Saturday, August 24, 2024

সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও সিকিউরিটি ইনচার্জ এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী

 

সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও সিকিউরিটি ইনচার্জ এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী

 


একজন নিরাপত্তা প্রহরী বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় তথা একটি পোস্টের জান মাল ও তথ্যকে সর্বদা সতর্ক ও জাগ্রত অবস্থায় শত্রুর কবল থেকে সংরক্ষণ করার নামই হচ্ছে সিকিউরিটি বা নিরাপত্তা। নিরাপত্তামূলক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিকে সিকিউরিটি গার্ড বা নিরাপত্তা প্রহরী বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ বলা হয়। বাংলাদেশ সরকারের আইন শৃংখলারক্ষাকারী বাহিনী যেমন, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দেশ ও জাতির জান ,মাল ও তথ্যকে যেমন হেফাজত করে তেমনি বিভিন্ন বেসরকারী নিরাপত্তা সেবা সংস্থার নিরাপত্তা কর্মীরাও জান, মাল ও তথ্যের হেফাজত করে থাকে। নিরাপত্তা বাহিনী সরকারি বা বেসরকারি যাই হোক প্রত্যেকের একই উদ্দেশ্য, আর তাহলো ব্যক্তি, বস্তু ও তথ্যের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা। সুতরাং দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের দিক থেকে একজন সিকিউরিটি গার্ড বা নিরাপত্তা প্রহরী বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ এর গুরুত্ব কম নয়। সাম্প্রতিক বিশ্বে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে জঙ্গি হামলা, রাজনৈতিক সহিংসতা, শ্রমিক আন্দোলন, অগ্নিকান্ড ইত্যাদি সংঘটিত হওয়ার পর থেকে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আরো জোড়দার করা হয়েছে। সর্বত্র নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাই নিরাপত্তামূলক কাজে নিয়োজিত সিকিউরিটি গার্ড বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ  এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী আর বাসা বাড়ির দাড়োয়ান বা ম্যানেজার বা কেয়ারটেকার এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী এক হতে পারে না। এবি সিকিউরিটাস বাংলাদেশ লিমিটেড তাদেরকেই নিরাপত্তা কর্মী বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে নিয়োগ দেয় যাদের মধ্যে সতর্কতা, সততা, বিচক্ষনতা, বুদ্ধিমত্তা, শরীরিকভাবে উপযুক্ততা, ভালোভাবে যোগাযোগের দক্ষতা এবং ক্লায়েন্ট বা মালিক পক্ষের চাহিদাগুলো সম্পূর্ণ করার সক্ষমতার গুণাবলী আছে। উপযুক্ত প্রার্থী বাছাই শেষে তাদেরকে ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ ক্লাসে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয়। এ ছাড়া সময়ে সময়ে বিভিন্ন পোস্টে গিয়ে রিফ্রেসার ট্রেনিং বা অন জব ট্রেনিং এর মাধ্যমে ক্লায়েন্টের নির্দেশনা মোতাবেক সাম্প্রতিক বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা হয। একজন সিকিউরিটি গার্ড বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ শুধু ইউনিফরম পরিধান করে তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকলেই তার দায়িত্ব পালন শেষ হয় না। তাকে সতর্ক ও সাবধানতার সাথে তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় পর্যবেক্ষণ বা নজরদারির মাধ্যমে দায়িত্ব পালন করতে হয়, যাতে কোনো দুষ্কৃতিকারী বা কোনো অপরাধী তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় সিকিউরিটি গার্ড বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ  নজর ফাঁকি দিয়ে প্রবেশ করে জান, মাল ও তথ্যের কোনো ক্ষতি সাধন না করে। মূলত একজন সিকিউরিটি গার্ড বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিটি ইনচার্জ এর সার্বিক কর্মকান্ড হবে গোয়েন্দা ভিত্তিক কার্যক্রম। আর এই কার্যক্রম পরিচালনা করতে তাকে দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে প্রশিক্ষিত হতে হবে।

সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও সিকিউরিটি ইনচার্জগণকে যেসব বিষয়ের উপর সম্মক ধারণা, দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়

(১) এবি সিকিউরিটাস বাংলাদেশ লিঃ এই কোম্পানি সম্পর্কে সম্মক ধারণা থাকতে হবে।

(২) মাদার কোম্পানি Abans সম্পর্কে জানা থাকতে হবে।

(৩) সিকিউরিটি গার্ডদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী সম্পর্কে জানতে হবে।

(৪) সিকিউরিটি গার্ড ভর্তির নিয়মাবলী সম্পর্কে জানতে হবে।

(৫) ক্লায়েন্টের চাহিদাগুলো পূরণের সক্ষমতা থাকতে হবে।

(৬) ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী সিকিউরিটি গার্ডদের ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থাকরণ ও ট্রেনিং দেয়ার দক্ষতা অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।         

(৭) জরুরী পরিস্থিতিতে কী করণীয় তা পূর্ব থেকেই জানা থাকতে হবে।

(৮) টাচ মোবাইল ব্যবহার সম্পর্কে জানা থাকতে হবে।

(৯) সোসাল মিডিয়া সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে ও সময়ের সাথে নিজেকে আপগ্রেড  করতে হবে।

