Sunday, October 5, 2025

কমপ্লায়েন্স অনুসারে একজন নিরাপত্তা কর্মীর শর্ত ও সুযোগ সুবিধাসমূহ

 

কমপ্লায়েন্স অনুসারে একজন নিরাপত্তা কর্মীর শর্ত ও সুযোগ সুবিধাসমূহ

যখন কোনো কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরিতে বা অফিসে সিকিউরিটি গার্ড বা সুপারভাইজার বা ইনচার্জ তথা নিরাপত্তা কর্মী সরবরাহ করা হয় তখন সেই ফ্যাক্টরি বা অফিসের শ্রমিক/কর্মচারী কমপ্লায়েন্স অনুসারে যেসব সুযোগ সুবিধা ভোগ করে অনুরুপ সুযোগ সুবিধা নিরাপত্তা কর্মীদেরও দিতে হয়। এজন্যে কমপ্লায়েন্স অনুসারে সকল ডকুমেন্টস প্রস্তুত করতে হয়। কিন্তু দেখা যায়, নিরাপত্তা কর্মী সরবরাহকারী সিকিউরিটি কোম্পানির নিয়োগকৃত সুপারভাইজার/ইনচার্জ বা জোন কমান্ডার বা ফিল্ড সুপারভাইজার বা জোন ইনচার্জ বা সংশিষ্ট এইচআর ডিপার্টমেন্ট তাদের  কমপ্লায়েন্স সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় মান সম্মত সার্ভিস দিতে পারে না এবং পরিশেষে পোস্ট উঠে যায়।

এজন্যে সিকিউরিটি কোম্পানিগুলো নিরাপত্তা কর্মী নিয়োগের পূর্বে তারাও পূর্ব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন কর্মী খোঁজে। কিন্তু পূর্ব অভিজ্ঞা না থাকায় অনেকের চাকরি হয় না। বিশেষ করে সুপাভাইজার/ইনচার্জ ও জোন কমান্ডারদের সিকিউরিটি রিলেটেড কমপ্লায়েন্স সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকাটা ১০০% জরুরী। এই লেখাটি তাদের জন্য যারা  সিকিউরিটি রিলেটেড কমপ্লায়েন্স সম্পর্কে জানতে আগ্রহী।

কমপ্লায়েন্স কি?

কমপ্লায়েন্স (Compliance) মানে হলো আইন, বিধিমালা, নীতি এবং নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলা। এটি নিশ্চিত করে যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনার সময় সকল প্রচলিত নিয়মকানুন (যেমন- শ্রম আইন, কর আইন) এবং অভ্যন্তরীণ নীতি অনুসরণ করছে। কমপ্লায়েন্স মূলত প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও আইনি ঝুঁকি কমানো এবং নৈতিক মান বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া।

কমপ্লায়েন্স কেন গুরুত্বপূর্ণ?

• আইনি ও আর্থিক ঝুঁকি হ্রাস:

নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো জরিমানা, মামলা এবং অন্যান্য আইনি জটিলতা এড়াতে পারে।

• নৈতিক মান বজায় রাখা:

এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিষ্ঠানটি নৈতিকভাবে কাজ করছে এবং সমাজের প্রতি তার দায়িত্ব পালন করছে।

• প্রতিষ্ঠানের সুনাম বৃদ্ধি:

নিয়ম মেনে চলা একটি প্রতিষ্ঠানকে বিশ্বস্ত করে তোলে এবং বাজারে এর সুনাম বাড়ায়।

• কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত করা:

কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করাও কমপ্লায়েন্সের একটি অংশ।

কমপ্লায়েন্স কত প্রকার ও কি কি?

