোটিশের পরিবর্তে নোটিশ মেয়াদের জন্য মজুরীর সমপরিমাণ অর্থ মালিককে প্রদান করিয়া ইহা করিতে পারিবেন৷

(৩ক) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন শ্রমিক বিনা নোটিশে অথবা বিনা অনুমতিতে ১০ দিনের অধিক কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকিলে মালিক উক্ত শ্রমিককে ১০ দিনের সময় প্রদান করিয়া এই সম্পর্কে ব্যাখ্যা প্রদান করিতে এবং চাকুরীতে পুনরায় যোগদানের জন্য নোটিশ প্রদান করিবেন এবং এইরূপ ক্ষেত্রে উক্ত শ্রমিক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা প্রদান বা চাকুরীতে যোগদান না করিলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে তাহার আত্নপক্ষ সমর্থনের জন্য আরো ৭দিন সময় প্রদান করিবেন। তাহাতেও যদি সংশ্লিষ্ট শ্রমিক চাকুরীতে যোগদান অথবা আত্নপক্ষ সমর্থন না করেন তবে, উক্ত শ্রমিক অনুপস্থিতির দিন হইতে [চাকুরি হইতে ইস্তফা দিয়াছেন] বলিয়া গণ্য হইবেন।

(৪) যে ক্ষেত্রে এই ধারার অধীন কোন স্থায়ী শ্রমিক চাকুরী হইতে ইস্তফা দেন সে ক্ষেত্রে, মালিক উক্ত শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ হিসাবে তাহার প্রত্যেক সম্পূর্ণ বত্সরের চাকুরীর জন্য-

(ক) যদি তিনি পাঁচ বত্সর বা তদূর্ধ্ব, কিন্তু দশ বত্সরের কম মেয়াদে অবিচ্ছিন্নভাবে মালিকের অধীন চাকুরী করিয়া থাকেন তাহা হইলে, চৌদ্দ দিনের মজুরী;

(খ) যদি তিনি দশ বত্সর বা তদূর্ধ্ব সময় মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে চাকুরী করিয়া থাকেন তাহা হইলে, ত্রিশ দিনের মজুরী;

অথবা গ্রাচ্যুইটি, যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিবেন, এবং ক্ষতিপূরণ এই আইনের অধীন শ্রমিককে প্রদেয় অন্যান্য সুবিধার অতিরিক্ত হইবে৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৮, শ্রমিকের অবসর গ্রহণঃ

(১) এ অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেন, কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিকের বয়স ৬০ (ষাট) বত্সর পূর্ণ হইলে তিনি চাকুরী হইতে স্বাভাবিক অবসর গ্রহণ করিবেন৷

(২) এ ধারার উদ্দেশ্যে বয়স যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের সার্ভিস বইয়ে লিপিবদ্ধ জন্ম তারিখ উপযুক্ত প্রমাণ হিসাবে গণ্য হইবে৷

(৩) ধারা ২৬(৪) এর বিধান অনুসারে কিংবা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব চাকুরী বিধি অনুযায়ী অবসর গ্রহণকারী শ্রমিকের প্রাপ্য পাওনাদি পরিশোধ করিতে হইবে :

তবে শর্ত থাকে যে, এই উপ-ধারায় যাহা কিছু থাকুক না কেন, চা-শিল্প শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তাহাদের জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধাসহ প্রচলিত অন্যান্য সুবিধাদি প্রযোজ্য হইবে।

(৪) অবসর গ্রহণকারী কোন শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ উপযুক্ত মনে করিলে পরবর্তীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিতে পারিবেন৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ অনুযায়ী

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ২৯, ভবিষ্য তহবিল পরিশোধঃ

যদি কোন শ্রমিক কোন ভবিষ্য তহবিলের সদস্য হন এবং তহবিলের বিধি অনুযায়ী তিনি মালিকের চাঁদাসহ উক্ত তহবিল হইতে কোন সুবিধা প্রাপ্য হন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অবসর গ্রহণ,  অপসারণ, চাকুরির অবসান হওয়া বা মৃত্যুজনিত] কারণে উক্ত সুবিধা হইতে তাহাকে বঞ্চিত করা যাইবে না৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ৩০, শ্রমিকের চূড়ান্ত পাওনা পরিশোধের মেয়াদঃ

অবসর, ডিসচার্জ, ছাঁটাই, বরখাস্ত এবং চাকুরীর অবসান ইত্যাদি যে কোন কারণে শ্রমিকের চাকুরীর ছেদ ঘটার পরবর্তী সর্বোচ্চ ত্রিশ কর্ম দিবসের মধ্যে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ কর্তৃক উক্ত শ্রমিকের প্রাপ্য সকল পাওনা পরিশোধ করিতে হইবে৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ৩১, চাকুরীর প্রত্যয়ন পত্রঃ

সাময়িক ও বদলী শ্রমিক ব্যতীত, অন্য কোন শ্রমিক তাহার ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ, অবসর গ্রহণ বা চাকুরীর অবসানের সময় মালিকের নিকট হইতে চাকুরী সংক্রান্ত একটি প্রত্যয়নপত্র পাইবার অধিকারী হইবেন৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

দ্বিতীয় অধ্যায়

ধারা ৩৩, অভিযোগ পদ্ধতিঃ

(১) লে-অফ, ছাঁটাই, ডিসচার্জ, বরখাস্ত, অপসারণ অথবা অন্য যে কোন কারণে চাকুরীর অবসান হইয়াছে এরূপ শ্রমিকসহ যে কোন শ্রমিকের, এই অধ্যায়ের অধীন কোন বিষয় সম্পর্কে যদি কোন অভিযোগ থাকে এবং যদি তিনি তত্সম্পর্কে এই ধারার অধীন প্রতিকার পাইতে ইচ্ছুক হন তাহা হইলে তিনি, অভিযোগের কারণ অবহিত হওয়ার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অভিযোগটি লিখিত আকারে রেজিস্ট্রি ডাকযোগে মালিকের নিকট প্রেরণ করিবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি সরাসরি গ্রহণ করিয়া লিখিতভাবে প্রাপ্তি স্বীকার করেন, সেই ক্ষেত্রে উক্ত অভিযোগটি রেজিিস্ট্র ডাকযোগে না পাঠাইলেও চলিবে।

(২) মালিক অভিযোগ প্রাপ্তির ত্রিশ দিনের মধ্যে অভিযোগ সম্পর্কে তদন্ত করিবেন এবং সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে শুনানীর সুযোগ দিয়া তত্সম্পর্কে তাহার সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে শ্রমিককে জানাইবেন।

(৩) যদি মালিক উপ-ধারা (২) এর অধীন কোন সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হন, অথবা সংশ্লিষ্ট শ্রমিক যদি উক্তরূপ সিদ্ধান্তে অসন্তষ্ট হন, তাহা হইলে তিনি উপ-ধারা (২) এ উল্লিখিত সময় অতিক্রান্ত হওয়ার তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে অথবা, ক্ষেত্রমত, মালিকের সিদ্ধান্তের তারিখ হইতে ত্রিশ দিনের মধ্যে শ্রম আদালতে লিখিতভাবে অভিযোগ পেশ করিতে পারিবেন৷

(৪) শ্রম আদালত অভিযোগ প্রাপ্তির পর উভয় পক্ষকে নোটিশ প্রদান করিয়া অভিযোগটি সম্পর্কে তাহাদের বক্তব্য শ্রবণ করিবে এবং উহার বিবেচনায় মামলার অবস্থাধীনে যেরূপ আদেশ দেওয়া ন্যায়সঙ্গত সেরূপ আদেশ প্রদান করিবে৷

(৫) উপ-ধারা (৪) এর অধীন প্রদত্ত কোন আদেশ দ্বারা আদালত, অন্যান্য প্রতিকারের মধ্যে, অভিযোগকারীকে, বকেয়া মজুরীসহ বা ছাড়া, তাহার চাকুরীতে পুনর্বহাল করার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং কোন বরখাস্ত, অপসারণ বা ডিসচার্জের আদেশকে ধারা ২৩(২) এ উল্লিখিত কোন লঘুদণ্ডে পরিবর্তিত করিতে পারিবে৷

(৬) শ্রম আদালতের কোন আদেশ দ্বারা সংতগুব্ধ কোন ব্যক্তি আদেশের ত্রিশ দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালের নিকট আপীল দায়ের করিতে পারিবেন, এবং এই আপীলের উপর উহার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷

(৭) এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ বা আপীল দায়েরের জন্য কোন কোর্ট-ফিস প্রদেয় হইবে না৷

(৮) এই ধারার অধীন কোন অভিযোগ এই আইনের অধীন কোন ফৌজদারী অভিযোগ বলিয়া গণ্য হইবে না৷

(৯) এই ধারায় যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২৬ এর অধীন প্রদত্ত চাকুরীর অবসানের আদেশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করা যাইবে না, যদি না অবসানের আদেশটি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের ট্রেড ইউনিয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে অথবা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া অভিযোগ করা হয়, অথবা যদি না তিনি উক্ত ধারার অধীন প্রাপ্য সুবিধা হইতে বঞ্চিত হন৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

চর্তুদশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৩, শ্রম আদালতে দরখাস্তঃ

কোন যৌথ দরকষাকষি প্রতিনিধি অথবা কোন মালিক অথবা কোন শ্রমিক এই আইন বা কোন রোয়েদাদ বা কোন নিষ্পত্তি বা চুক্তির অধীন বা দ্বারা নিশ্চিত বা প্রদত্ত [বা কোন প্রচলিত প্রথা বা কোন বিজ্ঞপ্তি বা কোন আদেশ বা কোন নোটিফিকেশন বা অন্য কোন ভাবে স্বীকৃত] কোন অধিকার প্রয়োগের জন্য শ্রম আদালতে দরখাস্ত করিতে পারিবেন৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

চর্তুদশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৫, অপরাধ বিচারের ক্ষেত্রে শ্রম আদালতের ক্ষমতা ও কার্যক্রমঃ