(১০) দায়িত্বপূর্ণ এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সম্মক ধারণা থাকতে হবে।

(১১) নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী সম্পর্কে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে।

(১২) গার্ডদের নেতৃত্ব ও আদেশদানে পারদর্শী হতে হবে।

(১৩) নিরাপত্তা কর্মীদের সাথে সম্বন্বয় করার সক্ষমতা থাকতে হবে।

(১৪) যেকোনো পরিস্থিতিতে তাৎক্ষনিক সিদ্ধান্ত নেয়ার সক্ষমতা থাকতে হবে।

(১৫) শারীরিকভানে ফিটনেস থাকতে হবে।

(১৬) আইনপ্রয়াগকারী সংস্থার সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে চলার সাহসী মনোভাব থাকতে হবে। তথা  স্থানীয় পুলিশ/র‌্যাব এদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।

একজন আদর্শ সুপারভাইজার ও ইনচার্জ কেমন হওয়া উচিত

(১) সৎ ও চরিত্রবান। (২) সু-শৃঙ্খল ও ন্যায়পরায়ণ। (৩) বিচক্ষণ। (৪) বুদ্ধি দীপ্ত। (৫) উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা। (৬) অভিভাবকত্ত। (৭) দায়িত্ব জ্ঞানসম্পন্ন। (৮) জবাবদিহিতামূলক। (৯) মার্জিত ও রুচিবোধ সম্পন্ন। (১০) অধীনস্থদের  যত্ন নেয়া। (১১) তাদের পারিবারিক সমস্যা আগ্রহ সহকারে শুনে শান্তনা দেয়া ও সমাধানের পথ দেখিয়ে দেয়া। (১২) কেউ অসুস্থ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা। (১৩) ক্লায়েন্ট ও এবিএস এর মধ্যে সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করার যোগ্যতা থাকা।

একজন আদর্শ সুপারভাইজার ও ইনচার্জ যে কাজগুলো করবে না

১। নৈতিকতা বিসর্জন দিতে হয় এমন কাজ।

২। শৃংক্ষলা ভংগ হয় এমন কাজ।

৩। কোম্পানীর সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ।

৪। প্রচলিত আইন কানুন ভঙ্গ হয় এমন কাজ।

৫। ক্লায়েন্টের অর্থ সম্পদের ক্ষতি হয় এমন কাজ।

৬। কোনো তথ্য গোপন করা।

৭। নিজের হাতে আইন তুলে নেয়া।

৮। অনুমান ও আন্দাজ নির্ভর কোনো কাজ করা।

৯। অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়া।

১০। পক্ষপাতিত্ব বা গার্ডদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করা।

১১। উশকানি/বিদ্রোহীমূলক কোনো কাজ করা।     

১২। পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কাজ ।

সিকিউরিটি সুপারভাইজার

একজন সুপারভাইজার কোম্পানীর প্রতিনিধি হিসাবে পোস্টে দায়ীত¦ পালন করে থাকে, একই সাথে পোস্টে কর্তব্যরত সকল প্রহরীর অভিভাবক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করতে হয়। অধিকন্ত একজন সুপারভাইজার প্রতিনিয়ত ক্লায়েন্টের সাথে প্রত্যক্ষ্যভাবে জড়িত থাকে বিধায় ক্লায়েন্ট ও এবিএস কোম্পানীর মধ্যে সমন্বয়ক হিসাবে একজন সুপারভাইজারকে কাজ করতে হয়। 

সুপারভাইজার বলতে কি বোঝায়?

সুপারভাইজার এর অর্থ তত্ত্বাবধায়ক। আমারা যেহেতু নিরাপত্তা সংক্রান্ত দায়িত্ব পালন করে থাকি সুতরাং নিরাপত্তাই হবে আমাদের তত্ত¦াবধায়নের বিষয়। কোনো কিছু পরিদর্শন করতে হলে সেই সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অতএব একজন সিকিউরিটি সুপারভাইজারকে সিকিউরিটি সম্পর্কে জানতে হবে।

সিকিউরিটি সুপারভাইজারের বিশেষ দায়িত্বাবলী

১. সুরক্ষিত এলাকায় প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ করা।

২. ব্যবহৃত সকল গেট পাস যাচাই করা।

৩. সকল গার্ডদের নিয়ন্ত্রণ করা।

৪. সিকিউরিটি গার্ড তাদের কাজ সঠিকভাবে পালন করছে কিনা তা পর্যবেক্ষন করা।

৫.  নিয়মিত গার্ড Recruiting করার ব্যবস্থা করা।

৬. প্রতিদিনের কাজের রেকর্ড প্রস্তুত করা।

৭. সিকিউরিটি ইনচার্জকে প্রতিদিনের কাজের রিপোর্ট প্রদান করা।

৮. গ্রাহকের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করা।

৯. শ্রমিক কর্মচারী ইন আউট/বাহির হওয়ার সময় মনিটরিং করা।

১০. গার্ড নির্দিষ্ট সময় পর পর টহলে যাচ্ছে কিনা তা মনিটরিং করা।

১১. কারখানার চাবি সংরক্ষণ করা।

১২. কারখানায় নিয়োজি সুপারভাইজার সিটিপ্যাট অনুয়ায়ী দায়িত্ব সম্পন্ন করা।

সিকিউরিটি ইনচার্জ

যিনি সিকিউরিটি প্রধান হিসেবে একটি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের তার অধীনস্থ নিরাপত্তা প্রহরীর মাধ্যমে সার্বিক নিরাপত্তা প্রদান করে থাকেন, তার অধীনস্থদের তত্ত্বাবধান ও প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন এবং প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা বা যন্ত্রপাতির দেখভাল করেন তাকে ইনচার্জ বলে।

একজন সিকিউরিটি ইনচর্জের কী কী দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হয়?