উত্তর : কমপ্লায়েন্স প্রধানত ৫ প্রকার, যথা-

১) সোশ্যাল কমপ্লায়েন্স

২) টেকনিক্যাল কমপ্লায়েন্স

৩) সি-টিপ্যাট কমপ্লায়েন্স

৪) কান্ট্রি অব অরিজিন এবং

৫) বায়ার্স সিওসি

কমপ্লায়েন্স অডিট এর প্রকারভেদঃ

(Compliance Audit) এর প্রকারভেদ হলো যথাক্রমেঃ

১। সোস্যাল কমপ্লায়েন্স অডিট (Social Compliance Audit);

২। কোয়ালিটি ম্যনেজমেন্টঅডিট বা টেকনিক্যাল অডিট (QMS or Technical Audit);

৩। নিরাপত্তা অডিট (Security Audit)।

সিকিউরিটি কমপ্লায়েন্স কিঃ

একটি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা কর্মী বাংলাদেশ শ্রম আইন, বেপজা আইন ও প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শর্তাবলী মেনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই হচ্ছে সিকিউরিটি কমপ্লায়েন্স।

সাধারণত একটি কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরিতে জুনিয়র সিকিউরিটি গার্ড, সিকিউরিটি গার্ড, সিনিয়র সিকিউরিটি গার্ড, সুপারভাইজার ও ইনচার্জ এই পদবীর নিরাপত্তা কর্মীদের নিয়োগ দেয়া হয়।

নিরাপত্তা কর্মীর শিক্ষানবিশকাল

একজন নিরাপত্তা কর্মীর চাকরির প্রথম ০৩ (তিন) মাস শিক্ষানবিশ হিসেবে ধরা হয় এবং তার কাজ সন্তোষজনক না হলে উক্ত সময়কাল আরও ০৩ (তিন) মাস বর্ধিত হতে পারে। বর্ধিত ০৩ (তিন) মাসে নিরাপত্তা কর্মী যদি দক্ষতা দেখাতে না পারে, তাহলে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। (এই শর্তাবলী তার নিয়োগ পত্রে উল্লেখ করা হয়)

এখানে উল্লেখ্য যে, ইপিজেড এর মধ্যে যেসকল সিকিউরিটি পোস্ট থাকে সেখানে কর্মরত নিরাপত্তা কর্মীদের শিক্ষানবিশকাল ০৩ মাস ধরা হয়। আর ইপিজেড এর বাহিরে যেসকল পোস্ট থাকে সেখানে শিক্ষানবিশকাল ০৬ মাস ধরা হয়। আবার কোনো কোনো সিকিউরিটি কোম্পানি ইপিজেড এর মধ্যে হলেও শিক্ষানবিশকাল ০৬ মাস ধরা হয়। যেমন, নারায়ণগঞ্জ ইপিজেড এ অবস্থিত R-pac ফ্যাক্টরিতে কর্মরত নিরাপত্তা কর্মীদের শিক্ষানবিশকাল ০৬ মাস ধরা হয়েছে।

নিরাপত্তা কর্মীর বেতন

একজন নিরাপত্তা কর্মী (জুনিয়র সিকিউরিটি গার্ড এর জন্য)  নিম্নলিখিত হারে বেতন প্রদান করা হয়-

ক)       মূল মজুরী       =          ৬,৯০০/-

খ)        বাড়ি ভাড়া       =         ৩,৪৫০/-

গ)        চিকিৎসা ভাতা =             ৭৫০/-

ঘ)        যাতায়াত ভাতা =             ৪৫০/-

ঙ)        খাদ্য ভাতা       =         ১,২৫০/-

--------------------------------------------

      সর্বমোট মজুরী     =         ১২,৮০০/-

বাড়ি ভাড়া ও মূল বেতন বের করার নিয়মঃ মোট বেতন থেকে (চিকিৎসা ভাতা ৭৫০ টাকা + যাতায়াত ভাতা ৪৫০ টাকা +খাদ্য ভাতা ১,২৫০ টাকা) =২৪৫০ টাকা বাদ দিলে যা থাকে তাকে ০৩ দিয়ে ভাগ করলে যা আসে তাই বাড়ি ভাড়া। এই বাড়ি ভাড়াকে ০২ দিয়ে গুণ করলে মূল বেতন বের হবে।

কর্মঘন্টা

একজন নিরাপত্তা কর্মীর প্রতিদিন কর্মঘন্টা হবে ০৮ ঘন্টা। কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে একজন নিরাপত্তা কর্মীকে অতিরিক্ত কাজের জন্য অনুরোধ করতে পারবে এবং এজন্য আপনি শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী ঘন্টা প্রতি ওভারটাইম পাবেন-(বেসিক X ২ ÷ ২০৮)=ওটি রেট। দিনে ০৮ ঘন্টা বেশী (০১ ঘন্টা বিরতি ব্যতীত) কাজ করলে তা অতিরিক্ত সময় হিসেবে গণ্য হবে।