(১) এই আইনের বিধান সাপেক্ষে, শ্রম আদালত অপরাধ বিচারকালে, যতদূর সম্ভব, ফৌজদারী কার্যবিধিতে বর্ণিত সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতি অনুসরণ করিবে৷

(২) এই আইনের অধীন অপরাধ বিচারের উদ্দেশ্যে ফৌজদারী কার্যবিধির অধীন [প্রথম শ্রেণীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের] উপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা শ্রম আদালতেরও থাকিবে৷

(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, শাস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে উক্ত কার্যবিধির অধীন সেশন আদালতের উপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা শ্রম আদালতেরও থাকিবে৷

(৪) শ্রম আদালত কোন অপরাধের বিচারকালে আদালতের সদস্যগণ ছাড়া বিচারকার্য পরিচালনা করিবে৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

চর্তুদশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৬, অপরাধ বিচার ছাড়া অন্য কোন বিষয়ে শ্রম আদালতের ক্ষমতা ওকার্যক্রমঃ

(১) অপরাধ ব্যতীত এই আইনের অধীন অন্য কোন বিষয়, প্রশ্ন বা বিরোধের বিচার ও নিষ্পত্তির উদ্দেশ্যে, শ্রম আদালত একটি দেওয়ানী আদালত বলিয়া গণ্য হইবে এবং দেওয়ানী কার্যবিধির অধীন দেওয়ানী আদালতের উপর ন্যস্ত সকল ক্ষমতা নিম্নবর্ণিত ক্ষমতাসহ, শ্রম আদালতেরও থাকিবে, যথাঃ-

(ক) কোন ব্যক্তির উপস্থিতি এবং তাহাকে শপথাধীন জবানবন্দী এবং সাক্ষ্য প্রদানে বাধ্য করা;

(খ) কোন দলিল বা বস্তু হাজির করিতে বাধ্য করা;

(গ) সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য অথবা দলিল পরীক্ষার জন্য কমিশন প্রেরণ করা;

(ঘ) কোন পক্ষের আদালতে অনুপস্থিতির ক্ষেত্রে মামলায় একতরফা সিদ্ধান্ত প্রদান করা;

(ঙ) একতরফা সিদ্ধান্ত বাতিল করা;

(চ) কোন পক্ষের অনুপস্থিতির কারণে প্রদত্ত মামলা খারিজের আদেশ বাতিল করা; এবং

(ছ) মামলার উদ্দেশ্য ব্যাহত রোধ করার লক্ষ্যে শ্রম আদালত যে কোন পক্ষের উপর অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ জারী করিতে পারিবে৷

(২) এই আইন সাপেক্ষে, কোন শ্রম আদালতে কোন দরখাস্ত বা দলিল পেশ করা, প্রদর্শন করা অথবা লিপিবদ্ধ করার জন্য অথবা উহা হইতে কোন দলিল নেওয়ার জন্য কোন কোর্ট-ফিস প্রদান করিতে হইবে না৷

(৩) শ্রম আদালত জারীকারক অথবা বিশেষ বাহক মারফত অথবা রেজিস্ট্রি ডাকযোগে অথবা উভয়বিধভাবে কোন মামলার প্রতিপক্ষকে মামলা দায়ের করার অনধিক দশ দিনের মধ্যে তাহার লিখিত জবাব বা আপত্তি পেশ করিবার জন্য নির্দেশ দিবে৷

(৪) শ্রম আদালত, যুক্তি লিপিবদ্ধ করিয়া, উক্ত সময় অনধিক সর্বমোট সাতদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি করিতে পারিবে৷

(৫) যদি প্রতিপক্ষ নোটিশে উল্লিখিত অথবা বর্ধিত সময়ের মধ্যে কোন লিখিত জবাব বা আপত্তি পেশ করিতে ব্যর্থ হয়, তাহা হইলে মামলাটি একতরফা শুনানীক্রমে নিষ্পত্তি করা হইবে৷

(৬) কোন পক্ষের আবেদনক্রমে শ্রম আদালত সর্বমোট সাত দিনের অধিক সময় মামলার শুনানী স্থগিত রাখিতে পারিবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, যদি মামলার উভয় পক্ষ স্থগিতাদেশ প্রার্থনা করে, তাহা হইলে সর্বমোট অনধিক দশ দিন পর্যন্ত মামলার শুনানী স্থগিত রাখা যাইবে৷

(৭) যদি মামলার দরখাস্তকারী মামলা শুনানীর তারিখে অনুপস্থিত থাকে, তাহা হইলে মামলা খারিজ হইয়া যাইেবঃ

তবে শর্ত থাকে যে, খারিজ আদেশ প্রদানের তিন মাসের মধ্যে মামলার দরখাস্তকারীর আবেদনক্রমে খারিজ আদেশ বাতিল করার এখতিয়ার আদালতের থাকিবে৷

(৮) যদি মামলার প্রতিপক্ষ শুনানীর তারিখে অনুপস্থিত থাকে, তাহা হইলে মামলাটি একতরফা শুনানীক্রমে নিষ্পত্তি করা হইবে৷

(৯) কোন মামলা খারিজ হওয়ার কারণে, যে কারণে মামলাটি দায়ের করা হইয়াছিল উক্ত একই কারণে, নূতন মামলা দায়ের করা বারিত হইবে না যদি না ইহা অন্য কোন কারণে বারিত হয়, এবং খারিজ হওয়ার তিন মাস পর দায়ের করা হয়৷

(১০) যদি কোন মামলার সকল পক্ষ মামলাটি প্রত্যাহার করিবার জন্য শ্রম আদালতে দরখাস্ত করে, তাহা হইলে আদালত উভয় পক্ষকে শুনানী প্রদান করিয়া, মামলার যে কোন পর্যায়ে উহা প্রত্যাহার করার অনুমতি দিতে পারিবে যদি, আদালত এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, সংশ্লিষ্ট বিরোধটি আপোষে নিষ্পত্তি হইয়াছে৷

(১১) শ্রম আদালতের কোন রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ, লিখিতভাবে প্রকাশ্য আদালতে প্রদান করিতে হইবে, এবং উহার একটি কপি সংশ্লিষ্ট প্রত্যেক পক্ষকে দেওয়া হইবে৷

(১২) শ্রম আদালতের রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ, প্রত্যেক ক্ষেত্রে মামলা দায়ের করিবার তারিখ হইতে ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে প্রদান করিতে হইবে।

(১৩) উপ-ধারা (১২) এর বিধান সত্ত্বেও, ৬০ (ষাট) দিনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রায়, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ প্রদান করা সম্ভব না হইলে, উপযুক্ত কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া আদালত উক্ত সময়সীমা আরো ৯০ (নব্বই) দিন বর্ধিত করিতে পারিবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

চতুর্দশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৭, শ্রম আদালতের রায়, ইত্যাদির বিরুদ্ধে আপীলঃ

এই আইন সাপেক্ষে, শ্রম আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন রায়, সিদ্ধান্ত, রোয়েদাদ বা দণ্ডের বিরুদ্ধে কোন সংক্ষুব্ধ পক্ষ, উহা প্রদানের ষাট দিনের মধ্যে ট্রাইব্যুনালে আপীল দায়ের করিতে পারিবে, এবং উক্তরূপ আপীলের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হইবে৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

চর্তুদশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৮, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনালঃ

(১) এই আইনের উদ্দেশ্যে, বাংলাদেশে একটি শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল থাকিবে, যাহা একজন চেয়ারম্যান সমন্বয়ে গঠিত হইবে, অথবা সরকার উপযুক্ত বিবেচনা করিলে একজন চেয়ারম্যান এবং সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সংখ্যক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হইবে৷

(২) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এবং সদস্যগণ, যদি থাকেন, সরকার কর্তৃক, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, নিযুক্ত হইবেন এবং তাহাদের চাকুরীর শর্তাবলী সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হইবে৷

(৩) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান সুপ্রিমকোর্টের কর্মরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অথবা অতিরিক্ত বিচারক হইবেন, এবং উহার কোন সদস্য সুপ্রিমকোর্টের কর্মরত অথবা অবসরপ্রাপ্ত বিচারক অথবা অতিরিক্ত বিচারক হইবেন; অথবা অন্যুন তিন বত্সর কর্মরত আছেন বা ছিলেন এমন কোন জেলা জজ হইবেন৷

(৪) যদি চেয়ারম্যান কোন কারণে অনুপস্থিত থাকেন বা তাহার কার্যসম্পাদনে অপারগ হন, তাহা হইলে সদস্যগণ যদি থাকেন, এর মধ্যে যিনি জ্যেষ্ঠ তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করিবেন৷

(৫) যে ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনালের কোন সদস্য নিযুক্ত থাকেন সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান, আদালতের কার্য সুচারুরূপে সম্পন্ন করিবার জন্য, প্রয়োজনীয় সংখ্যক বেঞ্চ গঠন করিতে পারিবেন, এবং উক্তরূপ বেঞ্চ এক বা একাধিক সদস্য সমন্বয়ে অথবা চেয়ারম্যান এবং এক বা একাধিক সদস্য সমন্বয়ে গঠন করা যাইবে৷

(৬) ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন বা বিবেচ্য কোন আপীল বা বিষয়ের শুনানী এবং নিষ্পত্তি পূর্ণ আদালতে হইতে পারিবে অথবা উহার কোন বেঞ্চেও হইতে পারিবে৷

(৭) এই আইন সাপেক্ষে, মূল ডিক্রীর বিরুদ্ধে আপীল শুনানীর জন্য কোন আপীল আদালত দেওয়ানী কার্যবিধিতে বর্ণিত যে কার্যক্রম অনুসরণ করে, ট্রাইব্যুনাল, যতদূর সম্ভব, উক্ত কার্যক্রম অনুসরণ করিবে৷

(৮) যদি কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষেত্রে বেঞ্চের সদস্যগণের মধ্যে মত পার্থক্য দেখা যায়, তাহা হইলে-

(ক) বিষয়টি সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের, যদি থাকে, অভিমত অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা হইবে, এবং