(১) অতীত অভিজ্ঞতা থেকে শেখার ক্ষমতা থাকতে হবে।

(২) শক্তিশালী যোগাযোগ দক্ষতা থাকতে হবে।

(৩) সম্পর্ক স্থাপনের দক্ষতা থাকতে হবে।

(৪) বাস্তসম্মত পরিকল্পনা গ্রহণের দক্ষতা থাকতে হবে।

(৫) মানুষের আচরণ বোঝা ও সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।

(৬) অধীনস্থদেও প্রশিক্ষণ দেয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।

(৭) গতানুগতিক চিন্তার  বাইরে চিন্তা করার মতো বিচক্ষণতা হতে হবে।

সিকিউরিটি ইনচার্জ এর বিশেষ দায়িত্বাবলী

(১) কোম্পানির সকল রকম নিরাপত্তা এবং রক্ষনাবেক্ষণ তত্ত্বাবধায়নের জন্য একজন  সিকিউরিটি ইনচার্জ কোম্পানির কাছে দায়বদ্ধ।

(২) এক জন সিকিউরিটি ইনচার্জ হিসেবে সার্বিক নিরাপওা দায়িত্ব পালন করা। নিরাপওা কর্মীরা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে কিনা তা মনিটরিং করা।

(৩) ফ্যাক্টরীর প্রবেশ বাহির থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ স্থানে ২৪ ঘন্টা নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার নিশ্চিত করা।

(৪) নিরাপত্তা কর্মীদের ইউনির্ফম সঠিকভাবে পরিধান আছে কিনা তা যাচাই করা এবং তাদেরকে তাদের দায়িত্ব  ও কর্তব্য বুঝিয়ে দেওয়া। মেইন গেইটে অনাকংঙ্খিত প্রবেশ বন্ধ করা তথা বিভিন্ন আগুন্তুক এর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ কল্পে দর্শনার্থী রেজিষ্টার সংরক্ষণ করা।

(৫) বিভিন্ন সময় ফ্যাক্টরী থেকে মালামাল  বের হওয়ার সময় প্রয়োজনীয় গেইট পাশ চালান চেক ও নথিভুক্ত সঠকভাবে হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করা।

(৬) কোনো নিরাপত্তা কর্মী শৃঙ্খলা বহির্ভুত কাজে লিপ্ত হলে ফ্যাক্টরীর আইন অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করা এবং ফ্যাক্টরীর কর্তৃপক্ষের/গ্রাহকের নির্দেশনা মোতাবেক তাদের প্রহরা দেওয়ার স্থান পরিবর্তন করা।

(৭) কেবল মাত্র অনুমোদিত ব্যক্তিবর্গকে চিহ্নিত করার মাধ্যমে ফ্যাক্টরীতে ঢ়ুকতে দেওয়া ।

(৮) গ্রাহকের কোনো অভিযোগ থাকলে তা মনোযোগ সহকারে শোনা এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা।

(৯) সিকিউরিটি গার্ড  সঠিকভাবে ডিউটিতে আসে কিনা তা মনিটরিং করা।

(১০) এবিএসবি হেড অফিসের রিক্রুটমেন্ট লিংক সকলকে অবহিত করা ও রিক্রুটমেন্টের ব্যবস্থা করা।

(১১) এবিএসবি হেড অফিস এবং কøায়েন্ট এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশাবলী ফিল্ড লেভেলে যথাযথভাবে পালন নিশ্চিত করা।

(১২) এবিএসবি এর বানিজ্যিক ব্যবসা প্রসারে সকলকে ফেসবুক, হোয়াটসএপ, লিংক্ডইনসহ সকল সোসাল মিডিয়ায় অংশ গ্রহণ করা। এইসব লিংকে যেসব পোস্ট করা হয় তা নিজ নিজ অবস্থান থেকে শেয়ার করা। এছাড়া অধীনস্থ সকল স্টাফ ও সহকর্মীদের সাথে এবিএসবি ওয়েব পেজ, ফেসবুকসহ সকল মিডিয়া কানেকশন এর মাধ্যমে এবিএসবিকে প্রচার করা।

(১৩) গ্রাহকের সাথে প্রতিদিন যোগাযোগ করা ও কোনো সমস্যা থাকলে তা জরুরী ভিত্তিতে সমাধান করা এবং সুসম্পর্ক বজায় রাখা।

(১৪) কারখানায় নিয়োজিত ইনচার্জ সিটিপ্যাট অনুয়ায়ী দায়িত্ব সম্পন্ন করা।

(১৫) প্রতিষ্ঠানের আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা, নিরাপত্তা তত্ত্বাবধান, পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করা।