৯% হারে বেতন বৃদ্ধি

চাকুরী ১ বছর সম্পন্ন হলে প্রতি সম্পূর্ণ বছরের জন্য ন্যূনতম ৯% হারে মূল মজুরী বৃদ্ধি করা হবে।

(বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (২০২২ সালের সংশোধনী অনুসারে), প্রতি বছর পোশাক শ্রমিকদের মূল মজুরির কমপক্ষে ৫% বৃদ্ধি করতে হয়। তবে, সরকার বা নিম্নতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত মজুরি বৃদ্ধির হার ৯% হতে পারে। শ্রমিক, মালিক ও সরকারের প্রতিনিধিদের ত্রিপক্ষীয় বৈঠকের পর সরকার বা নিম্নতম মজুরি বোর্ড এই বেতন বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়। ডিসেম্বর ২০২৪ থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়।)

উৎসব বোনাস

চাকুরী ১ বছর সম্পন্ন হওয়ার পর শ্রম আইন অনুযায়ী একজন শ্রমিক বা নিরাপত্তা কর্মী বছরে ২টি উৎসব বোনাস পাবে।

(বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ এর  ২ নং আইন, ধারা ৫৩। (৪) অনুযায়ী

মালিক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো ব্যক্তি কর্তৃক তাহার প্রতিষ্ঠানে নিযুক্ত প্রত্যেক স্থায়ী শ্রমিককে প্রত্যেক পঞ্জিকা বৎসরে তাহাদের স্ব স্ব ধর্মীয় উৎসবের প্রাক্কালে ২ (দুই) মাসের মূল মজুরির সমপরিমাণ উৎসব বোনাস প্রদান করিতে হইবে)।

প্রাপ্য ছুটিসমূহ

শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী একজন শ্রমিকের প্রাপ্য নির্ধারিত ছুটিসমূহ নিম্নরুপঃ

(১) নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave)  ১০ দিন।

(২) অসুস্থতাজনিত ছুটি ১৪ দিন।

(৩)  উৎসব ছুটি ১১। উৎসব ছুটি দুই ঈদে (৩+৩)=৬ দিন ও সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য ৫ দিন মোট ১১ দিন হবে।

বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ এর  ২ নং আইন, ধারা ৫৩। (১) অনুযায়ী প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পূর্ণ মজুরিতে ১১ (এগারো) দিনের উৎসব ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে। (২) মালিক বা তাহার নিকট হইতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি উক্ত ছুটির দিন ও তারিখ স্থির করিবেন। (৩) কোনো শ্রমিককে কোনো উৎসব ছুটির দিনে কাজ করিতে বলা যাইবে, তবে ইহার জন্য তাহাকে উক্ত দিনের অব্যবহিত ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ২ (দুই) দিনের মজুরিসহ ক্ষতিপূরণ ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।

বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ সনের ৪২ নং আইন , ধারা ১১৮ (৩) অনুযায়ী কোনো শ্রমিককে কোনো উৎসব-ছুটির দিনে কাজ করিতে বলা যাইতে পারিবে, তবে ইহার জন্য তাহাকে এক দিনের বিকল্প ছুটি এবং দুই দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি প্রদান করিতে হইবে।

ব্যাখ্যা

(ক) ১ দিন উৎসব ছুটিতে কাজ  করলে ১ দিনের বিকল্প ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি পাবেন।

(খ) ১ দিন উৎসব  ছুটিতে কাজ  করলে ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি পাবেন।

(গ) শ্রম বিধিমালা অনুযায়ী উক্ত দিনের অব্যবহিত ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে ছুটি প্রদান করতে হবে।

(ঘ) ২০২২ সালের শ্রম  বিধিমালার সংশোধনী অনুযায়ী উৎসব ছুটি জন্য ক্ষতিপূরণ মজুরি  প্রদান করা হবে নিম্নভাবে,