(খ) যদি বেঞ্চের সদস্যগণ সমানভাবে বিভক্ত হন, তাহা হইলে তাহারা তাহাদের অভিমত ব্যক্ত করিয়া তর্কিত বিষয়ের উপরে শুনানীর জন্য বিষয়টি চেয়ারম্যানের নিকট প্রেরণ করিবেন এবং চেয়ারম্যান, যদি তিনি উক্ত বেঞ্চের সদস্য না হন, তাহা হইলে স্বয়ং বিষয়টির উপর শুনানী গ্রহণ করিতে পারিবেন অথবা বিষয়টি শুনানীর জন্য এক বা একাধিক সদস্য সমন্বয়ে গঠিত অন্য কোন বেঞ্চের নিকট প্রেরণ করিতে পারিবেন, এবং চেয়ারম্যান অথবা উক্তরূপ নতুন গঠিত বেঞ্চের সদস্য বা সদস্যগণের সংখ্যাগরিষ্ঠ মতানুযায়ী বিষয়টির নিষ্পত্তি হইবে৷

(৯) যে ক্ষেত্রে কোন বেঞ্চ চেয়ারম্যান এবং কোন সদস্য সমন্বয়ে গঠিত হয় এবং উহার সদস্যগণের মধ্যে কোন বিষয়ে মত পার্থক্য দেখা দেয় এবং সদস্যগণ এই ব্যাপারে সমানভাবে বিভক্ত হন, সে ক্ষেত্রে উক্ত বিষয় সম্বন্ধে চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই প্রাধান্য পাইবে এবং বেঞ্চের সিদ্ধান্ত চেয়ারম্যানের অভিমত মোতাবেক প্রকাশ করা হইবে৷

(১০) ট্রাইব্যুনাল আপীলে শ্রম আদালতের কোন রায়, সিদ্ধান্ত, রোয়েদাদ বা দণ্ডাদেশ বহাল রাখিতে, সংশোধন বা পরিবর্তন করিতে বা বাতিল করিতে পারিবে অথবা মামলাটি পুনরায় শুনানীর জন্য শ্রম আদালতে ফেরত পাঠাইতে পারিবে; এবং অন্যত্র ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ট্রাইব্যুনাল এই আইনের অধীন প্রদত্ত শ্রম আদালতের সকল ক্ষমতাও প্রয়োগ করিবে৷

(১১) ট্রাইব্যুনালের রায় আপিল দায়ের করিবার ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে প্রদান করা হইবে।

(১১ক) উপ-ধারা (১১) এর বিধান সত্ত্বেও, ৬০ (ষাট) দিনের নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে রায় প্রদান করা সম্ভব না হইলে, উপযুক্ত কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া ট্রাইব্যুনাল পরবর্তী ৯০ (নববই) দিনের মধ্যে রায় প্রদান করিতে পারিবে।]

(১২) ট্রাইব্যুনাল উহার অথবা কোন শ্রম আদালতের অবমাননার জন্য শাস্তি দিতে পারিবে, যেন উহা সুপ্রীমকোর্টের একটি হাইকোর্ট বিভাগ৷

(১৩) ট্রাইব্যুনাল যদি উপ-ধারা (১২) এর অধীন কোন ব্যক্তিকে জেলের আদেশ দেয়া অথবা দুইশত টাকার অধিক জরিমানা করে, তাহা হইলে উক্ত শাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তি হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করিতে পারিবেন৷

(১৪) ট্রাইব্যুনাল স্বইচ্ছায় অথবা কোন পক্ষের দরখাস্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোন মামলা এক শ্রম আদালত হইতে অন্য শ্রম আদালতে হস্তান্তর করিতে পারিবে৷

(১৫) সকল শ্রম আদালতের উপর ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা থাকিবে৷

চর্তুদশ অধ্যায়

বিরোধ নিষ্পত্তি, শ্রম আদালত, শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল, আইনগত কার্যধারা, ইত্যাদি

ধারা ২১৯, দরখাস্ত বা আপীলের ফরমঃ

কোন শ্রম আদালতে কোন দরখাস্ত অথবা ট্রাইব্যুনালে কোন আপীল বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে পেশ করিতে হইবে, এবং উহাতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত বিষয় ছাড়াও নিম্নলিখিত বিষয়সমূহ লিপিবদ্ধ থাকিতে হইবে, যথাঃ-

(ক) পক্ষগণের নাম ও ঠিকানা;

(খ) দরখাস্ত বা আপীলের কারণের একটি সংক্ষিপ্ত বর্ণনা এবং প্রার্থীত প্রতিকার;

(গ) যে আইনের বিধানের অধীন দরখাস্ত বা আপীল পেশ এবং প্রতিকার প্রার্থনা করা হইয়াছে উহার উল্লেখ;

(ঘ) দরখাস্ত বা আপীল বিলম্বে পেশের ক্ষেত্রে উক্ত বিলম্বের কারণ এবং যে আইনের ধারার অধীন বিলম্ব মওকুফ প্রার্থনা করা হইয়াছে উহার উল্লেখ;

(ঙ) দশম অধ্যায়ের অধীন কোন দরখাস্তের ক্ষেত্রে, দরখাস্তকারীকে প্রদেয় মাসিক মূল মজুরী, মহার্ঘভাতা, এডহক অথবা অন্তর্বর্তী মজুরী, যদি থাকে, এবং মজুরীর সংগে প্রদেয় অন্যান্য অর্থ পৃথকভাবে প্রদর্শন করিয়া একটি বিবরণ;

(চ) দ্বাদশ অধ্যায়ের অধীন কোন মালিকের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণ উশুলের জন্য কোন দরখাস্তের ক্ষেত্রে, মালিকের উপর দুর্ঘটনার নোটিশ জারীর তারিখ; এবং উক্তরূপ নোটিশ যদি জারী না করা হয় অথবা সময়মত জারী করা না হয় তাহা হইলে উহার কারণ;

(ছ) দ্বাদশ অধ্যায়ের অধীন পোষ্যগণ কর্তৃক ক্ষতিপূরণ উশুলের জন্য দরখাস্ত পেশের ক্ষেত্র ব্যতীত অন্যক্ষেত্রে যে সমস্ত বিষয়ে চুক্তিতে উপনীত হইয়াছেন এবং যে সমস্ত বিষয়ে চুক্তিতে উপনীত হওয়া সম্ভব হয় নাই তাহার সংক্ষিপ্ত বিবরণ;

(জ) বিবাদের কারণ উদ্ভবের তারিখ; এবং

(ঝ) শ্রম আদালত কর্তৃক দরখাস্ত গ্রহণের এখতিয়ার সম্পর্কে একটি বিবৃতি।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

ঊনবিংশ অধ্যায়

অপরাধ, দন্ড এবং পদ্ধতি

ধারা ৩৩-এর অধীন শ্রম আদালতের আদেশ অমান্য করার দন্ডঃ

ধারা ২৮৩৷

কোন ব্যক্তি ধারা ৩৩-এর অধীন প্রদত্ত শ্রম আদালতের কোন আদেশ পালন করিতে অস্বীকার করিলে অথবা ব্যর্থ হইলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদণ্ডে, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ দণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

শিশু এবং কিশোর নিয়োগের জন্য দণ্ডঃ

ধারা ২৮৪৷

কোন ব্যক্তি কোন শিশু বা কিশোরকে চাকুরীতে নিযুক্ত করিলে, অথবা এই আইনের কোন বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন শিশু বা কিশোরকে চাকুরী করিবার অনুমতি দিলে, তিনি পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ধারা ৩৫ লঙ্ঘন করিয়া শিশু সম্পর্ক কোন চুক্তি করার দন্ডঃ

ধারা ২৮৫৷

কোন শিশুর পিতা-মাতা বা অভিভাবক ধারা ৩৫-এর বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন শিশু সম্পর্কে চুক্তি সম্পাদন করিলে, তিনি এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

মালিক কর্তৃক চতুর্থ অধ্যায়ের বিধান লংঘনের দন্ডঃ

ধারা ২৮৬৷

(১) কোন মালিক চতুর্থ অধ্যায়ের বিধান অনুযায়ী কোনো মহিলা শ্রমিককে প্রসূতি কল্যাণ সুবিধা হইতে বঞ্চিত করিলে, তিনি পঁচিশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

(২) যে ক্ষেত্রে আদালত উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন অর্থদণ্ড আরোপ করে সে ক্ষেত্রে, আদালত উহার রায় প্রদানকালে আদায়কৃত দণ্ডের অর্থ সম্পূর্র্র্ণ বা উহার কোন অংশ সংশ্লিষ্ট মহিলাকে, যে কারণে উক্ত অর্থদণ্ড আরোপ করা হইয়াছে সে কারণ হইতে উদ্ভুত ক্ষতির জন্য, ক্ষতিপূরণ হিসাবে প্রদানের আদেশ দিতে পারিবে৷

(৩) আদালত, উপ-ধারা (২) এর অতিরিক্ত হিসাবে, চতুর্থ অধ্যায়ের যে সুবিধা হইতে শ্রমিককে বঞ্চিত করা হইয়াছে, সেই সুবিধা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মালিককে আদেশ প্রদান করিবে।

অনুমোদিত অনুপস্থিতির সময়ে মঞ্জুরীর বিনিময়ে কাজ করার দন্ডঃ

ধারা ২৮৭৷

কোন মহিলা, চতুর্থ অধ্যায়ের বিধি মোতাবেক তাহার মালিক কর্তৃক অনুমোদিত অনুপস্থিতিকালে, নগদ অর্থ অথবা জিনিসের বিনিময়ে কোন কাজ করিলে, তিনি এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ধারা ৬৭ লঙ্ঘন করার দণ্ডঃ

ধারা ২৮৮৷

কোন ব্যক্তি ধারা ৬৭ এর বিধান মানা হয় নাই এরূপ শক্তি চালিত কোন যন্ত্রপাতি কোন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহারের জন্য বিক্রি করিলে অথবা ভাড়া দিলে, অথবা কোন বিক্রেতা বা ভাড়াটিয়ার প্রতিনিধি হিসাবে উহা বিক্রি করিবার জন্য অথবা ভাড়া দেওয়ার জন্য সংগ্রহ করিলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