(১৬) অধীনস্থদের যথাযথ আদেশ দেয়া।

(১৭) সমস্যা মোকাবেলা করে এবং সমস্যার সমাধান করার জন্য দলগতভাবে কাজ করা।

(১৮) সম্পত্তি দেখাশোনা করা।

(১৯) অধীনস্থ কর্মীদের প্রতিষ্ঠানের কৌশল-মিশন,স্বীকৃতি এবং কোচিং ও সংশোধনমূলক অনুশীলনগুলো বাস্তবায়ন করা।

পোস্ট সুপারভাইজার ও পোস্ট ইনচার্জ এর সাধারণ নির্দেশাবলী

পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার এর কাজের পরিধি:

পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার এর কাজ বা দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী প্রায় একই। পোস্ট ইনচার্জ একটি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিষয়ক সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন আর পোস্ট সুপারভাইজার একটি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজনে মিলে খন্ড খন্ড দায়িত্ব পালন করেন। আবার যেখানে পোস্ট ইনচার্জ থাকেন না সেখানে একজন সুপারভাইজার থাকলে তিনিই ঐ প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা বিষয়ক সার্বিক দায়িত্ব পালন করে থাকেন। তাই ঊভয়কেই ঊভয়ের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী সম্পর্কে অবগত থাকতে হয়।

ডিউটি রোস্টারে বর্ণিত গার্ডদের পোস্ট অর্ডার মোতাবেক তাদের দায়িত¦ ও কর্তব্য তদারকির মাধ্যমে গুনগত মানসম্পন্ন সার্ভিস প্রদানে গ্রাহককে প্রত্যাশিত সেবা প্রদান নিশ্চিত  করা। পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজারগণ সরাসরি গ্রাহক এবং ফিল্ড সুপারভাইজার (ঋঝঠ) বা এরিয়া ম্যানেজার বা জোন কমান্ডার এর নিকট তাদের কাজের জন্য রিপোর্ট করবে। ক্ষেত্র বিশেষে তারা সরাসরি অপারেশন ম্যানেজার (হেড অফিস) কিংবা অপারশেন ডাইরেক্টর (হেড অফিস) এর নিকট তাদের কাজের জন্যে রিপোর্ট করতে পারবে। পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার এর নির্দিষ্ট কোনো গার্ড পোস্ট থাকবে না। তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী হবে পেট্রোলিং বা টহল ভিত্তিক। টহল দুই প্রকার। যথা: গতিশীল টহল ও স্থিতিশীল টহল। একটি পোস্টে কয়েকটি গার্ড পোস্ট থাকতে পারে। সেখানে পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার একটু পর পর সব গার্ড পোস্ট ঘুরে ঘুরে তদারকী করে দেখবেন যে, তার অধীনস্থ গার্ডরা সঠিকভাবে চোখ কান খোলা রেখে অতি সতর্কতার সহিত দায়িত্ব পালন করছে কিনা। আর এটাই হচ্ছে গতিশীল টহল। যেখানে একটি গার্ড পোস্ট থাকবে সেখানে পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার ক্লায়েন্টের নির্দেশনা মোতাবেক পোস্টের আনুসঙ্গিক কাজের পাশাপাশি চোখ কান খোলা রেখে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে পুরো এলাকা তদারকী করে নিশ্চিত থাকবেন যে, তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকা তার অধীনস্থ গার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত কিংবা নিরাপত্তা বেষ্টিত। এভাবে দায়িত্ব পালন করার নাম হচ্ছে স্থিতিশীল টহল। পোস্ট সুপারভাইজার বা পোস্ট ইনচার্জের মূল লক্ষ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে অধীনস্থ গার্ডদের নিকট থেকে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী সঠিকভাবে আদায় করে নেয়া।

পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার এর সাধারণ দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী

(১) পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজার একটি পোস্টের একজন অভিভাবক। তিনি হবেন একজন মডেল, যাকে অনুসরণ করে তার অধীনস্থ গার্ডরা চলবেন। সে জন্যে তিনি সঠিক ভাবে কোম্পানি কর্তৃক প্রদেয় ইউনিফরমের প্রতিটি অংশ (যেমন: শার্ট, প্যান্ট, মোজা, বুট, বেল্ট, ক্যাপ,আইডি কার্ড ইত্যাদি)  পরিধান করে ডিউটি শুরুর ১৫মিনিট পূর্বে কর্তব্য স্থানে প্রতিনিয়ত উপস্থিত হবেন। তিনি কখনো পোস্টে দেরী করে আসবেন না এবং ডিউটি শেষ হওয়ার পূর্বেই কর্তব্য স্থান ত্যাগ করবেন না।

(২) পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার পোস্টে উপস্থিত হয়ে পোস্টের সব কিছু ঠিক আছে কিনা তা তদারকী করে নিশ্চিত হবেন এবং পূর্বের পোস্ট সুপারভাইজারের নিকট থেকে সব কিছু সঠিকভাবে বুঝে নিয়ে রেজিস্টারে স্বাক্ষর করবেন।

(৩)  কর্তব্যরত গার্ডদের ডিউটি শুরুর পূর্বেই ইউনিফরমের অন্যান্য অংশ যেমন: শার্ট, প্যান্ট, মোজা, বুট, বেল্ট, ক্যাপ,আইডি কার্ড  ইত্যাদি সঠিকভাবে আছে কিনা তা চেক করবেন। চেক করার সময় গার্ড এর হেয়ার কাট, সেভিং, বুট পালিশ, আইডি কার্ড সামনে ঝুলানো, ইস্ত্রি করা শার্ট-প্যান্ট এবং পোশাক-পরিচ্ছদ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন সঠিকভাবে আছে কিনা তা লক্ষ্য করবেন। পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার তার দায়িত্ব পালনের শুরুতে উল্লেখিত চেকগুলো করে নিশ্চিত হবেন যে, তার অধীস্থ গার্ডরা স্মার্ট এবং দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত।