উৎসব ছুটির ক্ষতিপূরণ= (কর্মীর মূল মজুরি ÷ ৩০) X ২

তবে অনেক কারখানায় উৎসব ছুটিতে কাজ করলে ৩০ দিনের মধ্যে একদিনের জন্য একদিন ও ক্ষতিপূরণমূলক আরেক দিন ছুটি দেয়া হয়। সেহিসেবে একজন শ্রমিক উৎসব ছুটি ১১ দিনের স্থলে ২২ দিন ছুটি ভোগ করে। আবার অনেকে একদিনের জন্য একদিন ছুটি প্রদান করে ও ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক মজুরি দিয়ে থাকে।

(৪) বাৎসরিক ছুটি (Annual Leave)  (এক বছর সম্পন্ন হওয়ার পর) প্রতি ১৮ দিনে ১ দিন হিসাবে প্রাপ্য হবেন।

বাৎসরিক ছুটি বের করার নিয়মঃ প্রতি সপ্তাহে ০১ দিন সাপ্তাহিক বন্ধ পেলে বছরে বন্ধ পাবে ৫২ দিন + উৎসব ছুটি ১১ দিন-৬৩ দিন, এখন ৩৬৫ দিন থেকে ৬৩ দিন বাদ দিলে ৩০২ দিন থাকে। এই ৩০২ দিনকে ১৮ দিয়ে ভাগ দিলে ১৬.৭৭ হয় তথা ১৭ দিন ছুটি প্রাপ্য হবে। তবে অনেকে ১৬ দিন ছুটি প্রদান করে থাকে।

(৫) সাপ্তাহিক ছুটি ০১ (এক) দিন প্রাপ্য হবে।

চাকরি হতে অব্যাহতির নিয়ম

চাকরি স্থায়ী হওয়ার পর যদি অব্যহতির প্রয়োজন হয়, তাহলে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে ৩০ (ত্রিশ) দিন পূর্বে লিখিত নোটিশ দিতে হবে অথবা নোটিশের পরিবর্তে নোটিশের মেয়াদের জন্য সমপরিমাণ অর্থ নিজ সিকিউরিটি কোম্পানিকে প্রদান করতে হবে। তদ্রুপ স্থায়ী শ্রমিক হিসাবে গন্য হওয়ার পর কোম্পানী কর্তৃক নিরাপত্তা কর্মীর চাকরির অবসান এর ক্ষেত্রে ১২০ দিনের লিখিত নোটিশ বা নোটিশের পরিবর্তে নোটিশের মেয়াদের জন্য মজুরী প্রদান করে চাকরি অবসান করা যাবে।

এখানে উল্লেখ্য যে, ইপিজেড এর মধ্যে যেসকল সিকিউরিটি পোস্ট থাকে সেখানে কর্মরত নিরাপত্তা কর্মীগণ চাকরি হতে অব্যাহতি নিতে চাইলে ০৩ দিন পূর্বে লিখিতভাবে জানাবে আর ইপিজেড এর বাহিরে হলে ৬০ দিন পূর্বে লিখিতভাবে জানাবে। চাকরি হতে অব্যাহতি নেয়ার ৩০ দিন বা ৬০ দিন পূর্বে লিখিতভাবে না জানালে সেই নিরাপত্তা কর্মীকে ৩০ দিন বা ৬০ দিনের সমপরিমাণ অর্থ নিজ সিকিউরিটি কোম্পানিকে প্রদান করতে হবে।

(এই শর্তাবলী তার নিয়োগ পত্রে উল্লেখ করা হয়)

অন্যান্য শর্তসমূহ

একজন নিরাপত্তা কর্মীকে নিয়োগ পত্র দেয়ার সময় তার নিয়োগ পত্রে নিম্নলিখিত শর্তসমূহ লিখে দেয়া হয়।

(১) কোম্পানি কর্তৃক প্রদেয় ইউনিফর্ম সঠিকভাবে পরিধান করে পোস্টে উপস্থিত হয়ে রিপোর্ট করতে হবে।

(২) কোম্পানীর স্বার্থ, মর্যাদা সুনাম অক্ষুন্ন রাখার নিমিত্তে নিরাপত্তা কর্মীকে সার্বক্ষনিক একাগ্রতা, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন ও পরিচালনা করতে হবে। নিরাপত্তা কর্মী কোম্পানীর ব্যবস্থাপনার স্বার্থ বিরোধী কোনো কাজ কোনো সময় করতে পারবে না এবং কোম্পানীর কোনো কর্মচারীর বিপরীত কোনো কিছু কিংবা কোনো আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে না।