নিম্নতম মজুরী হারের কম হারে মজুরী প্রদানের দণ্ডঃ

ধারা ২৮৯৷

(১) কোন মালিক একাদশ অধ্যায়ের অধীন ঘোষিত নিম্নতম মজুরী হারের কম হারে কোন শ্রমিককে মজুরী প্রদান করিলে, তিনি এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

(২) যে ক্ষেত্রে আদালত উপ-ধারা (১) এর অধীন কোন দণ্ড আরোপ করে, সেক্ষেত্রে, আদালত উহার রায় প্রদানকালে, উক্তরূপ কোন লঙ্ঘন না হইলে সংশ্লিষ্ট শ্রমিককে যে মজুরী প্রদেয় হইত এবং উক্তরূপ লঙ্ঘন করিয়া মজুরী হিসাবে যে অর্থ প্রদান করা হইয়াছে উহার পার্থক্যের পরিমাণ অর্থ তাহাকে প্রদান করিবার আদেশ দিতে পারিবে৷

দুর্ঘটনার নোটিশ প্রদানে ব্যর্থতার দন্ডঃ

ধারা ২৯০৷

কোন ব্যক্তি এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়া কোন দুর্ঘটনা সম্পর্কে নোটিশ দিতে ব্যর্থ হইলে তিনি, যদি দুর্ঘটনার কারণে সাংঘাতিক শারীরিক জখম হয়, তাহা হইলে এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন, অথবা যদি দুর্ঘটনার কারণে জীবন হানি ঘটে, তাহা হইলে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা তিন হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

অসৎ শ্রম আচরণ বা এন্টি-ট্রেড ইউনিয়ন ডিসক্রিমিনেশনের দণ্ডঃ

ধারা ২৯১৷

(১) কোনো ব্যক্তি ধারা ১৯৫ বা ১৯৬ক এর কোনো বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি এক বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন শ্রমিক ধারা ১৯৬ এর কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে, তিনি 5[ ছয় মাস] পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

(৩) কোন ট্রেড ইউনিয়ন অথবা শ্রমিক ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তি, ধারা ১৯৬ এর কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি [এক বৎসর] পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয হইবেন।

নিষ্পত্তি, ইত্যাদি ভংগের দন্ডঃ

ধারা ২৯২৷

কোন ব্যক্তি এই আইনের অধীন অবশ্য পালনীয় কোন নিষ্পত্তি, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ ভংগ করিলে, তিনি এক বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

নিষ্পত্তি, ইত্যাদি বাস্তবায়নে ব্যর্থতার দন্ডঃ

ধারা ২৯৩৷

এই আইনের অধীন কোন নিষ্পত্তি, সিদ্ধান্ত বা রোয়েদাদ বাস্তবায়নের জন্য দায়ী কোন ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে উহা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হইলে, তিনি দুই বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউটের দণ্ডঃ

ধারা ২৯৪৷

(১) কোন শ্রমিক কোন বেআইনী ধর্মঘট শুরু করিলে, অথবা চালাইয়া গেলে, অথবা উহাকে আগাইয়া নেওয়ার জন্য কোন কাজ করিলে, তিনি 7[ ছয় মাস] পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

(২) কোন মালিক কোন বেআইনী লক-আউট শুরু করিলে অথবা চালাইয়া গেলে, অথবা উহাকে আগাইয়া নেওয়ার জন্য কোন কাজ করিলে, তিনি 8[ ছয় মাস] পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউটে প্ররোচিত করার দন্ডঃ

ধারা ২৯৫৷

কোন ব্যক্তি কোন বেআইনী ধর্মঘট বা লক-আউটে অংশ গ্রহণের জন্য অথবা উহার জন্য অর্থ খরচ বা সরবরাহের জন্য অথবা অন্য কোন ভাবে উহাকে আগাইয়া নেওয়ার জন্য কোন ব্যক্তিকে প্ররোচিত বা উৎসাহিত করিলে, তিনি ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ঢিমে তালের কাজে অংশ গ্রহণ বা প্ররোচনার দন্ডঃ

ধারা ২৯৬৷

কোন ব্যক্তি কোন ঢিমে তালের কাজে অংশগ্রহণ করলে অথবা অন্য কোন ব্যক্তিকে উহাতে অংশ গ্রহণে প্ররোচিত বা উত্সাহিত করিলে অথবা অন্য কোন ভাবে উহাকে আগাইয়া নেওয়ার জন্য কোন কাজ করিলে, তিনি  ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

ধারা ২২৮(২) লংঘনের দণ্ডঃ

ধারা ২৯৭৷

কোন মালিক ধারা ২২৮ (২) এর বিধান লঙ্ঘন করিলে তিনি এক বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ভবিষ্য তহবিল এবং ট্রেড ইউনিয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ এর দন্ডঃ

ধরা ২৯৮৷

(১) কোন ব্যক্তি শ্রমিকগণের কোন ভবিষ্য তহবিলের অর্থ আত্মসাত্ করিলে, তছরূপ করিলে অথবা অসত্ উদ্দেশ্যে নিজের কাজে ব্যয় করিলে, তিনি তিন বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অধিকন্তু তিনি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷

ব্যাখ্যাঃ কোন মালিক তাহার প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকগণের কোন ভবিষ্য তহবিলের তাহার প্রদেয় চাঁদা অথবা তত্কর্তৃক শ্রমিকগণের মজুরী হইতে কর্তীত উক্ত তহবিলের চাঁদা তিন মাসের অধিক সময় পর্যন্ত, শ্রম পরিচালকের সন্তোষমত কোন যুক্তিসংগত কারণ ব্যতীত, যথা সময়ে উক্ত তহবিলে জমা করিতে ব্যর্থ হইলে, তিনি উক্ত তহবিলের টাকা আত্মসাত্ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন৷

(২) শ্রমিকগণের অথবা মালিকগণের কোন ট্রেড ইউনিয়নের কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারী উক্ত ট্রেড ইউনিয়নের তহবিলের অর্থ আত্মসাত্ করিলে, তছরূপ করিলে অথবা অসত্ উদ্দেশ্যে নিজের কাজে ব্যয় করিলে, তিনি এক বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন এবং অধিকন্তু তিনি অর্থদণ্ডেও দণ্ডনীয় হইবেন৷

(৩) এই ধারার অধীন আরোপিত অর্থদণ্ড, যে পরিমাণ অর্থ অভিযুক্ত ব্যক্তি আত্মসাত্ বা তছরূপ বা নিজ কাজে ব্যয় করিয়াছেন বলিয়া আদালত প্রমাণ পাইবে, সে পরিমাণ হইতে পারিবে এবং অর্থ দণ্ডের টাকা আদায় হওয়ার পর আদালত উহা সংশ্লিষ্ট তহবিলে পূরণ করিয়া দিবে৷

অ-রেজিস্ট্রিকৃত ট্রেড ইউনিয়নের কর্মকান্ডের দন্ডঃ

ধারা ২৯৯৷

কোন ব্যক্তি অ-রেজিস্ট্রিকৃত অথবা রেজিস্ট্রি বাতিল হইয়াছে এমন কোন ট্রেড ইউনিয়নের, রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্তি সংক্রান্ত কোন কর্মকান্ড ব্যতীত, অন্য কোন কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করিলে অথবা অন্য কোন ব্যক্তিকে উক্তরূপ কর্মকান্ডে অংশ গ্রহণের জন্য উত্সাহিত বা প্ররোচিত করিলে অথবা উক্তরূপ কোন ট্রেড ইউনিয়নের তহবিলের জন্য সদস্য চাঁদা ব্যতীত অন্য কোন চাঁদা আদায় করিলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ট্রেড ইউনিয়নের দ্বৈত সদস্য পদের দণ্ডঃ

ধারা ৩০০৷

কোন ব্যক্তি একই সময়ে একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য হইলে বা থাকিলে, তিনি এক মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

ধারা ২১০(৭) না মানার দণ্ডঃ

ধারা ৩০১৷

কোন ব্যক্তি সালিসের সন্তোষমত ব্যতীত, অন্য কোন কারণে ধারা ২১০(৭) এর বিধান মানিতে ব্যর্থ হইলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

মিথ্যা সক্ষমতা প্রত্যয়নপত্র ব্যবহারের দন্ডঃ

ধারা ৩০২৷

কোন ব্যক্তি এই আইনের কোন বিধানের অধীন অন্য কোন ব্যক্তিকে প্রদত্ত কোন সক্ষমতা পত্র নিজের বরাবরে প্রদত্ত সক্ষমতাপত্র হিসাবে সজ্ঞানে ব্যবহার করিলে বা ব্যবহারের চেষ্টা করিলে, অথবা অন্য কোন ব্যক্তিকে সজ্ঞানে উহা ব্যবহার করিতে অথবা ব্যবহারের চেষ্টা করিতে অনুমতি দিলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা এক হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

মিথ্যা বিবরণ, ইত্যাদির দণ্ডঃ

ধারা ৩০৩৷

কোন ব্যক্তি-

(ক) বস্তুগত ভুল বলিয়া জানেন বা জানার কারণ আছে এরূপ কোন বর্ণনা প্রতারণার উদ্দেশ্যে এই আইন বা কোন বিধি, বিধান বা প্রবিধান বা স্কীমের অধীন রক্ষণীয় কোন রেজিস্টার, নোটিশ, নথি অথবা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজে লিপিবদ্ধ করিলে;

(খ) উক্তরূপ কোন রেজিস্টার, নোটিশ, নথি বা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজে লিপিবদ্ধ করার প্রয়োজন আছে-এরূপ কোন বিষয় উহাতে ইচ্ছাকৃতভাবে লিপিবদ্ধ করা হইতে বাদ রাখিলে অথবা বাদ রাখার অনুমতি দিলে;

(গ) উক্তরূপ কোন রেজিস্টার, নোটিশ, নথি বা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজের অফিস কপি ব্যতীত একাধিক কপি রক্ষণ করিলে;