(৪) প্রতি দিন গার্ডদের টার্ন আউট অর্থাৎ সালাম প্রদর্শন, সাবধান হওয়া ইত্যাদি ভালভাবে চেক করে নিশ্চিত হতে হবে যে, কোনো ভিজিটর বা অতিথি এলে তার অধীনস্থ গার্ড সাবধান হয়ে ভালভাবে একটা স্যালুট প্রদর্শন করতে পারবে। কোনো অতিথি বা কোম্পানির কোনো অফিসারকে গার্ড যদি সাবধান হয়ে স্যালুট প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয় বা সঠিকভাবে দিতে না পারে তার দায় দায়িত্ব পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার এর উপর বর্তাবে। সে জন্যে প্রতি দিনই গার্ডদেরকে স্যালুট প্রদর্শনের বিষয়টি ডেমো হিসাবে দেখাতে হবে।

(৫) পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজারগণ প্রতিদিন নিশ্চিত করবেন যে,

(ক) তার অধীনস্থ গার্ড সঠিক সময়ে কোম্পানির নির্ধারিত পোশাক পরিধান করে কর্তব্য স্থানে উপস্থিত আছে।

(খ) গার্ডদের ডিউটি শুরুর পূর্বে সকল গার্ডকে সতর্ক ও সাবধানতার সহিত  ডিউটি করা এবং বিরাজমান নিরাপত্তার বিষয়ে ব্রিফ করা এছাড়া পোস্ট অর্ডার মোতাবেক গার্ডদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী বুঝে দেয়া।

(গ) প্রতি শিফ্টের ডিউটি শেষে পরবর্তী শিফটে পোস্ট সুপারভাইজারকে তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া।

(ঘ) একইভাবে তিন শিফটের পোস্ট সুপারভাইজারগণ তাদের মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ এবং হস্তান্তর সম্পন্ন করা।

(ঙ) যেকোনো দূর্যোগ শুরু হলে সিকিউরিটি গার্ড তার কর্তব্য স্থান ত্যাগ করে অন্য কোথাও চলে গেছে কিনা তা নিশ্চিত করা। ঝড় তুফান শুরু হলে পূর্বেই আকাশের অবস্থা দেখে প্রতিটি পোস্টে ছাতা, গামবুট দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দূর্যোগ মুহূর্তে সুপারভাইজারদের সার্বক্ষণিক তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় তৎপর থাকতে হবে।

(৬) সাপ্তাহিক গার্ড ডিউটি রোস্টার ভালভাবে বোঝা এবং রোস্টার মনিটর করা। গার্ডদের ওভার টাইম (ও টি) ডিউটি, ছুটির বিষয়ে তদারকি করা এবং প্রয়োজনে পোস্ট ইনচার্জ/ফিল্ড সুপারভাইজার এরিয়া ম্যানেজার/জোন কমান্ডার এর পরামর্শে কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়া।

(৭) অধীনস্থ গার্ডদের ডিউটি হাজিরা শিফট অনুসারে (এ, বি, সি ) কঠোরভাবে (১০০%) সংরক্ষণ করা এবং সেই অনুসারে গ্রাহককে সকল গার্ড ডিউটির উপস্থিতি শিফট অনুযায়ী প্রদান করা। মনে রাখতে হবে তিন শিফটের পোস্টে সকাল ০৬০০ থেকে ১৪০০ ঘটিকা এ  শিফট, ১৪০০ থেকে ২২০০ ঘচিকা বি শিফ্ট, ২২০০ থেকে ভোর ০৬০০ পর্যন্ত সি শিফ্ট হয়। সাধারনত: সাত দিন বা পনেরো দিন বা এক মাস পর পর এক জন গার্ডের শিফট পরিবর্তন হয়। কোন্ গার্ড কোন শিফটে ডিউটি করছে তা সঠিকভাবে হাজিরা রেজিস্টারে লিখতে হবে এবং সঠিক তথ্য ফিল্ড সুপারভাইজারকে সময় মতো জানাতে হবে। মনে রাখতে হবে কোনো গার্ডের একটা হাজিরা বা ডিউটি মিস হলে আর বেতন কম পেলে আপনাকে দোষারুপ করবে।

(৮) প্রতিটি গার্ড হাজিরা রেজিস্টারে স¦াক্ষর করেছে কিনা পোস্ট ইনচার্জ বা সুপারভাইজারগণ প্রতি দিন গার্ড হাজিরা রেজিস্টার সরেজমিনে চেক করে নিশ্চিত হবেন।

(৯)  পোস্টে কর্তব্যরত গার্ডদের কোম্পানির বিধি মোতাবেক ছুটির পরিকল্পনা এবং ছুটি করা । এই ক্ষেত্রে ছুটি অনুমোদনের পূর্বে ফিল্ড সুপারভাইজার বা এরিয়া ম্যানেজারকে অবশ্যাই অবগত করতে হবে।

