Monday, November 3, 2025

কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করার উপায়। লেখক মোঃ ইজাবুল আলম

কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করার উপায়


যোগাযোগ কি?

যোগাযোগ হলো তথ্যের আদান-প্রদান, যার মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা যন্ত্র থেকে অন্য ব্যক্তি বা যন্ত্রে সংবাদ, অনুভূতি, চিন্তা, ভাব বা মনোভাব পাঠানো হয়। এটি মানুষে-মানুষে বা যন্ত্রে-যন্ত্রে হতে পারে এবং কার্যকরভাবে বোঝাপড়া তৈরি করার জন্য এটি অপরিহার্য। যোগাযোগের মূল উপাদানগুলো হলো প্রেরক, প্রাপক, বার্তা, মাধ্যম ও ফলাবর্তন (feedback)। 

যোগাযোগের ধারণা

তথ্য আদান-প্রদান:

যোগাযোগ বলতে মূলত তথ্যের আদান-প্রদানকে বোঝায়, যা কথা বলার মাধ্যমে, লেখার মাধ্যমে, শব্দ, স্পর্শ, বা গন্ধের মাধ্যমে হতে পারে।

উদ্দেশ্য:

বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য বা মনের ভাব প্রকাশের জন্য যোগাযোগ করা হয়।

সাফল্য:

যখন প্রেরকের বার্তা প্রাপক সঠিকভাবে বুঝতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় প্রত্যুত্তর দিতে পারেন, তখন যোগাযোগ সফল হয়।

প্রক্রিয়া:

এটি একটি প্রক্রিয়া যার মধ্যে একটি উৎস (প্রেরক) একটি বার্তা তৈরি করে একটি মাধ্যম ব্যবহার করে প্রাপকের কাছে পাঠায়।

যোগাযোগের মাধ্যম

যোগাযোগের মাধ্যম হলো লিখিত, যান্ত্রিক, ভিজ্যুয়াল, মৌখিক এবং অ-মৌখিক (যেমন: স্পর্শ, গন্ধ, অঙ্গভঙ্গি) বিভিন্ন উপায়, যার মাধ্যমে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়। লিখিত মাধ্যমের মধ্যে রয়েছে চিঠি, বই, পত্রিকা এবং ইমেল। যান্ত্রিক মাধ্যমগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল, কম্পিউটার, রেডিও, টেলিভিশন, এবং সোশ্যাল মিডিয়া।

যোগাযোগের মাধ্যমসমূহ

লিখিত মাধ্যম: এই মাধ্যমে লিখিত শব্দ ব্যবহার করে তথ্য দেওয়া-নেওয়া হয়, যেমন: চিঠি, ইমেল, বই, পত্রিকা, প্রতিবেদন এবং সোশ্যাল মিডিয়া চ্যাট।

যান্ত্রিক মাধ্যম:

এই মাধ্যমগুলোতে যন্ত্র ব্যবহার করা হয়। যেমন: মোবাইল, কম্পিউটার, রেডিও, টেলিভিশন, মাইক্রোফোন, ওয়াকিটকি এবং ইন্টারনেট।

ভিজ্যুয়াল মাধ্যম:

এই মাধ্যমে ছবি, চার্ট, গ্রাফ এবং অন্যান্য ভিজ্যুয়াল সাহায্য ব্যবহার করে যোগাযোগ করা হয়।

মৌখিক মাধ্যম:

কথা বলে বা শুনে যোগাযোগ করা, যেমন: বক্তৃতা, কথোপকথন এবং ফোন কল।

অ-মৌখিক মাধ্যম:

এই মাধ্যমে শব্দ ব্যবহার না করে যোগাযোগ করা হয়। যেমন: স্পর্শ, গন্ধ, অঙ্গভঙ্গি এবং মুখের অভিব্যক্তি।

টেলিফোন বা মোবাইলে কথা বলার শিষ্টাচার


আপনি যখন অফিসে থাকবেন তখন টেলিফোনে কেহ কল দিলে রিসিভার কানে নিয়েই বলতে হবে, আসসালামু আলাইকুম স্যার, কে বলছেন প্লিজ । কোনো অফিসার হলে স্যার সম্বোধন করে কথা বলতে হবে। মোবাইলেও অপরিচিত কেহ কল দিলে তাকেও সম্মান দিয়ে কথা বলতে হবে।