(ঘ) বস্তুগত ভুল বলিয়া জানেন বা জানার কারণ আছে এরূপ কোন দরখাস্ত, নক্শা, নথি, বিবরণ, তথ্য, রিপোর্ট, নোটিশ অথবা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ এই আইন অথবা কোন বিধি, বিধান, প্রবিধান বা কোন স্কীমের অধীন কোন কর্মকর্তা বা কর্তৃপক্ষের নিকট ইচ্ছাকৃতভাবে পাঠাইলে বা পাঠাইবার অনুমতি দিলে; অথবা

(ঙ) এই আইন অথবা কোন বিধি, বিধান, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন রক্ষণীয় বা প্রেরিতব্য কোন নক্শা, তালিকা, নথি, রেজিস্টার, তথ্য, রিপোর্ট অথবা অন্য কোন দলিল-দস্তাবেজ ইচ্ছাকৃতভাবে রক্ষণ করিতে অথবা প্রেরণ করিতে ব্যর্থ হইলে অথবা গাফিলতি করিলে; তিনি ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

অন্যায়ভাবে তথ্য প্রকাশের দণ্ডঃ

ধারা ৩০৪৷

কোন ব্যক্তি এই আইনের বিধান লঙ্ঘন করিয়া তাহার সরকারী দায়িত্ব পালনকালে তাহার গোচরীভূত হইয়াছে এরূপ নির্মাণ বা ব্যবসা সংক্রান্ত কোন গোপনীয় তথ্য অথবা এই আইনের অধীন কোন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করিয়া দিলে, তিনি ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

শ্রমিকগণের সাধারণ অপরাধের দণ্ডঃ

ধারা ৩০৫৷

এই আইনের অন্য বিধানাবলী সাপেক্ষে, কোন প্রতিষ্ঠানে নিয়োজিত কোন শ্রমিক তাহার উপর দায়িত্ব বা কর্তব্য আরোপকারী কোন আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীম বা কোন বিধিসম্মত আদেশের কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে, তিনি পাঁচশত টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

বাধা প্রদানের দন্ডঃ

ধারা ৩০৬।

(১) কোন ব্যক্তি এই আইন বা বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তাকে উহার অধীন তাহার দায়িত্ব বা কর্তব্য পালনে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা প্রদান করিলে অথবা উক্তরূপ কোন ব্যক্তিকে কোন প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে উহার অধীন প্রয়োজনীয় বা অনুমোদিত কোন প্রবেশ, তদন , পরীক্ষা বা পরিদর্শন করিবার জন্য যুক্তিসংগত সুযোগ দিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করিলে বা অবহেলা করিলে, তিনি ছয় মাস পর্যন্ত] কারাদণ্ডে, অথবা পঁচিশ হাজার] টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(২) কোন ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এ উল্লিখিত দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তার তলব অনুযায়ী তাহার সম্মুখে এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীম মোতাবেক রক্ষিত কোন রেজিস্টার, নথি বা দলিল-দস্তাবেজ হাজির করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করিলে বা ব্যর্থ হইলে অথবা উক্তরূপ দায়িত্ব পালনরত কোন কর্মকর্তার সম্মুখে কোন ব্যক্তিকে হাজির হইতে বা তাহার জবানবন্দী গ্রহণ করিতে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দিলে বা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করিলে, তিনি তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দশ হাজার] টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

অন্যান্য অপরাধের দন্ডঃ

ধারা ৩০৭।

কোন ব্যক্তি এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের কোন বিধান লংঘন করিলে বা মানিতে ব্যর্থ হইলে, এবং ইহার জন্য উহাতে অন্য কোন দণ্ডের বিধান না থাকিলে, তিনি পঁচিশ হাজার] টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে] দণ্ডনীয় হইবেন।

পূর্ব দণ্ডাজ্ঞার পর বর্ধিত দণ্ডঃ

ধারা ৩০৮৷

এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন অপরাধের জন্য দণ্ডাজ্ঞা প্রাপ্ত কোন ব্যক্তি পুনরায় উক্তরূপ কোন অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হইলে, তিনি তাহার দ্বিতীয়বার অপরাধের ক্ষেত্রে উহার জন্য নির্ধারিত দণ্ডের দ্বিগুণ দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেনঃ

তবে শর্ত থাকে যে, এই ধারার উদ্দেশ্যে দ্বিতীয় বারের অপরাধ প্রথম দণ্ডাজ্ঞার দুই বত্সর পর সংঘটিত হইলে, প্রথম দণ্ডাজ্ঞার বিষয় বিবেচনায় আনা হইবে না৷

বিপজ্জনক পরিণতিসম্পন্ন আইন লংঘনের দন্ডঃ

ধারা ৩০৯৷

(১) এই অধ্যায়ের অন্যত্র যাহা কিছুই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের কোন বিধান লঙ্ঘন করিলে, তিনি-

(ক) যদি উক্ত লংঘনের কারণে প্রাণহানী হয় তাহা হইলে চার বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবে;

(খ) যদি উক্ত লংঘনের কারণে সাংঘাতিক শারীরিক জখম হয় তাহা হইলে, দুই বত্সর পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন; অথবা

(গ) যদি উক্ত লংঘনের কারণে কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শ্রমিক বা অন্য কোন ব্যক্তি অন্যভাবে জখমপ্রাপ্ত হন বা তাহার অন্য কোন বিপদ সৃষ্টি হয় তাহা হইলে, ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

(২) কোন আদালত এই ধারার অধীন অর্থদণ্ডের আদেশ প্রদানকালে দণ্ডের আদায়কৃত অর্থের সম্পূর্র্র্ণ বা কোন অংশ ক্ষতিপূরণ হিসাবে জখম প্রাপ্ত ব্যক্তিকে অথবা, তাহার মৃত্যু হইলে, তাহার আইনগত প্রতিনিধকে প্রদানের জন্য আদেশ দিতে পারিবে৷

(৩) এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের উক্তরূপ লংঘনের জন্য উচ্চতর কোন শাস্তির ব্যবস্থা থাকিলে ইহার ক্ষেত্রে এই ধারার কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না৷

আদালতের কতিপয় আদেশ প্রদানের ক্ষমতাঃ

ধারা ৩১০৷

(১) এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন অপরাধের জন্য কোন প্রতিষ্ঠানের মালিকের দণ্ড হইলে, আদালত লিখিত আদেশ দ্বারা, দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে, যে কারণে অপরাধ সংঘটিত হইয়াছে সে কারণ দূরীভূত করিবার জন্য, আদেশে উল্লিখিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, যাহা কোন দরখাস্তের ভিত্তিতে বর্ধিত করা যাইবে, উহাতে উল্লিখিত ব্যবস্থা গ্রহণ করিবার জন্য তাহাকে নির্দেশ দিতে পারিবে৷

(২) যে ক্ষেত্রে উপ-ধারা (১) এর অধীনে কোন আদেশ প্রদান করা হয় সেক্ষেত্রে, প্রতিষ্ঠানের মালিক আদেশের নির্দিষ্ট সময়ে বা বর্ধিত সময়ে উক্ত উপ-ধারায় উল্লিখিত কোন অপরাধ, যাহার জন্য তাহার দণ্ড হইয়াছে, অব্যাহতভাবে করিয়া যাইবার জন্য দণ্ডনীয় হইবেন না৷

(৩) যদি উক্ত সময়ের মধ্যে উপ-ধারা (১) এর অধীন প্রদত্ত আদেশ পুরাপুরিভাবে পালন করা না হয় তাহা হইলে মালিক, উক্ত সময় শেষ হইবার পর, আরও অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন এবং ইহার জন্য তিনি ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে, অথবা দুই হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে, অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন৷

বয়স প্রমাণের দায়িত্বঃ

ধারা ৩১১৷

(১) কোন ব্যক্তি কোন নির্দিষ্ট বয়সের কম বা বেশী বয়সী হওয়ার কারণে তাহার কোন কাজ যদি এই আইনের অধীনে দণ্ডযোগ্য অপরাধ হয় এবং যদি আদালতের মতে উক্ত ব্যক্তি দৃশ্যতঃ উক্তরূপ বয়সের উপরে বা নীচে হন তাহা হইলে তিনি উক্তরূপ বয়সের উপরে বা নীচের বয়সী নহেন ইহা প্রমাণের ভার অভিযুক্ত ব্যক্তির উপর বর্তাইবে৷

(২) কোন রেজিষ্টার্ড চিকিত্সক যদি এই মর্মে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন যে, তিনি কোন শ্রমিককে পরীক্ষা করিয়াছেন এবং তিনি বিশ্বাস করেন যে, ইহাতে উল্লিখিত বয়সই তাহার বয়স তাহা হইলে, এই আইনের উদ্দেশ্যে, উক্ত প্রত্যয়নপত্র উক্ত শ্রমিকের বয়স সম্পর্কে চূড়ান্ত প্রমাণ বলিয়া গণ্য হইবে৷

কোম্পানী, ইত্যাদির অপরাধঃ

ধারা ৩১২৷

যে ক্ষেত্রে এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন অপরাধী কোন কোম্পানী বা অন্য কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা কোন ফার্ম হয় সে ক্ষেত্রে, উহার কাজ কর্ম পরিচালনার ব্যাপারে সক্রিয়ভাবে জড়িত উহার প্রত্যেক পরিচালক, অংশীদার, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোন কর্মকর্তা বা প্রতিনিধি উক্ত অপরাধ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবেন, যদি না তিনি প্রমাণ করিতে পারেন যে, অপরাধটি তাহার জ্ঞাতসারে বা সম্মতিক্রমে হয় নাই বা ইহা রোধের জন্য তিনি সাধ্যমত চেষ্টা করিয়াছিলেন৷

অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণঃ

ধারা ৩১৩৷

(১) শ্রম আদালত ব্যতীত অন্য কোন আদালত এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন অপরাধের বিচার করিবে না৷

(২) নিম্নলিখিত ব্যক্তিগণের অভিযোগ ব্যতীত, কোন শ্রম আদালত এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন অপরাধ বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না, যথাঃ-

(ক) সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংক্ষুব্ধ ট্রেড ইউনিয়ন;