(৩) নিরাপত্তা কর্মী কোনরূপ “অসদাচরণ” করলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে শ্রম আইনের বিধান অনুসারে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।

(৪) যেহেতু কোম্পানী নিরাপত্তা সেবা ব্যবসায় নিযুক্ত, যার জন্য যথেষ্ট আস্থা নিয়ে  নিরাপত্তা কর্মীকে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়। কোম্পানীর সম্পূর্ণ সন্তুষ্টি অর্জনে নিরাপত্তা কর্মীকে বিশ্বস্ততার সাথে এবং নিরলসভাবে নিরাপত্তা কর্মীকে কর্তব্য পালন করতে হবে।

(৫) প্রযোজ্য হলে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা কর্মীকে অভিজ্ঞতা ভাতা প্রদান করা হবে।

(৬) নিরাপত্তা কর্মীকে কোম্পানীর বিধি ও বিধিমালা মেনে চলতে হবে এবং কোম্পানির্ লক্ষ্যে পৌছতে একজন টিম মেম্বার হিসেবে কাজ করতে হবে।

(৭) ক্লায়েন্ট বা গ্রাহকের সম্পত্তির বিষয়ে সম্পূর্ণ সজাগ ও সচেতন থাকতে হবে।

(৮) নির্ধারিত ও নির্দেশিত উপায়ে গ্রাহকের আদেশ পরিচালনা করতে হবে।

(৯) কর্তব্যরত অবস্থায় ঘুমানো যাবেনা অথবা কারো প্ররোচনায় প্রভাবিত হওয়া যাবে না।

(১০) কোম্পানীর নিয়ম অনুযায়ী যে কোনো স্থান, বিভাগ বা ইউনিটে সমপদে বদলী করার অধিকার রাখে। কোম্পানী কর্তৃক প্রদত্ত অন্য যেকোন আদেশ  নিরাপত্তা কর্মী মেনে চলতে বাধ্য।

(১১) যেখানে নিরাপত্তা কর্মীকে বদলী দেয়া হয় অথবা যে স্থানে নিরাপত্তা কর্মীকে নিয়োগ দেয়া হয় সেখানে সার্বক্ষনিক সাহসিকতা ও বিশ্বস্ততার সাথে কোম্পানীকে সেবা প্রদান করতে হবে এবং কোম্পানীর ব্যবসায়িক স্বার্থে নিরাপত্তা কর্মীকে বিশেষভাবে মনোযোগ দিতে হবে এবং কর্মস্থলে দায়িত্বরত থাকাকালীন সময়ে নিরাপত্তা কর্মীকে নিষ্ঠা ও মনোযোগ, দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের লিখিত অনুমতি ছাড়া প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্য কোন পেশা, গবেষণা, ব্যবসা অথবা সার্ভিস এ যোগদান বা সংশ্লিষ্ট থাকা যাবে না। নিরাপত্তা কর্মীর সামর্থ্য অনুসারে মক্কেলের প্রয়োজনে যেকোনো দায়িত্ব পালনে নিরাপত্তা কর্মীকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

(১২) চাকুরীকালীন সময়ে কাজে অনুপস্থিত থাকলে বা ত্যাগ করতে চাইলে নিরাপত্তা কর্মীকে কোম্পানীর পোশাক পরিচ্ছেদ/জিনিসপত্র কোম্পানীর কাছে ফেরত দিতে হবে, ব্যর্থতায় কোম্পানী উক্ত পোষাক সামগ্রী এবং অন্যান্য সরঞ্জামাদি পুলিশ অথবা দেশের প্রচলিত আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা উদ্ধার করার অধিকার সংরক্ষণ করবে এবং তার সমুদয় আইনী ও অন্যান্য ব্যয়ভার আপনাকে কোম্পানীর কাছে পরিশোধ করতে হবে।

(১৩) উপরোক্ত ঘোষিত বিভিন্ন ব্যবস্থা এবং উপ-ব্যবস্থা সংশোধনযোগ্য। যদি কোনো ব্যবস্থা অথবা উপ-ভাগ অথবা সনাক্তযোগ্য অংশ অকার্যকর হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে অন্যান্য ব্যবস্থা অথবা উপ-ব্যবস্থার কার্যকারিতা সনাক্তযোগ্য অংশের দ্বারা ক্ষুন্ন হবেনা।