ওয়াকিটকি এর ব্যবহার

ওয়াকিটকি হলো একটি হাতে-ব্যবহার্য দ্বিমুখী বেতার যন্ত্র যা রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে তারবিহীন যোগাযোগ স্থাপন করে। এটি একই সময়ে উভয় দিকে কথা বলার সুবিধা দেয় না, কারণ এটি একটি "হাফ-ডুপ্লেক্স" যন্ত্র, অর্থাৎ একই সময়ে শুধু একবার কথা বলা বা শোনা যায়। বাংলাদেশে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা বাহিনী, সামরিক বাহিনী এবং বিটিআরসি-এর লাইসেন্স নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান (যেমন, নির্মাণ সাইট, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, সিটি করপোরেশন, বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানি) এটি ব্যবহার করে থাকে।

ওয়াকি-টকির রেঞ্জ

একটি সাধারণ কনজিউমার ওয়াকি-টকির রেঞ্জ সাধারণত ২ থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হয়, যা খোলা জায়গায় বেশি এবং শহরাঞ্চলে বা বাধা থাকলে কমে যায়। তবে, বিশেষ ধরনের ওয়াকি-টকি বা অনুকূল পরিস্থিতিতে পরিসর আরও বেশি হতে পারে, যেমন ৫০ মাইল (৮০ কিমি) পর্যন্ত।

চ্যানেল সংখ্যা

একটি ওয়াকিটকিতে কতগুলো চ্যানেল থাকে তা নির্ভর করে মডেলের উপর। বেশিরভাগ সাধারণ ওয়াকিটকিতে সাধারণত ২২টি চ্যানেল থাকে। তবে, পেশাদার বা নির্দিষ্ট কাজের জন্য ব্যবহৃত ওয়াকিটকিগুলোতে চ্যানেলের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।

ওয়াকিটকিতে কথা বলার নিয়ম

ওয়াকিটকিতে যারা কথা বলেন তারা একটি গ্রুপ হয়ে কাজ করেন। কেহ কোনো ম্যাসেজ দিতে চাইলে আর সেই ম্যাসেজ সকলে জানার প্রয়োজন হলে সকলকে ওয়াকিটকির একই চ্যানেলে আসতে হবে। আবার প্রত্যেকের একটি করে নাম আছে। যেমন, আলফা ১, ২, ৩ বা ব্রাভো ১, ২. ৩ ইত্যাদি। কথা বলার সময় ওয়াকিটকির প্রেস বাটনে চাপ দিয়ে কথা বলতে হয়।

এখন আলফা-১ থেকে  আলফা-২ তে কল দিলে বলতে আলফা-১ থেকে আলফা-২ ওভার। এসময় আলফা-২ প্রেস বাটনে চাপ দিয়ে বলবে আলফা-১ সেন্ড ওভার স্যার। এরপর প্রতিবারে প্রেস বাটনে চাপ দিয়ে কথা বলতে হবে। কথা বুঝে থাকলে আলফা-২ বলবে রজার স্যার। সকলে একই চ্যানেলে থাকলে এই দুইজনের কথা সকলে শুনতে পাবে।

ওয়াকিটকিতে কথা বললে আশেপাশের সকলে শুনতে পায় তাই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, গোয়েন্দা বাহিনী ও সামরিক বাহিনী সাংকেতিক শব্দ ব্যবহার করে কথা বলে যাতে অন্য কেহ বুঝতে না পারে। যেমন আকবর নামের এক সন্ত্রাসী এখানে উপস্থিত হয়েছে। এই বাক্যটি ওয়াকিটকিতে বললে আকবর শুনতে পাবে এবং সে পালিয়ে যাবে। এই ম্যাসেজটি জানাতে হলে ওয়াকিটকিতে বলতে হবে, আলফা কিলো ব্রাভো রোমিও ।

সাংকেতিক শব্দগুলোকে ন্যাটো ফোনেটিক বর্ণমালা বলে।

A- Alfa,

B- Bravo,

C-Charlie,

D-Delta,

E-Echo,

F-Foxtrot,

G-Golf,

H-Hotel,

I- India,

J-Juliett,

K-Kilo,

L-Lima,

M-Mike,

N- November,

O-Oscar,

P-Papa,

Q-Quebec,

R-Romeo,

S-Sierra,

T-Tango,

U-Uniform,

V-Victor,

W-Whiskey,

X-X-ray,

Y- Yankeea

Z- Zulu

No comments:

Post a Comment

কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করার উপায়। লেখক মোঃ ইজাবুল আলম

কমিউনিকেশন বা যোগাযোগ করার উপায় যোগাযোগ কি? যোগাযোগ হলো তথ্যের আদান-প্রদান, যার মাধ্যমে এক ব্যক্তি বা যন্ত্র থেকে অন্য ব্যক্তি বা যন্ত্র...