(খ) ত্রয়োদশ অধ্যায় বা ধারা ২৯৮ বা ৩০১ এর অধীন কোন অপরাধের ক্ষেত্রে, শ্রম পরিচালক;

(গ) সপ্তদশ অধ্যায়ের অধীন কোন অপরাধের ক্ষেত্রে, ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান অথবা ভবিষ্য তহবিল নিয়ন্ত্রক;

(ঘ) অষ্টাদশ অধ্যায়ের অধীন কোন অপরাধের ক্ষেত্রে, যোগ্য কর্তৃপক্ষ;

(ঙ) অন্য কোন অপরাধের ক্ষেত্রে, প্রধান পরিদর্শক, অথবা তাহাদের অধীন এতদ্উদ্দেশ্যে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তা৷

অভিযুক্তি তামাদিঃ

ধারা ৩১৪৷

এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমে ভিন্নরূপ কিছু না থাকিলে, ইহাদের অধীন কোন অপরাধ কোন শ্রম আদালত বিচারার্থ গ্রহণ করিবে না যদি না তত্সম্পর্কে অভিযোগ অপরাধ সংগঠিত হইবার ছয় মাসের মধ্যে পেশ করা হয়।

অপরাধের রিপোর্টঃ

ধারা ৩১৫৷

কোন ব্যক্তি কর্তৃক এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের লঙ্ঘন বা ইহা মানিয়া চলিতে অস্বীকৃতি সম্পর্কে শ্রম পরিচালক, প্রধান পরিদর্শক অথবা ভবিষ্য তহবিল নিয়ন্ত্রক, অথবা তাহাদের কোন অধস্তন কর্মকর্তার নিকট অবগতির জন্য বা যথাযথ কার্যক্রম গ্রহণের জন্য রিপোর্ট করা যাইবে৷

মামলা প্রত্যাহারঃ

ধারা ৩১৬৷

যে ব্যক্তির অভিযোগে এই আইন বা কোন বিধি, প্রবিধান বা স্কীমের অধীন কোন মামলা শুরু হইয়াছে সে ব্যক্তির দরখাস্ত ব্যতীত উক্ত মামলা প্রত্যাহার করা যাইবে নাঃ

তবে শর্ত থাকে যে, শ্রম পরিচালক বা প্রধান পরিদর্শক বা ভবিষ্য তহবিল নিয়ন্ত্রক এর অনুমতি ব্যতিরেকে তাহাদের অধস্তন কোন কর্মকর্তা কর্তৃক দায়েরকৃত কোন মামলা প্রত্যাহার করা যাইবে না৷

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬

একবিংশ অধ্যায়

বিবিধ

ধারা ৩৩২, মহিলাদের প্রতি আচরণঃ

কোন প্রতিষ্ঠানের কোন কাজে কোন মহিলা নিযুক্ত থাকিলে, তিনি যে পদমর্যাদারই হোন না কেন, তার প্রতি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অন্য কেহ এমন কোন আচরণ করিতে পারিবেন না যাহা অশ্লীল কিংবা অভদ্রজনোচিত বলিয়া গণ্য হইতে পারে, কিংবা যাহা উক্ত মহিলার শালীনতা ও সম্ভ্রমের পরিপন্থী।

বঞ্চিত সুযোগ সুবিধা আদায় করবেন যেভাবে

(প্রতিকার পাওয়ার উপায়)

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানিগুলোতে দেখা যায় কথায় কথায় চাকরিচ্যূত করে থাকে। অনেক প্রতিষ্ঠানই শ্রম আইন অনুসরন করে না। আবার অনেকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়ে থাকলে পরবর্তীতে তদন্ত করে শ্রমিক/কর্মচারীকেই দোষী সাব্যস্ত করে থাকে। তদন্ত টিম যেহেতু ঐ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা তাই নিজেদের চাকরি বাঁচাতে এসব অন্যায় অনৈতিক কাজ করে থাকে। আপনি বিপদে পড়লে সেই সময় আপনার পক্ষে কোনো লোক পাওয়া যায় না। কেউ স্বাক্ষী হতে চায় না।

যাই হোক, আপনি যখন বুঝবেন যে আপনাকে ঠকানো হচ্ছে বা সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হলো তখন আপনি তাদের বিরুদ্ধে এ্যাকশন নিবেন।

প্রথমত আপনি নিয়োগকারী বা প্রতিষ্ঠানের মালিক পক্ষের নিকট বঞ্চিত অধিকারগুলো উল্লেখপূর্বক একটি দরখাস্ত রেজিস্ট্রি ডাকযোগে প্রেরণ করবেন বা সরাসরি দিয়ে একটা কপি রিসিভ করে নিবেন। এখানে কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে। আপনি যখন থেকে চাকরিতে যোগদান করবেন তখন থেকেই,

(ক) সকল কাগজ পত্রের মূল ও ফটোকপি নিজের নিকট সংরক্ষণ করবেন।

(খ) কারণ দর্শানো নোটিশ দিলে তার কপি ও জবাব প্রদানের কপি সংরক্ষণ করবেন।

(গ) ইমেইলে কোনো কিছুর জবাব চাইলে সেই ইমেইল নিজের ব্যক্তিগত ইমেইলে ফরওয়ার্ড করে রাখবেন।

(ঘ) সময়ে সময়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক র্বিভিন্ন আদেশ নিষেধ জারি হয় যেগুলো ইমেইলে বা নোটিশ বোর্ডে টানিয়ে দেয়া হয় সেগুলোর কপি সংরক্ষণ করবেন।

(ঙ) আপনাকে যখন সাসপেন্ড করা হবে তখন আর আপনাকে আপনার ডেস্কে বসতে দেয়া হবে না। সেই পরিস্থিতি বুঝার আগেই ডেস্ক থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরিয়ে রাখতে হবে।

মোদ্দা কথা, চাকরিতে যোগদানের পর থেকে শেষ পর্যন্ত নিজের স্বপক্ষীয় সকল দলিল বা তথ্য পেন ড্রাইভ হোক বা টেরাবক্সে হোক সংরক্ষণ করবেন।

অনেক সময় দেখা যায়, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপিত হলে শ্রম আইন অনুসারে আপনাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিবে, অভিযোগ গঠন করবে ইত্যাদি বিধান মেনে শেষে আপনাকে চাকরিচ্যূত করবে। আপনার পাওনাও দিয়ে দিবে। এরপরও আপনি সন্তুষ্ট না হলে বা কোম্পানির বিরুদ্ধে সংক্ষুব্ধ হলে আপনি তাদের বিরুদ্ধে,

(ক) উকিল নোটিশ দিতে পারেন।

(খ) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান। বাংলাদেশে ৩২টি আওতাধীন কার্যালয় আছে। আপনি যে এলাকার সেই এলাকাধীন কার্যালয়ে অভিযোগ দাখিল করতে হবে। কার্যালয়সমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হয়েছে।

চাকরি থেকে যেদিন ডিসচার্জ বা অপসারন বা বরখাস্ত করবে তার কয়েকদিনের মধ্যেই আপনি তাদের বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ প্রেরণ করবেন। আবার উকিল নোটিশ প্রেরণ না করেও সরাসরি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ দাখিল করতে পারেন। এখানে অভিযোগ দাখিল করতে কোনো টাকা লাগে না। আপনি নিজে পারলে ড্রাফ্ট করে পাঠাবেন। না পারলে জ্ঞানী লোকের সহায়তা নিবেন। অভিযোগ পত্রে সুনির্দিষ্ট দিন তারিখ প্রমাণ সাপেক্ষে উপস্থাপন করবেন। এখানে অভিযোগ দেয়ার কয়েকদিন পর উভয় পক্ষকে তাদের কার্যালয়ে উপস্থিত হতে বলবেন। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠানকে ডাকলে তারা উপস্থিত হতে বাধ্য। উভয় পক্ষের শুনানী শেষে একটা কার্যবিবরনী লিখে উভয় পক্ষের সাইন নিবে এবং প্রতিষ্ঠানকে একটা সময় বেঁধে দিয়ে বলবে যে, এতো দিনের মধ্যে শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করবেন নইলে শ্রমিক শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করতে পারবে।

অধিকাংশ কোম্পানি নিজেদের মান সম্মান বাঁচাতে ওখানেই শ্রমিকের পাওনা পরিশোধ করে থাকে। যারা টেরা টাইপের ওরা চ্যালেঞ্জ নিয়ে শ্রম আদালত পর্যন্ত যায়।

(গ) শ্রম আদালতে মামলা করবেন।

শ্রম আদালতে মামলা করার বিষয়টি “কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্ত “ বিষয়ের পরে   উল্লেখ করা হলো।  এখন আসুন আমরা কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর সম্পর্কে জেনে নেই।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর

(শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়)

প্রধান কার্যালয়ে যোগাযোগের ঠিকানা

মহাপরিদর্শক

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর।

শ্রম ভবন, ১৯৬, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, বিজয়নগর, ঢাকা-১০০০।

ফোন নম্বর: +৮৮-০২- ২২৬৬৬৪২০১

ফ্যাক্স: +৮৮-০২- ২২৬৬৬৪২০৩

E-mail: ig@dife.gov.bd

হেল্প লাইন (১৬৩৫৭)

ভিশন ও মিশন

ভিশনঃ

নিরাপদ কর্মস্থল, শোভন কর্মপরিবেশ ও শ্রমিকদের জন্য উন্নত জীবন মান।

মিশনঃ

১। বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ ও বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ অনুযায়ী শ্রমিকদের জন্য উন্নত কর্ম পরিবেশ সৃষ্টি ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত শিশু শ্রম নিরসনের পদক্ষেপ গ্রহণ;

২। কর্মক্ষেত্রে সকল শ্রমিকের স্বাস্থ্য ও সেইফটির ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;

৩। নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন।

যেসব আইন ও বিধিমালা অনুসরণ করা হয়ঃ

আইনঃ

(ক) বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধনী-২০১৮)                     

(খ) বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ (সংশোধনী-২০১৩)                      

(গ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন-২০০৬ (সংশোধনী-২০১৩)                    