(১৪) কোম্পানীবিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী ও শৃঙ্খলাবিরোধী কাজের ক্ষেত্রে বিধি মোতাবেক আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(১৫) চাকুরীর অন্যান্য শর্তাবলী প্রচলিত শ্রম আইন অনুযায়ী সমভাবে প্রযোজ্য হবে।

ভর্তির সময় প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রসমূহ

কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরির জন্য একজন নিরাপত্তা কর্মী ভর্তির সময় নিম্নলিখিত কাগজ পত্রসমূহ প্রয়োজন হয়।

(১) সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক নির্ধারিত ভর্তি ফরম। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(২) নিরাপত্তা কর্মীর নিজেস্ব জীবন বৃত্তান্ত একটি।

(৩) সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক প্রদেয় কার্যবিবরণী। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৪) চাকরিতে যোগদান পত্র। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৫) শ্রমিক/কর্মচারীদের পূর্বেকার তথ্য যাচাই ফরম। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৬) মেডিকেল ফরম। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৭) নমিনী ফরম-৪১। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৮) বয়স ও সক্ষমতার প্রত্যয়ন পত্র। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(৯) নিরাপত্তা কর্মীর নাগরিক ও চারিত্রিক সনদপত্র। (চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট)

(১০) নিরাপত্তা কর্মীর শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র।

(১১) নিরাপত্তা কর্মীর ভোটার আইডি কার্ড বা অনলাইন জন্মসনদ পত্র।

(১২) নমিনীর ভোটার আইডি কার্ড ও স্ট্যাম্প সাইজের এক কপি  ছবি।

(১৩) নিরাপত্তা কর্মীর দুই কপি পাসপোর্ট ও দুই কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি।

(১৪) একটি সচল রকেট নম্বর।

(১৫) একটি সার্ভিস বুক। (সিকিউরিটি কোম্পানি কর্তৃক সরবরাহ করা হয়)

(১৬) নিরাপত্তা কর্মীর নিযোগ পত্র। যা পারসোনাল ফাইলের প্রথমে রাখতে হয়।

(ক্লায়েন্টের চাহিদা মোতাবেক সকল ডকুমেন্টস এর ডুপ্লিকেট একটি পারসোনাল ফাইল তৈরী করে ক্লাযেন্ট এর নিকট জমা দিতে হয়)

বেতন প্রদানের পূর্বে ও পরে করণীয়

(১) বেতনের পূর্বে নিরাপত্তা কর্মীদের হাজিরা শিট বা রোস্টার ভালভাবে চেক করে অফিসে প্রেরণ করতে হয়। সাধারণত মাসে দুইবার হাজিরা শিট প্রেরণ করতে হয়।

(২) বেতন প্রদানের পূর্বে ও পরে অনুপস্থিত নিরাপত্তা কর্মীর তালিকা প্রেরণ করতে হয়।

(৩) কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরিতে প্রত্যেকের টাইম কার্ড তৈরী করে দিতে হয়।

(৪) বেতন প্রদান করা হলে বেতন শিটে প্রত্যেকের যেনো স্বাক্ষর থাকে তা নিশ্চিত করতে হয়।

(৫) প্রত্যেকের পে-স্লিপ তৈরী করতে হয়।

(৬) বেতন প্রদানের পরে স্যালারি প্রুভ বা ব্যাংক স্টেটমেন্ট জমা দিতে হয়।

(৭) কোনো নিরাপত্তা কর্মীর জরিমানা বা কর্তন থাকলে তা বেতন প্রদানের পূর্বে অফিসকে অবগত করতে হয়।

 

লেখক

মোঃ ইজাবুল আলম

চিফ ট্রেনিং অফিসার (CTO)

01534143644 (Whatsapp)

No comments:

Post a Comment

কমপ্লায়েন্স অনুসারে একজন নিরাপত্তা কর্মীর শর্ত ও সুযোগ সুবিধাসমূহ

  কমপ্লায়েন্স অনুসারে একজন নিরাপত্তা কর্মীর শর্ত ও সুযোগ সুবিধাসমূহ যখন কোনো কমপ্লায়েন্স ফ্যাক্টরিতে বা অফিসে সিকিউরিটি গার্ড বা সুপারভাইজ...