(১০) একজন পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজারকে পোস্ট অর্ডার, গার্ডদের দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী, রেজিস্টার মেইনটেইন, এ্যাকসেস কন্ট্রোল বা প্রবেশাধীকার নিয়ন্ত্রন, ভিজিটর ম্যানেজমেন্ট বা অতিথি ব্যবস্থাপনা, ফার্স্ট এইড ও পারসোনাল হাইজিন, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর, ভেহিকেল আন্ডার সার্চিং মিরর, আর্চওয়ে গেট, লাগেজ স্ক্যানার, সন্দেহজনক প্যাকেজ বা পারসেল বা মেইল বা চিঠি সনাক্ত করণ পদ্ধতি, কর্মচারী শিষ্টাচার, বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও মোকাবেলা করার পদ্ধতি, অগ্নি নিরাপত্তা ও অগ্নি নির্বাপন যন্ত্রের ব্যবহার, প্যাট্রোলিং ডিউটি, ট্রাফিক কন্ট্রোলিং, সন্দেহজনক ব্যক্তি চেনার উপায়, জরুরী অবস্থায় করণীয় ইত্যাদি সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান বা ধারণা থাকতে হবে এবং অধীনস্থ গার্ডদের উল্লেখিত বিষয়ে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে জানার বিষয়ে কারো কোনো ঘাটতি থাকলে নিজের ও গার্ডদের পেশাগত দক্ষতা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে  এবিএস  ট্রেনিং স্কুলকে সহায়তা করতে হবে।

(১১) পোস্টে নতুন কোনো গার্ড পোস্টিং করা হলে বা গার্ড পোস্টিং এর জন্য আবেদন করা হলে পূর্ব থেকেই তার থাকা ও খাবারের বিষয়টি ফিল্ড সুপারভাইজার/এররিয়া ম্যানেজার/জোন কমান্ডার এর সাথে পরামর্শক্রমে নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখবেন, ৬০% গার্ড পোস্ট ছেড়ে চলে যায় শুধু মাত্র তার থাকা ও খাবারের বিষয়টি নিশ্চিত না করার জন্যে।

(১২) পোস্ট থেকে কোনো গার্ড চাকরি ছেড়ে চলে যেতে চাইলে তাকে এক মাস পূর্বে হেড অফিসে পদ ত্যাগ পত্র জমা দেয়ার কথা বলতে হবে। কোনো গার্ড পোস্ট থেকে চলে গেলে তার ইউনিফরমের সকল আইটেম স্টোরে জমা নিশ্চিত করতে হবে।

(১৩) কোনো কারনে পোস্ট খালি হলে ফিল্ড সুপারভাইজার/এররিয়া ম্যানেজার/জোন কমান্ডার এর সাথে পরামর্শক্রমে নতুন গার্ড ট্রেনিং স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা করতে হবে। নতুন গার্ড ভর্তির জন্য নিজ থেকে মিডিয়া বা সোর্স তৈরী করার সক্ষমতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

(১৪) কর্তব্যরত পোস্টে যদি কোন পোস্ট ইনচার্জ থাকে এবং  উক্ত ইনচার্জ কোনো কারণে ডিউটিতে অনুপস্থিত হয় সে ক্ষেত্রে ইনচার্জের কাজ করার জন্য পোস্ট সুপারভাইজারকে সর্বদা মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে ।

(১৫) সুপারভাইজারগণ নিশ্চিত করবে যাতে পোস্ট অর্ডারের বিষয় বস্তু হয় সুস্পষ্ট, সংক্ষিপ্ত যা গ্রাহকের প্রত্যাশার প্রতিফলন এবং নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট। পোস্ট অর্ডারে গ্রাহকের দেওয়া কোন নতুন বিষয় বস্তু যোগ করতে হলে ফিল্ড সুপারভাইজার বা এরিয়া ম্যানেজারকে অবগত করে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে ।

(১৬) গ্রাহকের বিশেষ জরুরী অবস্থায় নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য প্রয়োজনে পোস্টের মালিকানাধীন সিকিউরিটি ম্যানেজার/ প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার সাথে আলোচনার মাধ্যমে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরিকল্পনায় সহযোগিতা করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ফিল্ড সুপারভাইজারকে অবগত করে উক্ত পরিকল্পনায় সংযুক্ত করার জন্য কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে হবে।

(১৭) সুপারভাইজারগন জরুরী অবস্থায় সাহায্যের জন্য অবশ্যই প্রয়োজন অনুসারে পুলিশ, র‌্যাব, ফায়ার সার্ভিসেস এর সাথে যোগাযোগ করবেন এবং ঐ সকল প্রতিষ্ঠানের মোবাইল বা টি.এ্যান্ড.টির নাম্বার গার্ড রুম/পোস্টে ভালভাবে সংরক্ষণ করবেন। অর্থাৎ রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ করে রাখবেন এবং নিজের মোবাইলেও সেভ করে রাখবেন।

(১৮) সুপারভাইজারগন পোস্টে প্রাথমিক চিকিৎসার বক্স, ফায়ার এক্সটিংগুইসারসহ তল্লাশীমূলক কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি সঠিকভাবে আছে কিনা তদারকি করবেন প্রয়োজনে ক্লায়েন্ট কর্তৃক নিয়োজিত সিকিউরিটি ম্যানেজার বা দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসারের সাথে যোগাযোগ করবেন।