(ঘ) বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬                 

(ঙ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন-২০০৬

বিধিমালাঃ

(ক) বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা (সংশোধন), ২০২২

(খ) বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫

(গ) বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা-২০১৫

(ঘ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন বিধিমালা-২০১০

(ঙ) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন সংশোধিত বিধিমালা-২০১৫

নীতিমালাঃ

(ক) গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতিমালা-২০১৫                   

(খ) জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেইফটি নীতিমালা-২০১৩     

(গ) জাতীয় শ্রমনীতি-২০১২   

(ঘ) জাতীয় শিশু শ্রম নিরসন নীতিমালা-২০১০

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এর

আওতাধীন কার্যালয়সমূহ

(১) জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, তেরখাদিয়া, (ক্যান্টনমেন্ট জাহিদ গেটের বিপরীতে), রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল: jig.noshtri.dife@gmail.com

(২) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, ঢাকা, বায়তুল আবেদ (৯ম থেকে ১১তম তলা), ৫৩, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০। ই-মেইল: digfe.dhaka@gmail.com

(৩) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, নারায়নগঞ্জ, নবাব সলিমুল্লাহ রোড (বাগে জান্নাত মসজিদ সংলগ্ন), চাষাড়া, নারায়ণগঞ্জ। ই-মেইল: dig.narayanganj@gmail.com

(৪) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, গাজীপুর, আইআরআই রোড, টঙ্গী, গাজীপুর। ই-মেইল: dig.gazipur@gmail.com

(৫) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, চট্টগ্রাম, শিল্প সম্পর্ক শিক্ষায়তন (আইআরআই), পলিটেকনিক রোড, নাসিরাবাদ, চট্টগ্রাম- ৪২০৯। ই-মেইল: digctg@gmail.com

(৬) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, নরসিংদী, ২৬/২, তরোয়া, জেলখানা মোড়, নরসিংদী।

ই-মেইল : narsingdidife@gmail.com

(৭) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, মুন্সিগঞ্জ, আর কে টাওয়ার (৫ম তলা), ৬০৫, বাগমামুদালি, মুন্সীগঞ্জ সদর, মুন্সীগঞ্জ। ই-মেইল : dig.munshigonj@gmail.com

(৮) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, টাঙ্গাইল, পান্থ প্রভা (৩য় তলা), বি-২৪/১০, আট পুকুরপাড়, বিশ্বাস বেতকা, ঢাকা রোড, টাঙ্গাইল সদর, টাঙ্গাইল-১৯০০।

ই-মেইল : digfe.tangail@gmail.com

(৯) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, কিশোরগঞ্জ, ৬১৩/১, কলেজ রোড, হারুয়া,  সদর, কিশোরগঞ্জ। ই-মেইল : digkishoregonj@gmail.com

(১০) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, মৌলভীবাজার, ভানুগাছ রোড (১০ নং গোল চত্ত্বর সংলগ্ন), শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার। ই-মেইল : dig.moulvibazar@gmail.com

(১১) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, ফরিদপুর, পশ্চিম গোয়ালচামট, ২ নং সড়ক, ফরিদপুর।

ই-মেইল: digfaridpur2017@gmail.com

(১২) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, কুমিল্লা, যাদুঘর রোড, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের প্রথম গেইট সংলগ্ন, কোটবাড়ী, সদর দক্ষিণ, কুমিল্লা। ই-মেইল : digcomilla.dife@gmail.com

(১৩) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, সিলেট ,বাড়ী নং- ১৬, সড়ক নং- ২২, ব্লক-ডি, শাহজালাল উপশহর, সিলেট – ৩১০০। ই-মেইল : dig.sylhet@dife.gov.bd

(১৪) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, ময়মনসিংহ, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, মাসকান্দা, সদর, ময়মনসিংহ। ই-মেইল : dig.mymensingh1@gmail.com

(১৫) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, রংপুর ,আর কে রোড, গণেশপুর, রংপুর। ই-মেইল : dife.rangpur@gmail.com

(১৬) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, দিনাজপুর, মদিনা প্লাজা, ৩য় তলা, প্লট নং-২৫, গাউসুল আযম চক্ষুহাসপাতাল রোড, উপশহর-২, দিনাজপুর।

ই-মেইল : dig.dinajpur.dife@gmail.com

(১৭) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, রাজশাহী, সেনানিবাস সড়ক, তেরখাদিয়া, রাজপাড়া, রাজশাহী। ই-মেইল : dig.mole.rajshahi@gmail.com

(১৮) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, পাবনা ,এ/১১৪, ব্লক-বি, ডি.সি. রোড, লাইব্রেরী বাজার, পাবনা- ৬৬০০। ই-মেইল : digpabna@gmail.com

(১৯) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, বগুড়া ,বাড়ী নং: জি - ১২৫, রহমান নগর, বগুড়া – ৫৮০০। ই-মেইল : digbogra@gmail.com

(২০) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, সিরাজগঞ্জ, চড় রায়পুর, পূর্বপাড়া, রামগাতি, সিরাজগঞ্জ।

ই-মেইল : digsirajgonj@gmail.com

(২১) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, কুষ্টিয়া, ৪০/১, মাহাতাব উদ্দিন সড়ক, পুরাতন কাটাইখানা মোড়, কুষ্টিয়া। ই-মেইল : digkushtia@gmail.com

(২২) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, যশোর, বাড়ী নং-২৩৬, প্লট নং-০৮, সেক্টর-০৯, যশোর হাউজিং এষ্টেট, শেখহাটি বাবলাতলা, যশোর-৭৪০০। ই-মেইল : dig.jashore@dife.gov.bd

(২৩) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, খুলনা, ১৫০, খানজাহান আলী রোড, ৪র্থ তলা, পশ্চিম রূপসা, খুলনা সদর, খুলনা। ই-মেইল: dig.dife.khulna@gmail.com

(২৪) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, বরিশাল, আমানতগঞ্জ (সোনালী আইসক্রিম মোড়), বরিশাল। ই-মেইল : dife.barisal.dig@gmail.com

(২৫) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, মানিকগঞ্জ, বিজয় ভবন (৩য় ও ৪র্থ তলা), বেউথা রোড, মানিকগঞ্জ সদর, মানিকগঞ্জ-১৮০০। ই-মেইল : dig.manikganj@gmail.com

(২৬) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, গোপালগঞ্জ, পৌর ভবন (৩য় তলা), বঙ্গবন্ধু সড়ক, গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ। ই-মেইল : dife.gopalgonj@gmail.com

(২৭) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, ফেনী, ওয়ালেদাইন টাওয়ার, কাঠবালিয়া (সালাউদ্দিন মোড়ের উত্তর পাশে), মাদানীনগর, ফেনী সদর, ফেনী। ই-মেইল : difefeni@gmail.com

(২৮) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, রাঙ্গামাটি, প্যারাডাইস টাওয়ার (৫ম ও ৬ষ্ঠ তলা), দক্ষিণ কালিন্দীপুর, রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা-৪৫০০। ই-মেইল : digrangamati@dife.gov.bd

(২৯) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হা-মিম ভবন, ওয়াপদা রোড, দাতিয়ারা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া। ই-মেইল : digbrahmanbaria.dife@gmail.com

(৩০) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, কক্সবাজার, আবেদীনস, ৩৫২, নিউ সার্কিট হাউজ রোড, ওয়ার্ড নং-১০, মধ্যম বাহারছড়া, কক্সবাজার। ই-মেইল : dig.coxsbazar@dife.gov.bd

(৩১) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, নওগাঁ, হোল্ডিং নং-২৪২২, মুক্তিযোদ্ধা খোন্দকার, মকবুল হোসেন সড়ক, চকএনায়েত, মাস্টার পাড়া, নওগাঁ সদর, নওগাঁ। ই-মেইল : dife.naogaon@gmail.com

(৩২) উপমহাপরিদর্শকের কার্যালয়, জামালপুর, চৌধুরী বাড়ী, হোল্ডিং ৬২৩, পলিশা, বেলটিয়া, জামালপুর সদর, জামালপুর। ই-মেইল : dig.jamalpur@gmail.com

অনলাইনে অভিযোগ

https://lima.dife.gov.bd/complaint

উক্ত লিংটি গুগলে সার্চ দিলে একটা পেজ ওপেন হবে। এখানে নিজের ইমেইল দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করে লগইন করতে হবে। তারপর চাহিত তথ্যগুলো দিয়ে সাবমিট করতে হবে।

তবে আমার মতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে আপনি যে ঠিকানার আওতাধীন সেই ঠিকানায় সরাসরি দেয়া উত্তম। কারন আপনি যখন সরাসরি দিবেন তখন মোবাইল নম্বরও নিতে পারবেন। কাজ করতে দীর্ঘায়িত করলে মাঝে মধ্যে ফোন করে জানতে পারবেন এবং তাদের সাথে পরামর্শও করতে পারবেন। তবে এখানে কাউকে ঘুষ দিতে হয় না।

শ্রম আদালতে মামলা

আপনি লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছেন কোনো সদুত্তর পাননি, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু আপনার পাওনা পরিশোধ করেনি তখন আপনি কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সেই সভার কার্যবিবরনী নিয়ে একজন অভিজ্ঞ উকিলের মাধ্যমে আপনার প্রতিষ্ঠান আওতাধীন শ্রম আদালতে মামলা দায়ের করবেন। আপনাকে কোন ধারায় চাকরিচ্যূত করা হলো তা বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬-ধারা ২৩ এর অসদাচরণ এবং দণ্ড-প্রাপ্তির ক্ষেত্রে শাস্তি এই অধ্যায়ে দেখতে হবে। এখন আপনার চাকরির বয়স ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা কী কী পাওনা আছে তা ধারাসহ মামলায় উল্লেখ করতে হবে। যে উকিলের মাধ্যমে মামলা করবেন উনি আপনার নথিপত্র ঘেঁটে ধারা বসাবেন।

বাংলাদেশে শ্রম আদালতের সংখ্যা

ঢাকাসহ দেশের ১০টি জেলায় ১৪টি শ্রম আদালত রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় রয়েছে চারটি (আপিল ট্রাইব্যুনালসহ)। চাকরিচ্যুতি, পাওনা, ক্ষতিপূরণ না পাওয়াসহ নানাভাবে বঞ্চিত ভুক্তভোগীরা শ্রম আইন প্রতিকার চেয়ে শ্রম আদালতে মামলা করতে পারেন।

আদালতসমূহঃ

(১) প্রথম শ্রম আদালত-ঢাকা।

(মানিকগঞ্জ, টাক্সগাইল, জামালপুর, শেরপুর ও ঢাকা জেলার কেরাণীগঞ্জ, দোহার, সাভার, তেজগাঁও, নবাবগঞ্জ, ধামরাই, রমনা, গুলশান, শাহবাগ, শেরে বাংলানগর, পল্টন, কাফরুল, হাতিরঝিল ও বনানী থানা;)

(২) দ্বিতীয় শ্রম আদালত-ঢাকা।

(ফরিদপুর, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, গোপালগঞ্জ ও ঢাকা জেলার সবুজবাগ, কোতয়ালী, মতিঝিল, সূত্রাপুর, ডেমরা, শ্যামপুর, খিলগাঁও, বংশাল, ওয়ারী, যাত্রাবাড়ী, কদমতলী, রামপুরা, বাড্ডা, গেন্ডারিয়া, শাহজাহানপুর, মুগদা ও ভাটারা থানা;)

(৩) তৃতীয় শ্রম আদালত-ঢাকা।

(ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা ও ঢাকা জেলার লালবাগ, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, মিরপুর, পল্লবী, ক্যান্টনমেন্ট, উত্তরা পূর্ব, উত্তরা পশ্চিম, হাজারিবাগ, কামরাক্সগীরচর, নিউমার্কেট, আদাবর, শাহআলী, তুরাগ, খিলক্ষেত, কলাবাগান, দারুসসালাম, চকবাজার, শিল্পাঞ্চল, উত্তরখান, দক্ষিণখান, বিমানবন্দর, রূপনগর ও ভাষানটেক থানা;)

(৪) প্রথম শ্রম আদালত-চট্টগ্রাম।

(চট্টগ্রাম জেলা (ডবলমুরিং, সদরঘাট, বাকুলিয়া ও চাঁদগাঁও থানা ব্যতীত), নোয়াখালী, ল²ীপুর, কক্সবাজার, বান্দরবান, রাক্সগামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা;)

(৫) দ্বিতীয় শ্রম আদালত-চট্টগ্রাম।

(চট্টগ্রাম জেলার ডবলমুরিং, সদরঘাট, বাকুলিয়া ও চাঁদগাঁও থানা, চাঁদপুর, ফেণী, কুমিল্লা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা;)

(৬) শ্রম আদালত-খুলনা। (খুলনা বিভাগের সকল জেলা)

(৭) শ্রম আদালত-রাজশাহী। (রাজশাহী বিভাগের সকল জেলা)

(৮) শ্রম আদালত-সিলেট। (সিলেট বিভাগের সকল জেলা)

(৯) শ্রম আদালত-বরিশাল। (বরিশাল বিভাগের সকল জেলা)

(১০) শ্রম আদালত-রংপুর। (রংপুর বিভাগের সকল জেলা)

(১১) শ্রম আদালত-নারায়নগঞ্জ। (নারায়নগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী ও কিশোরগঞ্জ জেলা।)

(১২) শ্রম আদালত-গাজিপুর। (গাজিপুর জেলা)

(১৩) শ্রম আদালত-কুমিল্লা। (কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষীপুর জেলা।)

(১৪) শ্রম আপীল ট্রাইব্যুনাল-ঢাকা।

কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে করনীয়

বাংলাদেশে সরকারি বেসরকারি যে প্রতিষ্ঠানেই চাকরি করেন না কেনো কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে তার প্রতিকার পাওয়ার কোনো আইন নেই। কোম্পানি আইন ১৯৯৪, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ ও বিধিমালা ২০১৫ সহ অন্যান্য যতো আইন  আছে কোথাও কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে তার প্রতিকার পাওয়ার কোনো ধারা নেই।

বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ৩৩২ ধারায় উল্লেখ আছে,  কোনো প্রতিষ্ঠানের কোন কাজে কোন মহিলা নিযুক্ত থাকিলে, তিনি যে পদমর্যাদারই হোন না কেন, তার প্রতি উক্ত প্রতিষ্ঠানের অন্য কেহ এমন কোন আচরণ করিতে পারিবেন না যাহা অশ্লীল কিংবা অভদ্রজনোচিত বলিয়া গণ্য হইতে পারে, কিংবা যাহা উক্ত মহিলার শালীনতা ও সম্ভ্রমের পরিপন্থী৷ এই আইনটা মূলত পরামর্শমূলক বা নিষেধ মূলক। কিন্তু অশ্লীল কিংবা অভদ্রজনোচিত হলে কিভাবে তার প্রতিকার পাবে তার ধারা এখানে উল্লেখ নেই। আর প্রতিষ্ঠানের মালিক/বস/লিডার/ বড় স্যার/ ছোট স্যার/কলিগ এরা এই আইনটা জানে বলেই সময় ও সুযোগ বুঝে আপনি নারী আপনার শরীরে হাত দিচ্ছে, বিভিন্ন লোভ বা ভয়ভীতি দেখিয়ে আপনার সাথে অনিচ্ছা সত্বেও জোড়পূর্বক শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলছে। আপনি একজন ম্যাচিউর্ড, শিক্ষিত, বিবাহিত বা ভদ্র পরিবারের মেয়ে আপনি নিজের সম্মানের দিকে তাকিয়ে হয়তো প্রকাশ করছেন না। প্রকাশ করলে হয়তো সংসার ভেঙ্গে যাবে, পরিবারের সম্মান নষ্ট হবে, অবিবাহিত হলে পরবর্তীতে বিবাহ হতে সমস্যা হবে ইত্যাদি দূর্বলতার সুযোগ নিয়েই কিন্তু ওরা কাজ করে থাকে। এসব বিষয় সরকারসহ নারীবাদি সংগঠনগুলো সবই জানে । তারপরও নারীদের সম্ভ্রম রক্ষায় তারা কোনো কাজ করছে না। কর্মক্ষেত্রে নারীদের বানিয়ে রাখা হয়েছে যেনো যৌন দাসী। পুরুষ ইচ্ছে করলো আর গোপন কক্ষে নিয়ে চাহিদা মিটালো, বাহ্ কতো মজা!

কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালের ১৪ মে মহামান্য হাইকোর্ট সকল প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ১১টি দফা সম্বলিত সুনিদির্ষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন যেগুলো প্রতিপালন করা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব। অন্যদিকে ২০১৯ সালে আইএলও “কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি নিরসন কনভেনশন-১৯০” (“ইলেমিনেশন অব ভায়োলেন্স এন্ড হেরাসমেন্ট ইন দি ওয়ার্ল্ড অব ওয়ার্ক” প্রণয়ন করে যা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার এই কনভেনশনটি এখনো অনুস্বাক্ষর করেনি।

কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ২০০৯ সালের মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী শ্রম আইনের সংশোধন করা হবে নাকি কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধে নতুন একটি আইন প্রণয়ন করা হবে – এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে একটি সুস্পষ্ঠ নীতিমালা এখনো  ঠিক করা হয়নি। সেই সাথে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আইএলও কনভেনশন ১৯০ অনুস্বাক্ষরও করা হয়নি। কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানী বন্ধে এই কনভেনশনটি বাংলাদেশ কর্তৃক গৃহীত হলে তা এই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেমন সুদৃঢ় করবে তেমনি বাংলাদেশ সরকারের ভাবমূর্তি আরো উজ্জ্বল করবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন।

উপরোক্ত বিষযটি পড়ে এটাই সুস্পষ্ট যে, কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে হোক , একটু ইনজয়ের তো দরকার আছে। তানাহলে এতো বছর হয়ে যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে তার প্রতিকার পাওয়ার এখনো কোনো বিধান তৈরী হলো না কেনো?

অনেক সংগঠন এসব নিয়ে যুগ যুগ ধরে কাজ করছে কিন্তু কোনো কার্যকরী সুফল কেউ তৈরী করতে পারছে না। কর্মক্ষেত্রে কোনো নারী যৌন হেনস্থা বা যৌন হয়রানীর শিকার হলে তার প্রতিকার পাওয়ার সরকার কর্তৃক কোনো বিধান তৈরী না হলেও অন্যভাবে প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।

সরকারি বেসরকারি যেকোনো চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের পরামর্শ নিতে পারেন। যোগাযোগ করুন আমাদের সাথে।

PENMAN

Md. Izabul Alam

Gulshan-1, Dhaka, Bangladesh.

01716508708, izabulalam@gmail.com

আমি যদি কখনো ব্যস্ত থাকি তাহলে আমার Whatsapp Number (01534143644)  এ সংক্ষিপ্তভাবে লিখে দিবেন আমি পরে জানাবো।

 

আরো সহযোগীতা পেতে যোগাযোগ করুন

ADIUL ISLAM

ADVOCATE, JUDGE COURT, DHAKA.

LABOUR COURT & ADMINISTRATIVE TRIBUNAL, DHAKA.

ACCREDITED INCOME TAX PRACTITIONER.

LL.B (HON’S) AIUB, LL.M (JNU).

MOBILE: 01755009073 & 01642999563.

 

সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট, জজ কোর্ট, প্রশাসনিক ট্রাইবুনালসহ যেকোনো আইনী বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শদাতা -

ব্যারিস্টার হাফিজ খান, (01859313939)

সিএলপি, গুলশান-১, ঢাকা।

সরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে কি করবেন? কোথায় মামলা করবেন? বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। 

(সরকারি চাকরি)

 

No comments:

Post a Comment

বেসরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিকার পাওয়ার উপায়। Md. Izabul Alam

বেসরকারি চাকরি থেকে চাকরিচ্যুত হলে বা ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্রতিকার পাওয়ার উপায়                    লেখক মোঃ ইজাবুল আলম সরকারি ও বেসরকারি প্রত...