(১৯) সুপারভাইজারগণ পোস্টে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার রেজিস্টার সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করে পোস্টে সংরক্ষণ করবেন যদি এই দায়িত্ব পালনের বিষয়টি গার্ডদের না দেওয়া হয়। যে সকল পোস্টে গার্ডরা নিজেই পোস্টে প্রবেশ এবং বাহির হওয়ার রেজিস্টার সংরক্ষণ করে সেখানে প্রতি নিয়ত ভালভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে গার্ডরা সঠিকভাবে কাজটা সম্পন্ন করে।

(২০) সুপারভাইজারগণ নিশ্চিত করবে যাতে গার্ডরা সঠিক এবং কার্যকরভাবে তাদের উপর অর্পিত তল্লাশি কাজ সম্পন্ন করে। প্রয়োজনে হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর/আর্চওয়ে গেট ব্যবহার করার নির্দেশ দিতে হবে। গাড়ী তল্লাশীর ক্ষেত্রে আন্ডার ভেহিক্যাল সার্চ মিরর ব্যবহারের নির্দেশ দিতে হবে। গার্ড এসব ইকুইপমেন্টের ব্যবহার না জানলে তাদেরকে শিখিয়ে দিতে হবে। সে জন্য পূর্ব থেকেই সুপারভাইজার এই সব বিষয়ে ট্রেনিং স্কুলে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন।

(২১) কোনো বিদেশী ভিজিটর বা অতিথি এলে তাদের সাথে ইংরেজিতে কথোপকথন করার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। অধীনস্থ গার্ডদেরকেও এতদ বিষয়ে কমপক্ষে ১০টি ইংরেজি বাক্য মুখস্থ করাতে হবে ও ইংরেজিতে কথা বলার অভ্যস্ত করে গড়ে তুলতে হবে।

(২২) সুপারভাইজারগণ প্রয়োজন অনুসারে গার্ড-এর অবস্থান, ডিউটির মান এবং সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সরেজমিনে তদারকির জন্য প্রতি নিয়ত তার দায়িত্বপুর্ণ এলাকায় পায়ে হেঁটে টহল দিবেন। বিশেষ করে রাতে ডিউটি চলাকালীন অতি সতর্ককতা ও সাবধনতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। প্রতিটি গার্ড ডিউটি পোস্টে প্রতি আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টা পর পর টহল দিয়ে দেখতে হবে যে, গার্ড ডিউটি পোস্ট ছেড়ে কোথাও গেছে কিনা অথবা ঘুমিয়ে পড়েছে কিনা।

(২৩) সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে, কোনো গার্ড বা অন্য কেহ ক্লায়েন্টের কোনো পতিত জিনিস পত্র বা অন্য কিছু যেনো চুরি করে না নিয়ে যায়।

(২৪) যে সব পোস্ট সিসিটিভি ক্যামেরা দ্বারা সুরক্ষিত সেখানে সকলেই অতি সতর্কতার সহিত দায়িত্ব পালন করবেন। সকলকে সিসিটিভি ক্যামেরার গুরুত্ব বুঝিয়ে বলতে হবে যে, পোস্টে কেহ অপকর্ম বা অসামাজিক কাজ করলে বা কোনো কিছু চুরি করে নিয়ে গেলে তা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়বে।

(২৫) পোস্টে গার্ডের সংখ্যা বেশী হলে এবং প্রশিক্ষণের কোনো ঘাটতি থাকলে প্রয়োজনে অন জব ট্রেনিং বা রিফ্রেসার ট্রেনিং এর ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ট্রেনিং স্কুলকে অবগত করানো এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা করবেন।

(২৬) গার্ডের সাথে সুসর্ম্পক বজায় রাখতে হব। কোন গার্ডকে অযথা হয়রানী বা শাস্তি দেয়া যাবে না। কেহ কোন অপরাধ করলে তা র্উদ্ধত্বন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। নিজের মধ্যে কোন কিছু লুকিয়ে রাখা বা গোপন করে রাখা যাবে না।

(২৭) রাজনৈতিক সহিংসতায় আমাদের করণীয়:

(ক) পোস্টের সামনে হঠাৎ রাজনৈতিক সহিংসতা শুরু হলে সাথে সাথে কারখানার সকল গেট তালাবদ্ধ করতে হবে।

(খ) সিকিউরিটি গার্ড ভিতরে থেকে সেফ জোনে থেকে ডিউটি পালন করবে।

(গ) দেয়াল টপকে কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়া যাবে না।

(ঘ) কোনো সিকিউরিটি গার্ড পোস্ট ফাঁকা রেখে অন্য কোথাও যাবে না।

(ঙ) রাতে এক সাথে দুইজন আধা ঘণ্টা পর পর টহল ডিউটি করবে, এসময় লাঠি, বাঁশি, ছাতা, গামবুট etc সাথে থাকবে।

(চ) চতুর্দিকে সার্বক্ষণিক চোখ, কান খোলা রেখে সর্বদা জাগ্রত থেকে অতি সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে।

(ছ) গোলাগুলি বা ইঁট পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে কেউ উঁকি মেরে বাহিরে তাকাবে না।

(জ) পরিস্থিতির আপডেট একটু পর পর কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।

(ঝ) কারখানায় কেউ যেনো ভাঙচুর বা আগুন লাগাতে না পারে সে জন্যে পোস্টের চতুর্দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।

(ঞ) পরিস্থিতি বেশী খারাপ হলে বাহিরে যাওয়া যাবে না এবং কর্তৃপক্ষকে বলে পোস্টেই রান্নার ব্যবস্থা করতে হবে।

(২৮) গার্ড চলে যাওয়ার কারণসমূহ চিহ্নিত করে তা ফিল্ড সুপারভাইজারের সাথে পরামর্শক্রমে সমাধান করতে হবে।

(২৯) গার্ড চলে যাওয়ার কারণসমূহের মধ্যে অন্যতম হলো:

(ক) গার্ডের সাথে দুর্ব্যবহার করা ও তাদের সাথে আন্তরিক না হওয়া।

(খ) সময় মতো ছুটি না দেয়া।

(গ) মেসে থাকা খাওয়ার সমস্যার সমাধান না করা।

(ঘ) DD/OT এর টাকা সঠিকভাবে না দেয়া।

(ঙ) গার্ডের দায়েরকৃত কোনো অভিযোগের দ্রুত ও কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা না নেয়া।

(চ) নানা অজুহাতে বেতন কর্তন করা।

(ছ) বেশী বেতন দেয়ার কথা বলে এনে কম বেতনের পোস্টে ডিউটি দেয়া।

(জ) সময় মতো বেতন না দেয়া ও মাসিক চাঁদা নেয়া।

(ঝ) DD/OT দেয়ার ক্ষেত্রে Partiality করা।

(ঞ) অতিরিক্ত ডিউটি করানো এবং অসুস্থ হলে খোঁজ খবর না নেয়া।

(চ) সামান্য অপরাধে শাস্তির পরিমান বেশী দেয়া।

(ছ) কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য (যেমন, বেতন কম পাওয়া, ছুটি না দেয়া, বেতন না পাওয়া ইত্যাদি বিষয়ে) হেড অফিসে এলে দৈনন্দিন দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা না নেয়া।

(জ) খারাপ ভাষায় গালিগালাজ করা।

(ঝ) সুবিধাজনক পোস্টে বদলী না করা।

২৮) পোস্টে কোন ঘটনা যা নিরাপত্তার সাথে সংশ্লিষ্ট তা রিপোর্ট করা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে এরিয়া ম্যানেজার/সেন্ট্রি কন্ট্রোল রুমকে জানানো ।

২৯) একজন আদর্শ পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার যে কাজগুলি করবে না:-

ক)  নৈতিকতা বিসর্জন দিতে হয় এমন কাজ।

খ)  শৃংখলা ভংগ হয় এমন কাজ।

গ)  কোম্পানির সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কাজ।

ঘ)  কোম্পানির অথবা ক্লায়েন্টের প্রচলিত আইনকানুন ভঙ্গ হয় এমন কাজ।

ঙ) ক্লায়েন্টের সম্পদের ক্ষতি হয় এমন কাজ।

চ) কোন তথ্য গোপন করা।

ছ) নিজের হাতে আইন তুলে  নেয়া।

জ) অনুমাণ ও আন্দাজ নির্ভর কোন কাজ করা।

ঝ) অন্যায় ও অনৈতিকতাকে প্রশ্রয় দেয়া।

ঞ) পক্ষপাতিত্ব করা।

ট) উস্কানি বা বিদ্রোহীমূলক কোনো কাজ করা।       

ঠ) পরিবেশ নষ্ট হয় এমন কাজ করা।

ড) অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত হওয়া।

ঢ) ঘুষ, দুর্নীতি, পাচারকারী, ছিনতাইকারী, অপহরণকারী ও মাদকের সাথে জড়িত হওয়া।

ণ) কারো সাথে মাস্তানী করা।

উপসংহার: পোস্ট ইনচার্জ ও পোস্ট সুপারভাইজারগণই হচ্ছেন কোম্পানির মূল বাস্তবায়নকারী। তাদের উপরই মূলত নির্ভর করে পোস্ট টিকে থাকা আর না থাকা। একজন আদর্শবান পোস্ট ইনচার্জ বা পোস্ট সুপারভাইজার তার উপর অর্পিত দায়িত্বাবলী সঠিকভাবে পালন করলে ক্লায়েন্ট যেমন সন্তুষ্ট থাকবে তেমনি কোম্পানির সুনাম বৃদ্ধি পাবে।

 

 

প্রশ্নোত্তর পর্ব

 

?

 

ধন্যবাদ

 

লেখক

মোঃ ইজাবুল আলম

চিফ ট্রেনিং অফিসার

বাংলাদেশ  সিকিউরিটি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (BSTI)

BCS সহ সরকারি বেসরকারি যেকোনো চাকরি পরীক্ষায় ১০০% প্রশ্ন কমন পেতে BBC এর উপর ক্লিক করুন 

BBC

No comments:

Post a Comment

সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও সিকিউরিটি ইনচার্জ এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী

  সিকিউরিটি সুপারভাইজার ও সিকিউরিটি ইনচার্জ এর দায়িত্ব ও কর্তব্যাবলী   একজন নিরাপত্তা প্রহরী বা সিকিউরিটি সুপারভাইজার বা সিকিউরিট...